কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আগামী ৩১শে জানুয়ারি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এর মধ্যে উপজেলার নারান্দী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সাবেক ভিপি মো. শফিকুল ইসলাম (নৌকা) এর বিরুদ্ধে ভোটের মাঠে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মুছলেহ উদ্দিন (আনারস) এর কর্মী-সমর্থকদের তিনি এলাকা ছাড়ারও হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী ভিপি শফিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের হুমকির অভিযোগ এনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রুহুল আমিন (চশমা)। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মো. রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম ইউনিয়নের ৭ ও ৮নং কেন্দ্রগুলো দখল করে প্রভাব বিস্তার করে, যেভাবে হোক পাস করবেন প্রকাশ্যে এমন ঘোষণা দিয়েছেন। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রুহুল আমিন এই দু’টি কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল আমিন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হোক- এটাই চাই। এ জন্য নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণের জন্য সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছি।
এদিকে এর আগে বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মুছলেহ উদ্দিনের নেতাকমী ও সমর্থকদের এলাকা ছাড়তে মাইকে ঘোষণা দিয়ে হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম। তার এমন বক্তব্য ও হুমকির ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল। গত ২২শে জানুয়ারি দুপুরের দিকে নারান্দী ইউনিয়নের শালঙ্কা গ্রামের এক উঠান বৈঠকে মাইকযোগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নৌকার প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মুখে জয় বাংলা বলবেন, আর কাজ করবেন নৌকার বিরুদ্ধে। আমি লালু, ভুলু ও শাকিলকে বলে দিতে চাই আগামীকালের পর এলাকায় থাইক্যেন না।’ এ ছাড়া প্রচারণায় বাধার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. মুছলেহ উদ্দিনের প্রচারণা মাইকের গাড়ির পোস্টারে প্রার্থীর মুখে নিজের নৌকা প্রতীকের স্টিকার লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কর্মী-সমর্থক নেতাকর্মীদের এমন হুমকির ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষার দাবি জানিয়েছেন মো. মুছলেহ উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ভোটের মাঠে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। অভিযোগের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বলেছি যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা নৌকার পক্ষে কাজ করতে। আর যাদের নাম বলেছি, তারা তো নৌকার লোকই। তিনি দাবি করেন, জোড়াতালি দিয়ে এডিটের মাধ্যমে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নারান্দী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য পদে ১২ জন ও সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম (নৌকা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মো. আরিফ হোসেন ভূঞা (হাতপাখা), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ প্রার্থী মো. আজিজুল রহমান তপন (মশাল) এবং তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এনামুল হক সাজু (অটোরিকশা), মো. মুছলেহ উদ্দিন (আনারস) ও রুহুল আমিন (চশমা)। নারান্দীসহ পাকুন্দিয়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে।