খেলা
আবারো পদের আশায় ফুটবলে ফেরার ঘোষণা রুহুল আমিনের
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবারআবারো পদের আশায় ফুটবলে ফিরছেন তরফদার রুহুল আমিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর বর্তমান সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আসন্ন নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরেই আবারো দৃশ্যপটে চলে আসেন কিছুদিন আগে ফুটবলকে বিদায় বলা এই সংগঠক। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচন করার কথা বলেন তিনি।
২০১৬ সালের বাফুফে নির্বাচনে সালাউদ্দিনের প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন তরফদার রুহুল আমিন। ছিলেন বাংলাদেশ সাঁতার ও দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হিসেবে। ২০২০ সালের বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থীও হতে চেয়েছিলেন। সভাপতি পদে নির্বাচন করতে না পেরে রুহুল আমিন ফুটবল থেকে নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন । ২০১৭ সালে প্রিমিয়ার লীগে নাম লেখানো সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ২০২১-২০২২ মৌসুমে তৃতীয় হওয়ার পরপরই শীর্ষস্তর থেকে সরিয়ে নেন। ২০২৩ সালে নিচের স্তর থেকেও সাইফ ফুটবল একাডেমিকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। সবশেষ চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে সরে দাঁড়িয়ে পুরোপুরি ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন রুহুল আমিন। ধীরে ধীরে সাঁতার ও দাবা থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নেন। মাত্র তিন লাখ টাকার জন্য প্রিমিয়ার দাবায় দল গড়েনি সাইফ স্পোর্টিং। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা রুহুল আমিন চেয়ারের লোভে আবারো ফিরতে চাইছেন ক্রীড়াঙ্গনে। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের উপর ভর করে ফুটবলে ফেরার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা যদি বিজয়ী হই তাহলে চার বছরে ফুটবলের ভিত শক্ত করতে চাই। যাতে আমাদের পর যারা আসবেন তারা যেন কাজ করার একটি শক্ত ভিত পায়। আমরা একটি শক্তিশালী ফেডারেশন গড়তে চাই। আমরা সারা দেশে ফুটবল ছড়িয়ে দিতে চাই।’
ঐক্যমতের ভিত্তিতে ব্যানারে লিখে তরফদার রুহুল আমিনের সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণাটি দেন অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফোরাম কর্তা এডভোকেট আলী ইমাম তপন। তিনি বলেন, ‘জেলা ও ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে তরফদার রুহুল আমিনকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। ফুটবল ফেডারেশন জেলা পর্যায়ে লীগ পরিচালনা করতে সহায়তা করেনি। উনার সহায়তায় জেলায় লীগ হয়েছে। একই মঞ্চ থেকে তরফদার রুহুল আমিন জানান, আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থিতা তিনি গ্রহণ করেছেন, ‘যে ঘোষণা তারা দিয়েছেন, আমি তা সাদরে গ্রহণ করলাম। ফুটবলের সেই দিনগুলো নেই, হারিয়ে গেছে। ২০০৮ এর পর ফুটবল তলানিতে গেছে। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দল। এরপর থেকে হারতে হারতে নিচের দিকে আছি। আজ র্যাঙ্কিং ১৮৪-তে এসেছে। এখান থেকে দলকে উপরে উঠানো কঠিন। মাঠের খেলা টেবিলে চলে এসেছে। সারা দেশে এর চর্চা হলে ঠিকই বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয়া যেতো।’
এরপরই তার কথা, ‘গত ১৬ বছর ফুটবলকে জাগতে দেয়া হয়নি। আমি ফুটবল নিয়ে অনেক কাজ করেছি, জেলা ও বিভাগে। প্রচুর খেলোয়াড় উঠে এসেছে। ওই সময় প্রতিকূল অবস্থায় কাজ করেছি। বাফুফে চায়নি আমরা কাজ করি। ১৮ কোটি লোকের দেশে সীমানা পার হতে পারি না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। আমি কাউকে দোষ দিতে চাই না।’ নিজের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে প্যানেল তৈরি করে এগুলাম। দেশেও থাকতে পারলাম না। অনেক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়িক দিক দিয়ে। এজেন্সি দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। সাইফ স্পোর্টিং বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ’
ফুটবলে সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে পারলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে তৃণমূল পর্যায়ে শুরু করবো। ফুটবলকে এসি রুমে রাখবো না। বিকেন্দ্রীকরণ করবো। নতুন করে জাগরণ তৈরি করবো। চার বছরে কী করবো, সেটাও বলবো।’ গতকালের অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন সাবেক তারকা ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক, সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বিরসহ আরও অনেকে। মঞ্চে না থাকলেও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, ডাকসুর সাবেক নেতা খায়রুল কবির খোকন। সালাউদ্দিনকে হটানোর দাবিতে একাট্টা হয়ে আমিনুলের সঙ্গে আন্দোলন করা আব্দুস সালাম কাল এই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না। শোনা যাচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এই উপদেষ্টা বাফুফের সাবেক সভাপতি তাবিথ আউয়ালকে সভাপতি প্রার্থী করে মাঠে নামছেন।