গাজীপুরের একটি শিল্প গ্রুপের মালিককে হত্যার হুমকি এবং উৎপাদনের অপেক্ষায় থাকা নবনির্মিত কারখানা উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ ছাড়াও একের পর এক ৯টি মামলা দেয়ার কারণে হয়রানি হচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের ভবানীপুর এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার হামজা অ্যাপারেলস লিঃ কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কাশেম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ নিয়ে ২০২০ সালের জুন মাসে হামজা অ্যাপারেলস কারখানার নির্মাণকাজ শেষে দেড় বছর ধরে এটি উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যা চালু হলে ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। একের পর এক মামলা ও হুমকির কারণে কারখানার উৎপাদন শুরু করতে না পারায় তাকে ব্যাংকের সুদ গুনতে হচ্ছে। প্রীতি গ্রুপ নামে একটি কোম্পানির প্লট রয়েছে তার জমির বিপরীত পাশে। সেই প্লটের মালিক তার বিরুদ্ধে একে একে ৯টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। সেই সঙ্গে তাকে হত্যাসহ হামজা অ্যাপারেলস কারখানাটি উড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
সর্বোচ্চ উচ্চ আদালত থেকে মামলায় পরাজিত হয়েও নতুন করে একটির পর একটি মামলা দিয়ে যাচ্ছে প্রীতি গ্রুপ কর্তৃপক্ষ।
হামজা অ্যাপারেলস কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, ভবানীপুর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ১৯৭৭ সালে পরিত্যক্ত একটি রাস্তা তার জমি সংলগ্ন হওয়ায় স্থানীয় ভাওয়ালগড় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে স্থানীর সরকার মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও গাজীপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বৈধভাবে ৬৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। বিনিময়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পছন্দমতো অন্য দাগে ৬৮ শতাংশ জমি ২০২০ সালের ১২ই মার্চ সরকার তথা ইউনিয়ন পরিষদকে কিনে দেয়া হয়।
ওই জমি রেজিস্ট্রির ৫/৭ দিন পর প্রীতি গ্রুপ আদালতে ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। পরে আদালতে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় দুটি মামলাই খারিজ করে দেন। এভাবে হামজা অ্যাপারেলসের ক্রয় করা জমি দখল করতে এবং জমির দলিল বাতিল করতে প্রীতি গ্রুপের লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা একে একে ১০টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলা উচ্চ আদালতে হামজা অ্যাপারেলসের পক্ষে রায় আসে। তারপরও মামলা দিয়েই চলছে।
তিনি আরও বলেন, হামজা অ্যাপারেলস কারখানার পূর্ব-দক্ষিণে প্রীতি গ্রুপের খালি জমি রয়েছে। ওই জমিতে তাদের তিনটি কারখানা ও বাড়িঘর আছে। লোকজন বাসাবাড়ি থেকে বের হতে পারছে না, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ এবং তিনটি কারখানা থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেন বলে নানা মিথ্যা তথ্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করতে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে বন বিভাগের জমি দখল করে বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা প্রীতি গ্রুপের ওই জমিতে কোনো প্রকার স্থাপনাই নেই। সেই জমিতে বর্তমানে ধানচাষ ও গবাদিপশুর চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষকে প্রীতি গ্রুপ বিভ্রান্ত করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রীতি গ্রুপের মালিক সিআইপি এবং তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে তার জীবননাশের এবং হামজা অ্যাপারেলস উড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।