অনলাইন
বৃটিশ দম্পতির মামলায় বড় অংকের অর্থ জরিমানা দিলো গুগল
আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
(১ সপ্তাহ আগে) ৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৮:১৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৩ অপরাহ্ন
গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করে দুই বিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা আদায় করলেন ব্রিটিশ দম্পতি শিভান রাফ এবং অ্যাডাম। বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ২০১০ সালে বৃটিশ দম্পত্তি গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনানে যে জনপ্রিয় ব্যবসায়ীক ওয়েবসাইটকে ডাউন করার পেছনে গুগলকে দায়ী করে ইউরোপীয় কমিশনে মামলা করেন বৃটিশ এই দম্পতি ওই দম্পতি। বাজারে আধিপত্য বিস্তারের জন্য গুগল তার স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া ব্যবহার করে প্রতিযোগীদের ব্যবসায়ে ধস নামায়। এ নিয়ে ইউরোপীয় কমিশনে ২০১০ সালে মামলা করেন তারা , দীঘদিন ধরে চলা সেই মামলায় গুগলে হেরে যায়। আদালতের নির্দেশে সেই দম্পতিকে দুই বিলিয়ন পাউন্ড দিতে বাধ্য হয় গুগল।
ইউরোপীয় কমিশন ২০১০ সালে তাদের মামলা আমলে নিয়ে গুগলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। অবশেষে প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গুগলকে দুই বিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করা হয়, যা প্রযুক্তি বিশ্বে সাড়া ফেলে। এই রায়ের পর প্রায় ২০টি সংস্থা দাবি করেছে, তারাও গুগলের প্রতিযোগিতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছিল। যার মধ্যে রয়েছে কেলকু, ট্রিভাগো ও ইয়েল্পের মতো বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান।
তবে গুগল তখন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। গুগলের দাবি ছিল, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাদের শপিং পরিষেবাগুলো যেভাবে দেখানো হতো, সেটি তারা এরই মধ্যে সংশোধন করেছে। কিন্তু ২০২৪ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় বিচারিক আদালত গুগলের আপিল খারিজ করে দেয় এবং ফাউন্ডেমের পক্ষে রায় ঘোষণা করে।
উল্লেখ্য যুক্তরাজ্যের দম্পতি শিভাউন র্যাফ ও তার স্বামী অ্যাডাম ২০০৬ সালের জুনে ভালো বেতনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে শপিং কম্পারিজন ওয়েবসাইট ‘ফাউন্ডেম’ চালু করেন। কিছুদিনের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে সেরা শপিং কম্পারিজন ওয়েবসাইটে পরিণত হয় সাইটটি। তবে হঠাৎ করেই তাদের সাইট ধীরগতির হয়ে পড়ে ও গুগল সার্চের ফলাফলে সাইটটি অনেক নিচে আসতে থাকে। এ নিয়ে তারা গুগলের কাছে অভিযোগ করেন। তবে গুগল থেকে মেন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। শিভাউন র্যাফ-অ্যাডাম দম্পতি জানান, প্রথমে তারা ভেবেছিলেন কোনো সাইবার আক্রমণ, কিন্তু আদতে তা ছিল না। ছিল গুগলের কারসাজি। নিজস্ব শপিং কম্পারিজন সার্ভিস ব্যবহার করে বাজারে আধিপত্য বিস্তারের জন্য গুগলের স্বয়ংক্রিয় স্প্যাম ফিল্টার ফাউন্ডেম ওয়েবসাইটকে সার্চ ফলাফলের নিচের দিকে ঠেলে দেয়। এটি এমনভাবে সাইটটির অবস্থান নিচে নামিয়ে দেয় যে সাধারণ ব্যবহারকারীরা তাদের সাইট খুঁজে পায় না। শিভাউন ও অ্যাডাম প্রথমে কল্পনাই করতে পারেননি গুগল এমন কিছু করতে পারে। তবে দুই বছরেও গুগল কোনো ভ্রুক্ষেপ না করায় তাদের সন্দেহ গভীর হয়।
এরই মধ্যে দম্পতিটি খেয়াল করেন, অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে তাদের ওয়েবসাইট ঠিকঠাকভাবে সামনে আসছিল, শুধু গুগল সার্চেই তারা অনেক নিচে। তখন তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাদের মতো আরও অনেক কোম্পানি গুগলের এই সুষম প্রতিযোগিতা বিরোধী আচরণের শিকার হয়েছে।