× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২৪ ঘণ্টায় ২০ জনের মৃত্যু / শনাক্তের হারে রেকর্ড, বাড়তে পারে আরও দুই সপ্তাহ

প্রথম পাতা

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২৯ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার

ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনার সংক্রমণ। প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে মরণব্যাধি এই ভাইরাসটি। দেশে গতকাল সর্বোচ্চ শনাক্তের হারের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। আরও দুই সপ্তাহ করোনার ঊর্ধ্বমুখী আচরণ দেখা যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে সাউথ আফ্রিকান নতুন ধরন ওমিক্রন। এটা ডেল্টার চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি ছড়াচ্ছে। সংক্রমণের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রামগঞ্জেও। দৈনিক শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশে পৌঁছেছে।
এর আগে এই হারের রেকর্ড ছিল গত বছরের ২৪শে জুলাই। ওইদিন সর্বোচ্চ শনাক্তের হার ছিল ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৪০ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ওমিক্রনের গণসংক্রমণ চলছে। ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাস সংক্রমণের অব্যাহত ঊর্ধ্বমুখী ধারাকে অশুভ ইঙ্গিত বলে মনে করে স্বাস্থ্য বিভাগ। সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, এ দফায় দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আগেই শুরু হয়েছে। সংক্রমণের গতি ভয়াবহ। দিন দিন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে করোনার সংক্রমণ। ঘরে ঘরে সর্দি-কাশির রোগীর খবর আসছে। সেভাবে পরীক্ষা হচ্ছে না। মানুষ মাস্ক পরছে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না। দেশে বর্তমানে প্রতি তিনজনে একজন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এই গতিকে আরও সপ্তাহ দু’য়েক পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দেশের এই খ্যাতিমান ভাইরোলজিস্ট বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। টিকার আওতা আরও বাড়াতে হবে। বেশি বেশি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা এবং সংস্থাটির সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন বলেন, দেশে ওমিক্রনের গণসংক্রমণ চলছে। করোনার ঊর্ধ্বমুখীভাব আরও দুই সপ্তাহ থাকতে পারে। যে কোনো ভাইরাস সবাইকে সংক্রমণ করার পরে থামতে থাকে। তাই সতর্ক থাকতে হয়। এটা ডেল্টার চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি ছড়ায়। এই জনস্বাস্থ্যবিদ করোনার টেস্ট আরও বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে বুথ স্থাপন করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ বুথ স্থাপন করে করোনার পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। টিকার আওতা বাড়াতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
রেকর্ড শনাক্তের হার ৩৩.৩৭ এবং  আরও ২০ জনের মৃত্যু: করোনা শনাক্তের হার ও মৃত্যু বেড়েছে। দেশে একদিনে  সর্বোচ্চ শনাক্তের হারের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। দৈনিক শনাক্তের হার  ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশে পৌঁছেছে। এর আগে এই হারের রেকর্ড ছিল গত বছরের ২৪শে জুলাই। ওইদিন সর্বোচ্চ শনাক্তের হার ছিল ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৮ হাজার ৩০৮ জনে। নতুন শনাক্তের ৫৩ শতাংশই ঢাকা মহানগরের বাসিন্দা। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৪০ জন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৮০৭ জন। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭১ জন।  গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩২৬ জন এবং এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে ৮৬৫টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ২৯২টি নমুনা সংগ্রহ এবং ৪৬ হাজার ২৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ৮ পুরুষ এবং ১২ জন নারী। দেশে মোট পুরুষ মারা গেছেন ১৮ হাজার ৮৮ জন এবং নারী ১০ হাজার ২২০ জন।  তাদের মধ্যে বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯১ থেকে ১০০ বছরের ১ জন,  ৮১  থেকে ৯০ বছরের ৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ৭ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের ২ জন, শূন্য থেকে ১০ বছরের ১ জন রয়েছেন।  মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ঢাকায় ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন,  বরিশাল বিভাগে ১ জন,  সিলেটে ২ জন,  ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন রয়েছেন। মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন সরকারি হাসপতালে এবং ৩ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। নতুন শনাক্তের মধ্যে ঢাকা মহানগরের রয়েছেন ৮ হাজার ১১৩ জন। যা একদিনে মোট শনাক্তের ৫২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯২২৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৭২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ হাজার ২৮১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ১২১ জন, রংপুর বিভাগে ৪৩৮ জন, খুলনা বিভাগে ৮৫৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৫০৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ৬৪২ জন শনাক্ত হয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
Kazi
২৮ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার, ৩:৪১

প্রতিটি ঘরে ঘরে ওমিক্রন এ আক্রান্ত। যারা পরীক্ষা করাচ্ছে না হিসাবের বাইরে থেকে যাচ্ছে। তাই আমার ধারণা দেশে কভিড আক্রান্ত প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ লোক । এটা মন্দ নয় একদিক বিবেচনায়। যারা বেঁচে থাকবে তারা সবাই ইমিউনিটি অর্জন করবে ।

অন্যান্য খবর