× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিতর্কের মধ্যেই ইসি গঠন আইন পাস

প্রথম পাতা

সংসদ রিপোর্টার
২৮ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে সংবিধান নির্দেশিত ও বহুল আলোচিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’। পাসের আগে ওই বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটিতে রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী রাখার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া সার্চ কমিটির কাজ ১০ দিনের স্থলে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করার বিধান রাখা হয়েছে। এই দু’টিসহ বিলে সংসদ সদস্যদের মোট ২২টি সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনা শেষে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা। তবে তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
পরে বিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্যরা। যার মধ্য থেকে ২২টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। অধিবেশনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সার্চ কমিটিতে দুইজন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী রাখার প্রস্তাব দেন। আইনমন্ত্রী সেই প্রস্তাব গ্রহণে সায় দিলে, সংসদ তা ভোটে গ্রহণ করে। অর্থাৎ, ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশের জন্য যে সার্চ কমিটি থাকবে সেখানে একজন নারী থাকবেন। সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছিলো, রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন, যার সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুইজন বিশিষ্ট নাগরিক। এখন রাষ্ট্রপতির মনোনীত ওই দুজন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী রাখার বিধান যুক্ত হয়েছে। বিলে সার্চ কমিটির কাজ ১০ কার্যদিবস করার বিধান রাখা হয়েছিল। সেটি এখন ১৫ কার্যদিবস করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির মো. ফখরুল ইমামের এ সংক্রান্ত সংশোধনী সংসদ গ্রহণ করেছে। ফখরুল ইমামের মোট ৭টি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান, মুজিবুল হক চুন্নু ও পীর ফজলুর রহমান এবং বিএনপি’র রুমিন ফারহানার ৩টি করে সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ ও জাসদের হাসানুল হক ইনুর একটি করে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, এই বিলে যতগুলো সংশোধনী গ্রহণ করেছেন, এর আগে কখনো এত বেশি সংশোধনী কোনো বিলে গ্রহণ করা হয়নি। সংসদে পাস হওয়া বিলটি সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে। রাষ্ট্রপতি সই করার পর গেজেট আকারে প্রকাশ হলেই প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন পাবে বাংলাদেশ। এর আগে গত রোববার আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিলের দু’টি ধারায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনসহ পাসের সুপারিশ করে গত বুধবার সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

ইনডেমনিটি কথা শুনলেই আওয়ামী লীগের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়
সংসদে পাস হওয়া ইসি গঠন আইনে কাউকে ইনডেমনিটি দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ইনডেমনিটির ওই পথে হাঁটে না। ইনডেমনিটি কথা শুনলেই আওয়ামী লীগের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। বিএনপি ইনডেমনিটি দিয়ে আমাদের রক্তক্ষরণ করিয়েছে। এই আইনে লিগ্যাল কাভারেজ দেয়া হয়েছে। এই আইনের মধ্যে কেউ অন্যায় করে থাকলে তাকে প্রকেটশন দেয়া হয়নি। জাতির পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার ও খুনিদের পুনর্বাসিত করার বিষয়টি মেনে জনগনের কাছে মাফ চাইলে আওয়ামী লীগ বিএনপি’র সঙ্গে ঐকমত্যে আসবে বলে জানান তিনি। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা বিলে ইমডেমনিটির বিধান রাখার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া খসড়া আইনটি ‘তড়িঘড়ি করে’ আনা হয়েছে বলেও দাবি করেন। বিএনপি’র এমপিদের ঐকমত্যের দাবির প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ঐকমত্য করতে হলে উনাদের সত্যকে স্বীকার করতে হবে। আর সত্যটি হচ্ছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্য হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট উনারা মানে বিএনপি বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। সত্য হলো- উনারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে দেননি। খুনিদের পুনর্বাসিত করেছেন। এসব সত্য মেনে জনগণের কাছে মাফ চাইলে আমরা ঐকমত্যে আসবো। এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে আমরা ঐকমত্যে আসবো। সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত আগের দুই কমিশনকে হেফাজত প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ইনডেমনিটি আর লিগ্যাল কাভারেজ এক কথা নয়। ইনডেমনিটি হচ্ছে অন্যায় করার পরে তাকে প্রকেটশন দেয়ার জন্য আইন করা। লিগ্যাল কাভারেজ হচ্ছে যেকোনো বৈধ কাজ যেটার লিগ্যাল কাভারেজ ছিল না সেটা তার আওতায় আনা।

বিরোধীদলীয় এমপিদের বক্তব্য
বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি’র সংসদীয় দলের নেতা হারুনুর রশীদ আইনটি পাসকে সরকারের কূটকৌশল আখ্যা দিয়ে বলেন, ২০১৪ সালে বিনা ভোটের নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে আগামীতে দিনের বেলা নতুন কৌশলে নির্বাচন করবে কিনা, তা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব ইসিকে সহায়তা করা। কিন্তু না করলে কী হবে তা বলা নেই। এসব নিয়ে একটি পুরো আইন হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, জনগণ মনে করে সরকার আইন করার নামে তাদের সঙ্গে প্রহসন করছে। এই আইনটির সঙ্গে ২০১৭ সালের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপনে খুব একটা অমিল নেই। কোনো আইন মানুষের অকল্যাণে হলে তা করার থেকে না করাই ভালো। সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা একটি তারা হচ্ছে সরকারের অনুগত হওয়া। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সার্চ কমিটির দায়িত্ব দেয়া হলে তাদেরও বিতর্কিত করা হবে। তাছাড়া এখন যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তাতে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে আলোচনার দাবি জানান তিনি।

বিএনপি’র আরেক সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রপতি কোনো কাজ করতে পারেন না। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে একটি ইল্যুশন হিসেবে সামনে আনা হয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করেছিল। তখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থার ঘাটতি ছিল। এখন সে ঘাটতি আরও বেড়েছে। জাতীয় থেকে স্থানীয় সব নির্বাচন মাগুরার নির্বাচনের চেয়ে খারাপ হয়। সুতরাং ৯৬ সালের চেয়ে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আরও বেশি দরকার। তিনি আরও বলেন, আদালত বলেছিল সংসদ চায়লে আরও দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। সংবিধান সংশোধন কমিটিতে সব দল এই ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দিয়েছিল। পরে অজানা কারণে এটি বাতিল করা হয়। এখন যে পরিস্থিতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনই সম্ভব না। রুমিন ফারহানা বলেন, ইসি গঠনে সংবিধানে আইন করার কথা বলা আছে কিন্তু অংশীজনের সঙ্গে কথা না বলে তাড়াহুড়া করে আইন করা আইওয়াশ ছাড়া কিছুই নয়। এই আইনটি কেবল বিএনপি নয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা কঠোর সমালোচনা করেছেন। এটাকে ইসি গঠনের আইন না বলে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, সার্চ কমিটিতে সরকারি দল, সংসদের প্রধান বিরোধী দল ও তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন করে প্রতিনিধি থাকলে স্বচ্ছতা থাকতো। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে কেবল সরকারের ইচ্ছায় ইসি গঠন হবে। ওই কমিশন স্বাধীন হবে না, হবে সরকারের নির্বাচন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদ সংশোধন না করে এই আইন করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। এই আইনে প্রস্তাবিত সার্চ কমিটির সদস্য নির্বাচনের সংসদ সদস্যদের ভূমিকা রাখার বিধান যুক্ত করার দাবি করেন তিনি। জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে শ্যাল শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েই কাজ করতে হবে। আইনে না থাকলেও যেটা হবে তা হলো, অনুসন্ধান কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। সে প্যানেল যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি পাঁচজন নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। তবে এটা যে অসাংবিধানিক তা নয়। কাজী ফিরোজ রশীদ আইনটি প্রণয়ন ভালো উদ্যোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেরিতে হলেও আইনটি হচ্ছে। অনেকে আইনটিকে তড়িগড়ির কথা বলেছেন। কিন্তু এর আগে তো বলা হয়েছিল ১৫ দিনে এই আইন করা সম্ভব। তাহলে তড়িঘড়ির প্রশ্ন আসছে কেন? সার্চ কমিটির সদস্য সংসদ থেকে এলে বিতর্ক হতো না বলে তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন শতভাগ আমলা নির্ভর উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বাংলাদেশে কী বিচারপতি ও আমলা ছাড়া বিশ্বাস করার মতো কেউ নেই?

জাপার রওশন আরা মান্নান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর চাহিদার প্রতি সম্মান দেখিয়ে সরকার এই আইনটি করছে। কিন্তু সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ রেখে কীভাবে আইনটি হবে জানি না। আলোচনা ছাড়া তাড়াহুড়া করে আইনটি পাস করলে দেশে আবারো অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। আশা করবো স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বজায় রেখে সরকার সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে ইসি গঠন করবেন। তাহলে দেশটি শান্ত থাকবে। পীর ফজলুর রহমান বলেন, এই আইনের বিষয়ে মানুষের কৌতূহল রয়েছে। সকলে এটা নিয়ে কথা বলছেন। এই আইনটি নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে আরও সমৃদ্ধ হতো। এই আইনে বিগত দুটি কমিশনকে যে হেফাজত দেয়া হয়েছে এটার দরকার ছিল না। এখানে তত্ত্বাধবায়ক সরকার আনার কথা বলে বিএনপি তাদের পূর্বের বক্তব্য অনুযায়ী ‘পাগল আর কোন শিশুকে আনতে চান সেটা বুঝতে পারছেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন। গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা নেই। এই ইসির সুবিধাভোগী ছাড়া সকলেই বলবে তারা ব্যর্থ। সরকারের আকাঙ্ক্ষার বাইরে কিছু করতে পারে না কমিশন। তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে গিয়ে যে আইন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি, এই আইনে তার প্রতিফলন ঘটেনি। আইনটিতে বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিল নেই।

সরকারের শরিক দলের সদস্যদের বক্তব্য
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি আইন নয় সরকারের উৎখাত চায়। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে লাভ নেই। তিনি বলেন, এর আগে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, আইনটি করার জন্য সময় প্রয়োজন। এই আইনটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন উত্থাপন হয়েছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। তিনি নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন। অনুসন্ধান কমিটি যে নামগুলো দেবে সেগুলো জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, এটা হলে তা অনেক ইনক্লুসিভ হবে। এ ছাড়া অনুসন্ধান কমিটি যে নামগুলো প্রস্তাব করবে সেগুলো অন্তত প্রকাশ করতে হবে। এরপর জনমত বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেবেন। এমন ব্যবস্থা রাখার দাবি জানান তিনি। সংশোধনী প্রস্তাব দিয়ে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তারা একটি অস্বাভাবিক সরকার আনতে চায়। তাদের এমপিরা এখানে সংশোধনী প্রস্তাব দিলেও বিএনপি নেতারা ইতিমধ্যে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনের আগেই ক্ষমতা নিশ্চিত করা তাদের উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, বিএনপি বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানে কিনা, ২৬শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা, যুদ্ধাপরাধ, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার এসব মানে কিনা স্পষ্ট করতে হবে। এসব না মানলে এই যুদ্ধ বন্ধ হবে না। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অনেক ফাঁকফোকর ছিল, এরমধ্য দিয়ে ইয়াজউদ্দীনকে ক্ষমতায় এনে নির্বাচন করতে চেয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ছুতোয় বিএনপি একটি অস্বাভাবিক সরকার গঠন করতে চায়। অনুসন্ধান কমিটি যে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন তাদের নাম ঠিক করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটিকে কোনো পরামর্শ দিতে পারবেন না, এমনটি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, যারা দ্রুত আইন দাবি জানিয়েছিলেন আইনটি করার উদ্যোগ নেয়ার পর তারাই আবার উল্টে গেলেন। তিনি বলেন, অনুসন্ধান কমিটি যেসব নাম প্রস্তাব করবে সেগুলো জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটিতে পাঠানোর বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর