বিবিধ
একটি অনন্য উদযাপন
‘আজ আমাদের ছুটি- এএসএইচআর ২০২৫’ কুমন শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দ আর অনুপ্রেরণার দিন
(১ মাস আগে) ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:৫৭ অপরাহ্ন

এই শহরের শিশুদের জন্য কি এমন কোনো জায়গা আছে যেখানে তারা মুক্তভাবে খেলতে পারে, হাসতে পারে, আনন্দে সময় কাটাতে পারে? রাজধানীর পূর্বাচল ক্লাবে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘আজ আমাদের ছুটি - এএসএইচআর ২০২৫’ ছিল এমনই একটি আয়োজন। ব্র্যাক কুমন লিমিটেডের দিনব্যাপী এই আয়োজনে ছিল ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথির মিলনমেলা। এটি শুধু কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতির দিন ছিল না, বরং সকল কুমন শিক্ষার্থীদের জন্য ছিলো এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
আড়ং ডেইরি-এর উপস্থাপনা এবং ব্র্যাক ব্যাংক-এর পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এই আয়োজনে স্কুল গ্রেডের চেয়ে একাধিক বছর এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সম্মাননা জানানো হয়। ২ হাজার ৪৮৯ জন শিক্ষার্থী ব্রোঞ্জ, সিলভার, গোল্ড ও প্লাটিনাম সম্মাননা পায়, যার মধ্যে ২৭৭ জন ৫ বছর এগিয়ে এবং ২০ জনকে কুমন প্রোগ্রাম সম্পন্ন করার জন্য বিশেষভাবে পুরস্কৃত হয়। কিন্তু এর বাইরেও দিনটি ছিল মজার, শেখার ও সংস্কৃতির এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের দৈনন্দিন রুটিন থেকে বেরিয়ে এসে উপভোগ করেছে এক জাদুকরী দিন।
সকাল থেকে ছিল চমক আর আনন্দে ভরপুর। টেক এক্টিভিটিতে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন, বাংলার ঐতিহ্যবাহী কার্যক্রমে সংস্কৃতির ছোঁয়া, আর ফুডি-এর আয়োজনে খাবারের উৎসব—সব মিলিয়ে এক অন্যরকম দিন। সারা দিন জুড়ে ছিল অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা। ‘জিনিয়াস উইথ হার্টস - স্মার্ট ও উদার সন্তান গড়ার পথে’ শীর্ষক সেশন নেন দ্য ডেইলি স্টার-এর প্রধান ব্যবসায়িক কর্মকর্তা ও কিরনের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তাজদীন হাসান এবং এটেক-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শুভাশীষ ভৌমিক। অন্যদিকে, ‘গ্রোথ মাইন্ডসেট’ শীর্ষক প্যারেন্টিং সেশন পরিচালনা করেন মনের বন্ধু-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তওহিদা শিরোপা।
অনন্য এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক কুমন লিমিটেড-এর পরিচালক লেডি সৈয়দা সারওয়াত আবেদ, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ, আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান দাউদ শামস, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো)-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ ইয়ামাদা এজি, টিচ ফর বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিয়া ইসলাম মুজুমদার, গ্রামীণফোন-এর হেড অব পার্টনারশিপস মুনিয়া গণি, ব্র্যাক-এর সিনিয়র ডিরেক্টর (পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস) মৌটুসী কবিরসহ বাংলাদেশ ও জাপানের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত প্রতিনিধিবৃন্দ।
এই বৃহৎ আয়োজন সম্ভব হয়েছে আড়ং ডেইরি, ব্র্যাক ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি, কিরন, ব্র্যাক নার্সারি, ব্র্যাক হেলথকেয়ারসহ আরও অনেক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সমর্থনে। তাদের অবদান নিশ্চিত করেছে শিক্ষার্থীদের জন্য এক সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা, যা কুমন শিক্ষার মূল দর্শনের সাথে একাত্ম।
তামারা হাসান আবেদ বলেন, “কুমনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই, যারা শুধু একাডেমিকভাবে পারদর্শী নয়, বরং দৃঢ় মনোবল, আত্মপ্রেরণা ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হবে।”
নেহাল বিন হাসান বলেন, “এআই এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটার এর যুগে শিশুদের একাডেমিক এক্সিলেন্সের চেয়েও আরও বেশি দক্ষতার প্রয়োজন।”
এক কুমন শিক্ষার্থী উচ্ছ্বাসের সাথে জানায়, “এত মজা হয়েছে আজকে! সারাদিন অনেক খেলা করেছি, আর বন্ধুরা সবাই একসাথে আনন্দ করায় দিনটা একদম স্পেশাল হয়ে গেছে। পরের বছর কবে হবে?”
একজন অভিভাবক আবেগভরে বলেন, “আমার সন্তানকে পুরস্কার পেতে দেখে আমি গর্বিত, কিন্তু এই আয়োজনের প্রকৃত সৌন্দর্য ছিল এর অভিজ্ঞতা। শুধু মঞ্চে স্বীকৃতি নয়, শিশুরা শিখেছে, আনন্দ করেছে, নতুন কিছু আবিষ্কার করেছে—এটাই আসল প্রাপ্তি।”
স্যার ফজলে হাসান আবেদের দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশে কুমন পদ্ধতির সূচনা হয়, যা স্বশিক্ষা ও একাডেমিক এক্সিলেন্সের নতুন দিগন্ত খুলেছে। শিক্ষার প্রতি তাঁর অটুট নিষ্ঠা অসংখ্য শিশুর জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন এবং প্রচলিত শিক্ষার সীমানা অতিক্রমের পথ উন্মুক্ত করেছে, যা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করতে সহায়তা করছে।