বাংলারজমিন

২ বছরেও উদ্বোধন হয়নি সরাইলের ৮০ শহীদের বিটঘর বধ্যভূমির

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে

২০২২-০১-২৯

স্বাধীনতার ৪ যুগ পর সরাইল উপজেলার ৮০ শহীদের বিটঘর বধ্যভূমিতে নির্মিত হয়েছে শহীদদের নামফলক ও স্মৃতিসৌধ। জেলার সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানের উদ্যোগে ১৩ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে হয়েছে কাজটি। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে ২ বছরেরও অধিক সময় ধরে আটকে আছে বধ্যভূমির উদ্বোধন। অত্যাধুনিক একটি শহীদ মিনার। সুন্দর স্মৃতিস্তম্ভ। এখানে সংঘটিত যুদ্ধের ইতিহাস। ৮০ জন শহীদের নামের তালিকা। বাহারি রং-এর টাইলস্‌ ফিটিং। স্থানটির চারিদিকে ডিজাইন করা প্রতিরক্ষা দেয়াল। ৪৮ বছর ধরে অযত্নে অবহেলায় থাকা বিটঘর বধ্যভূমি এখন সেজেছে বর্ণিল সাজে । ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে  ডিসেম্বর সোমবার অত্যন্ত জাঁক-জমকপূর্ণ ভাবে এ বধ্যভূমিটির উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। কিন্তু আগের দিন ২২শে ডিসেম্বর জানানো হয় অনিবার্য কারণে উদ্বোধন অনুষ্ঠান স্থগিত। মূল কারণটিও বলতে চাইনি প্রশাসন। ৪৮ বছর পরও একটি বধ্যভূমি রাজনীতির শিকার হবে কেন? এর পেছনে কী আছে? কারা কাজ করছেন? এমন সব প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হওয়া নিয়ে ঠেলাঠেলি ও বিরোধের কারণেই সেইদিন স্থগিত করা হয়েছিল। ৪৮ বছর ধরে অবহেলিত ওই বধ্যভূমিতে কোনো নামফলক ও স্মৃতিসৌধ ছিল না। জনৈক শহীদজায়া ও প্রশাসনের উদ্যোগে যখন সেই ব্যর্থতা ঘুঁচেছে, ঠিক তখনই স্থানীয় রাজনীতির লীলা খেলায় উদ্বোধন পিছিয়ে যাওয়া খুবই দুঃখজনক বলে বর্ণনা করেছেন অনেকে। পুরো কাজটির তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আন্তরিকতা ও অনুপ্রেরণায় ওনার উন্নয়ন তহবিলের টাকায় এ কাজটি করা হয়েছে। এতে করে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস সংরক্ষিত হবে। পরবর্তী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হবে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী ও ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, অনেক কষ্টে একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ ও প্রতিহিংসার কারণে বধ্যভূমিটির উদ্বাধন আটকে আছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যুদ্ধকালীন কমান্ডার পানিশ্বর গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুর রাশেদ বলেন, বিটঘরে আমাদেরকে পাঞ্জাবির চেয়ে বেশী ভুগিয়েছে রাজাকাররা। দীর্ঘদিন পর জেলা প্রশাসকের আন্তরিকতায় এখানে শহীদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পাবে। আর রাজাকারের উত্তরাধিকারদের যন্ত্রণা বেড়ে যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, আপাতত আবহাওয়ার কারণে উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে দিনক্ষণ ঠিক করে ভালোভাবে অনুষ্ঠানটি করা হবে। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, উদ্বোধন করতেই হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। আমরা এই মুহূর্তে ওই বধ্যভূমির উদ্বোধন নিয়ে ভাবছি না।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status