শেষের পাতা
সাবেক মন্ত্রীসহ ৯ জন রিমান্ডে
স্টাফ রিপোর্টার
৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবারআওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৫ মন্ত্রীসহ ৯ জনকে ৪৫ দিন রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফুর রহমান ও মো. ইমরান আহম্মেদের পৃথক দু’টি আদালত শুনানি শেষে এই রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলো- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. আবদুস শহীদ, সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক এমপি হাজী মো. সেলিম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
এদিন সকালে ড. আবদুস শহীদ বাদে বাকিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর শুনানি শেষে রাজধানীর পৃথক দুই মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরমধ্যে হাইকোর্টের জাল ভোটের ঘটনায় শাহবাগ থানায় করা মামলায় পাঁচ দিন ও বাড্ডা থানার হত্যা মামলায় তাকে তিন দিনের রিমান্ড দেয়া হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানার মামলায় সাধন চন্দ্রের তিন দিন ও যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় শাজাহান খানকে তিন দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে ধানমণ্ডি থানার মামলায় তিন দিন ও বংশাল থানার মামলায় চার দিন করে মোট ৭ দিনের রিমান্ড দেন আদালত। এ ছাড়া নিউমার্কেট থানার মামলায় জিয়াউল আহসান, চকবাজার থানার মামলায় হাজী সেলিম, ধানমণ্ডি থানার হত্যা মামলায় হাসানুল হক ইনু ও চকবাজার থানার মামলায় তানভীর হাসান সৈকতকে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এদিকে বিকালে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাবেক এমপি উপাধ্যক্ষ ড. আবদুস শহীদকে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক উত্তরা পশ্চিম থানার একটি হত্যা মামলায় তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল হালিম। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমানের আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ই আগস্ট রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আজমপুরে রাইদা পরিবহনের চালক আলমগীর হোসেন গুলিতে নিহত হন। এই ঘটনায় তার মা আলেয়া বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় গত ৬ই অক্টোবর একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৮ জনকে আসামি করা হয়।
৪৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত: আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, মেয়র ও এমপিসহ ৪৯ জন আসামিকে একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া ১৪৪টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে এসব মামলা হয়। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ ও শরীফুর রহমানের আদালতে তাদের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ফের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কারাগারে আটক ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে আবেদন করে পুলিশ। এজন্য তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পুলিশের লালবাগ জোন ও ডিএমপি’র প্রসিকিউশন বিভাগ। এরপর তাদের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এসব আসামিদের মধ্যে সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে ১৩ মামলায়, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ১৬ মামলায়, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে ১২ মামলায়, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে ১০ মামলায়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ৯ মামলায়, সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে ৬ মামলায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে চার মামলায়, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে ৫ মামলায়, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ৩ মামলায়, সাবেক এমপি সাদেক খান, হাজী সেলিম, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে দু’টি করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।