শেষের পাতা
এদেশে জামায়াত সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত নিপীড়িত দল
স্টাফ রিপোর্টার
৮ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবারএদেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিপীড়িত রাজনৈতিক দল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল রাজধানীর মগবাজারস্থ আল ফালাহ্ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের উদ্যোগে মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের জানমাল আমাদের কাছে পবিত্র আমানত। আমরা দেশ ও জাতির স্বার্থে সব সময় দায়িত্বশীল আচরণ করে এসেছি। কিন্তু আমরা এদেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত-নিপীড়িত রাজনৈতিক দল। স্বাধীনতার পর আমাদের দু’দফা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা বরাবরই পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করে এসেছি। তারপরও আমাদেরকে নিষিদ্ধ হতে হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, ‘গরম ভাতে বিড়াল বেজার’। মূলত স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারই দেশে নেতিবাচক ও নির্মূলের রাজনীতির সূচনা করেছে। তারা আমাদের দিয়ে নাস্তা করারও ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেইনি।
তিনি বলেন, দেশ ও জাতির প্রেক্ষাপটে ৭ই নভেম্বর একটি ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী শাসকচক্র আমাদের ইতিহাস জানার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ১৯৭৫ সালের জুনে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত মাত্র ৪টি পত্রিকা বাদে সকল গণমাধ্যমের ডিক্লারেশন বাতিল করে গণমানুষের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন সে সময়ের তরুণ সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এবং কর্নেল এম এ জি ওসমানী। কিন্তু এজন্য তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও হতে হয়েছিল। এটিই ছিল বাস্তবতা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সে সময়ের বাকশাল প্রতিষ্ঠিত থাকলে দেশে কোনো পত্রিকাই থাকতো না। মানুষের অধিকারও হতো ভূলুণ্ঠিত। মূলত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে আওয়ামী-বাকশালীরা দেশের গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ’২৪-এর ৫ই আগস্ট পর্যন্ত শাহাদতবরণকারী সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এবং আহত- পঙ্গুত্ববরণকারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
জামায়াতের আমীর বলেন, মূলত বৈষম্য ও অপশাসনের কবর রচনা করে দেশকে দুঃশাসনমুক্ত এবং আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতা যুগপৎভাবে রাজপথে নেমে এসেছিল। সংগ্রামী জনতা ফুলের পাপড়ি দিয়ে দেশপ্রেমী বিপ্লবীদের বরণ করে নিয়েছিলেন। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশটাকে অন্যের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু বীর জনতা তাদের সে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ৭ই নভেম্বর ব্যর্থ হওয়ার পর তারা কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশের ৫৭ জন দেশপ্রেমী ও চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তকে অরক্ষিত করে ফেলেছে। তাই ৭ই নভেম্বরের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে শপথ গ্রহণ করতে হবে।
এসময় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বানও জানান তিনি।
উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. মুহাম্মাদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসাইন, ইয়াছিন আরাফাত, ড. মাওলানা আহসান হাবিব, উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।