নির্বাচিত কলাম
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ
তাসে কি তবে টোকা লেগেছে?
সাকিব আনোয়ার
৬ মে ২০২৪, সোমবারগত দেড় দশকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে আশঙ্কাজনক অবনমন ঘটেছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়া কেন, সারা পৃথিবীতেই দুর্নীতি ছিল, আছে। কিন্তু উল্লিখিত সময়ে বাংলাদেশে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার একরকম প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, অর্থ পাচারকারীদের ছাড় দিতে কখনো সংসদকে ব্যবহার করে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে; আবার কখনো সরকারের প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য হস্তক্ষেপে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর এই সুযোগে তৈরি হয়েছে সরকারের অলিগার্ক শ্রেণি। যাদের হাতে ব্যাংক, শেয়ারবাজার, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য তুলে দেয়া হয়েছে। জ্বালানি আমদানি, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ এমনকি নিত্যপণ্যের বাজারও এই অলিগার্ক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। দেশের অর্থনীতির সবগুলো সূচককে পাশাপাশি দাঁড় করালে আশঙ্কা হতেই পারে- “মহাবিপর্যয়ের প্রারম্ভিক সূচনা কি হয়ে গেছে?” তাসে কি তবে টোকা লেগেছে
বিশ্বরাজনীতি বা অর্থনীতিতে সংঘটিত নানা ঘটনার ক্ষেত্রে ডমিনো ইফেক্ট কাজ করে। ডমিনো ইফেক্টে খুব ছোট একটি ঘটনা বা একাধিক ঘটনা উদ্দীপিত হয়ে অন্য ঘটনাগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করে একটি চেইন তৈরি করে, যার ফলে বৃহৎ একটি ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ঠিক যেমনটা বাটার ফ্লাই ইফেক্ট অনুযায়ী, ব্রাজিলে একটি প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর কারণে সৃষ্ট তরঙ্গ থেকে টেক্সাসে টর্নেডো হতে পারে, অনেকটা সেরকম। বিশ্বরাজনীতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করতে গেলেই সেখানে ডমিনো ইফেক্ট খুঁজে পাওয়া যাবে; যেমন প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কিংবা অতি সামপ্রতিক সময়ে আরব বসন্ত। অর্থনীতির উত্থান-পতনও ডমিনো ইফেক্টের মতো একই শিকলে থাকা বিভিন্ন বিষয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অর্থাৎ ডমিনো ইফেক্ট হচ্ছে একই শিকল বা চেইনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকা একটি প্রভাব যা একটি ঘটনা থেকে একই রূপ অন্য ঘটনার সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে সব ঘটনাই একটি শৃঙ্খলের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক তাস যদি দাঁড় করিয়ে রাখা যায়, একটিকে টোকা দিয়ে ফেলে দিলে এক এক করে পাশের তাসগুলোও পড়ে যাবে- এটি হচ্ছে ডমিনো ইফেক্টের মূল কথা।
প্রায় দুই বছর আগে ২০২২ সালের জুলাইতে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে লেখা একটা কলামের শেষ তিনটি লাইন ছিল এরকম- “সংকটগুলো একটা আরেকটার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং পর্যায়ক্রমে অপেক্ষাকৃত কঠিনভাবে আমাদের সামনে আসছে। নিশ্চিতভাবে বলা যায়, শিগগিরই এ সংকট কাটবে না বরং আগামী বছরগুলোয় তা আরও তীব্রতর হবে। পর্যায়ক্রমে তীব্র হয়ে ওঠা সংকটগুলো কি ডমিনো ইফেক্টের মতো কোনো মহাবিপর্যয়ের প্রারম্ভিক সূচনা; কোনো তাসে টোকা লাগেনি তো?” দুই বছর পর এসে মনে হচ্ছে, সম্ভবত কোনো একটা তাসে টোকা লেগেছে। এখন শুধু ভেঙে পড়ার অপেক্ষা। দেশের অর্থনীতির তাসগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত দাঁড়িয়ে আছে রপ্তানি আয় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপর। এর উপরেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নির্ভর করে। সামপ্রতিক মাসগুলোতে রপ্তানি আয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় মূলত পোশাক খাতের উপর নির্ভরশীল। একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দেশের তৈরি পোশাকের সর্ববৃহৎ ক্রেতা। গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। একই পরিস্থিতি ইউরোপের বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে। আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা সহ পশ্চিমা বিশ্বই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান ক্রেতা।
গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকার ইস্যুতে সোচ্চার পশ্চিমা বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানি আগামী বছরগুলোতে আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেননা, ক্ষমতার প্রশ্নে শাসক শ্রেণি পশ্চিমা বিশ্বের উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী নয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নতুন রপ্তানি পণ্য এবং নতুন বাজার খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেও ভাটা পড়েছে। ফলে মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ মাত্র ১৪ বিলিয়ন ডলার যা দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কোনো দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকা জরুরি। এর কম রিজার্ভ থাকাকে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঝুঁকিপূর্ণ স্তরে নামার আরেকটি বড় কারণ অর্থ পাচার। ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থের তথ্য উঠে এসেছে। গত ১৫ বছরে বৈধ পথে অর্থাৎ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ১১ লাখ কোটি টাকা। অবৈধ পথে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ যোগ করলে এই পরিমাণ কতো হতে পারে তা নিশ্চয়ই আমরা অনুমান করতে পারি। রিজার্ভ সংকট দূর করতে আমদানি সীমিত করা হলেও পাচার বন্ধ করা যায়নি।
বিভিন্ন সময়ে পাচারের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও সেই ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, ন্যূনতম তদন্তের উদ্যোগও সরকার নেয়নি। বরং পাচারকারীদের ছাড় দিতে সরকারের প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং সেক্টরের সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকটের কথা স্বীকার করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ব্যাংকের তারল্য সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রেপো সুদ হার বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। বেশির ভাগ ব্যাংক টিকে আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ধার করে। গত ১৫ বছরে খেলাপি ঋণ প্রায় সাড়ে ৬ গুণ বেড়ে দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তবে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, আদালতের মাধ্যমে স্থগিত, অবলোপনকৃত ও পুনঃতফসিলি ঋণ যোগ করলে এ পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। অথচ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের সময় খেলাপি ঋণ ছিল সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী ঋণখেলাপি গোষ্ঠী এবং সরকারের অলিগার্ক ব্যাংক মালিকদের সুযোগ দিতেই সব উদ্যোগ নিয়েছে। কখনো সরকার আইন করেছে, কখনো বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
যেখানে দেশের ব্যাংক সেক্টরকে ধ্বংসের জন্য খেলাপি ঋণকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে সমপ্রতি ঋণখেলাপি গোষ্ঠীকে ছাড় দিতে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলেও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে নতুন করে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবে। আগে এক প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ পাবার সুযোগ ছিল না। তিন বছরের ব্যবধানে ডলারের দাম বেড়েছে ২৪ টাকারও বেশি। যদিও কার্ব মার্কেটের হিসাবে এই সময়ে ডলারের দাম বেড়েছে ৪০ টাকারও বেশি। জিডিপি এবং পার ক্যাপিটাল ইনকামের গল্প শোনাতে কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম ধরে রেখেছে সরকার। যে জিডিপি প্রবৃদ্ধির গল্প এতদিন সরকার শুনিয়েছে, সরকারি তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসেই ঋণের সুদ বাবদ খরচ ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
সামনের দিনগুলোতে এই পরিমাণ আরও কয়েক গুণ বাড়বে। পাশাপাশি যুক্ত হবে ঋণের মূল অর্থ পরিশোধের চাপ। বলা বাহুল্য, ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে ডলারে। বিদেশি ঋণের স্থিতি ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০০৮ সালে যা ছিল ২২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত ১৫ বছরে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ঋণের সুদ পরিশোধ করতে এখন নতুন করে ঋণ করছে সরকার। ডলার সংকটের কারণে সরকার জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লা আমদানি করতে পারছে না। এক বিদ্যুৎ খাতে সরকারের বকেয়া প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানি খাতে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ৫০০ কোটি ডলার দেনা আছে। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, প্রতি মাসে ১০০ কোটি ডলার পাওনা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আছে। ভর্তুকি কমানোর অজুহাতে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি তেলের দাম। অথচ বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির ৮১ শতাংশই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে সরকার তার অলিগার্ক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর পকেটে তুলে দিয়েছে। যে দুর্নীতি, লুটপাট আর স্বজনতোষী নীতি জ্বালানি খাতকে এই পরিস্থিতিতে নিয়ে এসেছে সেদিকে দৃষ্টি দিচ্ছে না সরকার। বরং এই সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়েও সরকার লুটপাট, দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সরকারি হিসেবেই প্রায় এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে। প্রকৃত হিসাব এর প্রায় দ্বিগুণ। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমার ফলে রাজস্ব আয়ে টান পড়েছে। আমদানি সীমিত করায় শুল্ক আদায় কমেছে। ফলশ্রুতিতে ব্যয় নির্বাহ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ নিয়েছে সরকার। টাকা না থাকায় এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘সোভারিন বন্ড’ ইস্যু করছে সরকার।
গত দেড় দশকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে আশঙ্কাজনক অবনমন ঘটেছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়া কেন, সারা পৃথিবীতেই দুর্নীতি ছিল, আছে। কিন্তু উল্লিখিত সময়ে বাংলাদেশে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার একরকম প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, অর্থ পাচারকারীদের ছাড় দিতে কখনো সংসদকে ব্যবহার করে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে; আবার কখনো সরকারের প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য হস্তক্ষেপে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর এই সুযোগে তৈরি হয়েছে সরকারের অলিগার্ক শ্রেণি। যাদের হাতে ব্যাংক, শেয়ারবাজার, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য তুলে দেয়া হয়েছে। জ্বালানি আমদানি, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ এমনকি নিত্যপণ্যের বাজারও এই অলিগার্ক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। দেশের অর্থনীতির সবগুলো সূচককে পাশাপাশি দাঁড় করালে আশঙ্কা হতেই পারে- “মহাবিপর্যয়ের প্রারম্ভিক সূচনা কি হয়ে গেছে?” তাসে কি তবে টোকা লেগেছে?
লেখক: কলামিস্ট, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
@Mohsin: আপনি কেমন অর্থনীতির ছাত্র আপনার কমেন্ট পড়ে আমরাও বুঝে উঠতে পারি
আমরা যারা অর্থনীতির ছাত্র তারা সবাই জানি এই দুনিয়ার কোন অর্থ ব্যাবস্থাই তাসের ঘরের সাথে তুলনা চলে না। লেখক সম্পুর্ন রাজনৈতিক চোখে ব্যাপারটা বিশ্লেষণ করেছেন। বিশ বছর আগের অর্থনীতি আর এখনকার অর্থনীতি আকাশ পাতাল তফাৎ।