বিশ্বজমিন
সিনেটে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনুমোদিত, দ্বিমত ম্যাককনেলের
মানবজমিন ডেস্ক
(২ সপ্তাহ আগে) ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার, ১২:১১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক পিটি হেগসেটকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভোটে নিশ্চিত করেছে সিনেট। তবে এই অনুমোদনের আগে তাকে কড়া প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। সামান্য ভোটের ব্যবধানে তার নিয়োগ নিশ্চিত করেন সদস্যরা। তার নিয়োগ নিয়ে এক রকম নাটকীয়তা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ক্যাপিটলে উপস্থিত হন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। তার ভোটে পিটি হেগসেট ৫১-৫০ ভোটে অচলাবস্থা কাটে। নিশ্চিত হয় নিয়োগ। ওদিকে দাবানলে ভষ্মীভূত লস অ্যানজেলেস সফর করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এ সময় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এয়ারফোর্স ওয়ানে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গাভিন নিউসম। এ সময় দাবানল নিয়ন্ত্রণে রাজ্য যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এর আগে ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলাইনা সফর করেন। সেখানে ঘূর্ণিঝড় হেলেনে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা।
ওদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে পিটি হেগসেট প্রস্তুত নন বলে অভিযোগ করেছেন রিপাবলিকান সিনেটর মিশ ম্যাককনেল। তিনি পিটির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। কেন তা করেছেন তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের অধীনে রিপাবলিকানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিভক্তি দেখা দিয়েছে। ম্যাককনেল হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় সিনেটে দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী। তিনি এ বছর এই ভূমিকা থেকে সরে গেছেন। তিনি হেগসেটের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ৩০ লাখ মানুষের একটি মন্ত্রণালয়কে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি অপ্রস্তুত। একই সঙ্গে সারাবিশ্বে বিপুল পরিমাণ বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়ে তিনি অপ্রস্তুত।
ম্যাককনেল বলেন, এই পরীক্ষায় পাস করতে পারবেন এমনটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন হেগসেট। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির শৃংখলা ভেঙে ফেলার জন্য প্রতিপক্ষের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সমন্বিত আগ্রাসনের সম্মুখীন হয়েছে। আর্মড সার্ভিসেস কমিটিতে প্রকাশ্য মন্তব্য এবং সাক্ষ্যে এসব বাস্তবতা বুঝাতে পারেননি হেগসেট। তাইওয়ান ও ফিলিপাইনে যদি চীনারা আক্রমণ করে তাহলে কিভাবে তাদেরকে রক্ষা করতে হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা দিতে সিনেটে ব্যর্থ হয়েছেন হেগসেট। যদি ওই হামলা হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সেখানে পদক্ষেপ নেয়া উচিত হবে কিনা- সে বিষয়ে তিনি জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ওদিকে প্রায় এক সপ্তাহ হতে চলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি। এ সময়ে তিনি ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। একগাদা নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। দেশজুড়ে সফর করছেন। অনেক মানুষকে ক্ষমা করেছেন। তার মধ্যে তিনি অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপ নিয়েছেন। সীমান্তে ঘোষণা করেছেন জরুরি অবস্থা। শরণার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করেছেন। অবৈধ অভিবাসীদের সনাক্ত করার আইন শিথিল করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছেন। ডেমোক্রেট পরিচালিত বড় বড় শহরগুলোতে বড় মাত্রায় অভিবাসন বিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বিধান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতায় অপরাধীদের ক্ষমা করতে পারেন।
সেই ক্ষমতায় তিনি ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িত প্রায় ১৬০০ অপরাধীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এর মধ্যে আছেন রোস আলব্রিখট, যিনি অনলাইনে মাদক ব্যবসার জন্য অভিযুক্ত। ডাইভার্সিটি, ইকুইটি এবং ইনক্লুসন (ডিইআই) কর্মসূচি বন্ধের জন্য ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন। নারী এবং পুরুষ ছাড়া আর কোনো লিঙ্গ নেই নির্দেশ দিয়েছেন। টিকটকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আপাতত বন্ধ করেছেন। গালফ অব মেক্সিকোকে গালফ অব আমেরিকা নাম দিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি, রবার্ট এফ কেনেডি এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যার গোপন ডকুমেন্ট প্রকাশ করার পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছেন।