প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সিলেট হাওর উন্নয়ন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান-এর কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন সিলেট হাওর উন্নয়ন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি নেতৃবৃন্দ। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা এডভোকেট শামসুল ইসলাম, সভাপতি সুরঞ্জিত বর্মণ, সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক খালেদ মিয়া, সদস্য শেখ আক্তারুজ্জামান, আখলাকুর রহমান, আবাব মিয়া, নুর পাশা। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, নেত্রকোনা জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য হাওর, বিল, নদ-নদী রয়েছে। কিন্তু এগুলো সংরক্ষণের অভাবে ওই অঞ্চলের কৃষকরা বারবার বিভিন্ন কারণে ফসল হারিয়ে অসহায়। কৃষকরা আজ সর্বস্ব হারিয়ে উদ্বিগ্ন ও সর্বস্বান্ত। হাওর বাঁচলে কৃষক বাঁচবে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। দেশের শতকরা ৫০ ভাগ মানুষ যেখানে কৃষক সেখানে কৃষক না বাঁচলে দেশ বাঁচানো সম্ভব নয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাওরের উন্নয়নে এবং কৃষকদের সার্বিক স্বার্থে হাওর উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেছিলেন। হাওর উন্নয়ন বোর্ড গঠন করায় কৃষকেরা বিগত দিনে উপকৃত হয়েছিল। জাতির জনকের কন্যা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেমের ধারাবাহিকতায় আপনিও হাওর উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই মহাপরিকল্পনা বান্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে। তা আজও হাওরবাসী এবং কৃষকরা অবহিত নয়। বর্তমানে কৃষকদের অবস্থা দিনের পর দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। কৃষকদের সার্বিক উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। দাবিসমূহগুলো হলো- হাওর উন্নয়ন মন্ত্রণালয় গঠন, ছোট ছোট ডোবা-নালা, খাল-বিল, ইজারা প্রদান বন্ধের মাধ্যমে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি করে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রসিদ্ধ মৎস্য এলাকা হিসেবে হাওড় অঞ্চলকে প্রতিষ্ঠিত করা, চলতি কৃষি মৌসুমে সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান, স্বল্পমূলে সার বিজ কীটনাশক ওষুধ প্রদান, প্রতি মণ ধানের মূল্য ১২০০ টাকা নির্ধারণ, ২০শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওড় বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ধানচাষের মাধ্যমে ৯০ দিনের মধ্যে কৃষক যাতে ফসল ঘরে তুলতে পারে সেই ধরনের ধান বীজ আবিষ্কার করে সে ব্যাপারে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ভতুর্কি প্রদান, নদী-নালা খাল-বিল খননের মাধ্যমে হাওরকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে হবে।