সরকারি চাকরি করার জন্য তথ্য গোপন রেখে প্রকৃত নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কমিয়ে ভোটার নিবন্ধিত হয়ে সরকারি চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক মহিলার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পেয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বাদী হয়ে বাউফল থানায় মামলা করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, পটুয়াখালীর বাউফলের কাছিপাড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পাকডাল এলাকার মো. আলী আজম হাওলাদারের কন্যা মোসা. লাকী আক্তার (স্বামী মো. হাবিবুর রহমান) নামে ২০০৭ সালে প্রথমবার ভোটার নিবন্ধিত হন। যার আইডি নং-১৯৮৭৭৮১৩৮৪৭৮০৭৯৭৫। পরবর্তীতে তিনি (লাকী আক্তার) সকল তথ্য গোপন করে জালজালিয়াতি, প্রতারণা ও মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ২০১৭ সালের ২০শে আগস্ট কাছিপাড়া ইউনিয়ন ভোটার নিবন্ধন কেন্দ্রে (কাছিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়) বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন করে একই ভোটার এলাকায় দ্বিতীয়বার ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন যার আইডি নং-১৯৯৯৭৭৮১৩৮৪৭০০০৩৭৮। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ফিঙ্গার প্রিন্ট ক্রসগ্রুপম্যাচ যাচাইয়ে মোসা. লাকী আক্তার /সামিয়া দ্বৈত ভোটার হিসেবে শনাক্ত হন এবং তদন্ত প্রতিবেদনটি জ্যেষ্ঠ সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রেরণ করেন। এ তদন্ত প্রতিবেদনে বিবাদী নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ১৩ই সেপ্টেম্বর-২০২১ চিঠি দিয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়ার পর ১২ই জানুয়ারি বাউফল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বাদী হয়ে বাউফল থানায় এজাহার দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মোসা. লাকী আক্তার বয়স কমিয়ে এবং নাম পরিবর্তন করে সামিয়া নাম দিয়ে জালিয়াতির ২য়বার ভোটার হয়ে ২০১৮ সালে বাউফল কাছিপাড়া ইউনিয়নে (২ ইউনিট, পাকডাল) পরিবারকল্যাণ সহকারী হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন।
কাছিপাড়া পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি এখানে সামিয়া নামে চাকরি করতেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা হয়েছে এবং মামলা দায়েরর দিন থেকেই তিনি কর্মস্থলে অনুপুস্থিত রয়েছেন। পটুয়াখালী জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, ঘটনা অবহিত হয়ে তাকে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে। জবাব পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাউফল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেন জানান, লাকী আক্তার কর্মস্থলে যোগদান করেন বলে লাকী আক্তারের স্বামী তাকে জানিয়েছেন। অপরদিকে কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিদর্শক মোঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, লাকী আক্তার ১২ জানুয়ারী মামলা হওয়ার পর থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, লাকী পলাতক রয়েছে, উপজেলা অফিসার অজ্ঞাত কারণে লাকীর পক্ষে কাজ করে। বাউফল থানার ওসি জানান, মামলার তদন্ত কাজ চলছে।