খেলা
ভিনিকে খুঁচিয়ে যেন বল্লার চাকে ঢিল ছুঁড়লো সিটি
স্পোর্টস ডেস্ক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
ইতিহাদের দক্ষিণ গ্যালারিতে খেলা শুরুর আগে দেখা গেল বিশাল এক টিফো। কালো ব্যানারের একপাশে ব্যালন ডি’অরে চুমু খাচ্ছেন রদ্রি। পাশেই বড় অক্ষরে লেখা, ‘স্টপ ক্রাইং ইওর হার্ট আউট’। যার অর্থ, ‘কেঁদে বুক ভাসানো বন্ধ করো’। পরমুহূর্তে রদ্রিকেও দেখা গেল সে দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে। তারপর ক্যামেরা ঘুরলো ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দিকে। লেখাগুলো কার জন্য তা বুঝতে বাকি রইলো না। তবে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়কে খোঁচানোর পরিণামটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো অল হোয়াইটরা। ম্যাচের ৮৫ মিনিট পর্যন্তও ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল সিটি। শেষ পর্যন্ত সিটিজেনদের ঘরের মাঠে আরও দুইবার জাল খুঁজে নিয়ে ৩-২ গোলে জেতে রিয়াল। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা ওঠে ভিনির হাতেই।
টিফোর পেছনের গল্পটা ফুটবল ভক্তদের অজানা থাকার কথা নয়। ভিনিকে টপকে রদ্রির ব্যালন ডি’অর জেতায় এ পর্যন্ত জলঘোলা হয়েছে অনেকবার। সিটি অধিনায়কের ব্যালন জেতার খবর আগেভাগে পেয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করে ভিনিসহ পুরো রিয়াল মাদ্রিদ দল। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হয়। চুপ থাকেননি খোদ রদ্রি এবং ভিনিও। সবকিছু মাথায় রেখে এবার রিয়ালকে আবারও ঘরের মাঠে পেয়ে শান্ত থাকতে পারেনি সিটজেনরা। খেলা শুরুর আগে প্রায় মিনিট পাঁচেক সেই বিশাল টিফো দেখা যায় গ্যালারিতে। ম্যাচে যতবার ভিনির পায়ে বল গিয়েছে, প্রতিবার সম্পূর্ণ গ্যালারি থেকে ভেসে এসেছে দুয়ো। এমনকি ম্যাচের এক পর্যায়ে সিটিজেনরা একসঙ্গে গান ধরে, ‘তোমার ব্যালন ডি’অর কই? তোমার ব্যালন ডি’অর কই?’ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডও কম যান না। রিয়ালের জার্সির হাতায় লাগানো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ‘১৫’ সংখ্যাটি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। এদিনের জয়ে দুর্দান্ত এক রেকর্ড গড়ে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। সিটিকে হারিয়ে ইউরোপের শীর্ষ মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতায় ৩০০তম জয় পেয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। এই দৌড়ে তাদের আশপাশেও নেই আর কোনো ক্লাব। দুইয়ে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ জিতেছে ২৪১ ম্যাচ। এ দু’দল ছাড়া তালিকায় দুইশ’ জয়ের ঘর ছুঁয়েছে কেবল বার্সেলোনা (২০৯)। ম্যাচের ১৯ মিনিটে আর্লিং ব্রুট হালান্দের গোলে গিয়ে যায় সিটি। ৬০ মিনিটে সমতাসূচক গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ফের দলকে এগিয়ে নেন হালান্দ। ছয় মিনিটের ব্যবধানে স্কোরলাইন ২-২ করেন ব্রাহিম দিয়াজ। এরপর যোগ করা সময়ে জুড বেলিংহামকে দিয়ে গোল করিয়ে জয় তুলে নেন ভিনি। নিজে গোল না পেলেও মাঠের অসাধারণ পারফর্মেন্সে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা বাগান এই ২৪ বছর বয়সী। ৯২ মিনিটে বেলিংহামকে করা অ্যাসিস্টে চ্যাম্পিয়নস লীগের নক আউট পর্বে গোল করানোতে লিওনেল মেসিকে ছুঁয়ে ফেলেন ভিনি। ৭৭ ম্যাচে ১২ অ্যাসিস্ট করা মেসিকে ভিনিসিয়ুস ধরে ফেলেন মাত্র ৩০ ম্যাচেই। ম্যাচের পর ভিনিসিয়ুস টিফো প্রসঙ্গে বলেন, ‘ব্যানারটি দেখেছি। প্রতিপক্ষ সমর্থকেরা এমন কিছু করলে তা আমাকে আরও ভালো খেলার জন্য শক্তির যোগান দেয়। এবং এখানে আমি সেটিই করেছি।’ একই কথা বলেন- রিয়াল বস কার্লো আনচেলোত্তি। তিনি বলেন, ‘জানি না ভিনি ওটা (টিফো) দেখেছে কি না। তবে ম্যাচ দেখে মনে হয়েছে, সে ওটা দেখে থাকলে সেটি বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’