খেলা
ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে বিচার শুরু
স্পোর্টস ডেস্ক
(৬ ঘন্টা আগে) ১২ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ২:৫৭ অপরাহ্ন

২০২০-এর ২৫শে নভেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। সারা বিশ্বে তখন প্রশ্ন ওঠে, এটি কি স্বাভাবিক মৃত্যু? নাকি অবহেলা ছিল তার চিকিৎসকদের? শেষ পর্যন্ত ঘটনা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তির শেষ দিনগুলোতে তার চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন মোট ৮ জন চিকিৎসক। মঙ্গলবার তাদের মধ্যে ৭ জনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলাজনিত অভিযোগে বিচার কাজ শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৮ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে তাদের।
নিজের সময়টায় পৃথিবীর কোন জিনিসটার অভাব ছিল দিয়েগো ম্যারাডোনার? টাকা-পয়সা থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব, খ্যাতি, কীসের কমতি ছিল তার? পুরো পৃথিবী মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখত এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির পায়ের জাদু। ‘ফুটবল ঈশ্বর’ তকমা পাওয়া খেলোয়াড়কে পড়ন্ত বেলায় থাকতে হয় নি:সঙ্গ। পুরো পৃথিবী যেখানে একসময় তার পায়ে এসে লুটাতো, সেই তাকেই শেষ বয়সে দেখভাল করার মতো ছিল না কাছের কেউ। তখন মহামারি করোনার প্রকোপে এমনিতেই ভয়ে তটস্থ পুরো বিশ্ব। সে সময়ে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে অস্ত্রোপচার করিয়ে সবে বাড়িতে এসেছেন ম্যারাডোনা। দেশটির রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে নিজের বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। দেখভাল করার জন্য কয়েকজন লোক ছাড়া কাছের কাউকে তখন পাশে পাননি ৬০ বছর বয়সী কিংবদন্তি। স্বাস্থ্যজনিত বিষয়গুলো নিয়তিম পর্যবেক্ষন করতেন তার চিকিৎসকেরা। তার মৃত্যুর পর অভিযোগ ওঠে যে, ম্যারাডোনার চিকিৎসাকালে তার চিকিৎসকরা এমন একটি পদক্ষেপ অনুসরণ করেন, যা তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে তারা অবগত ছিলেন।
সূচনা বক্তব্যে ম্যারাডোনার পক্ষের উকিল বলেন যে, তারা এমন শক্ত প্রমাণ হাজির করতে চান যে, তাতে বুঝা যাবে ম্যারাডোনা মৃত্যুশয্যায় থাকাকালীন সেসবের কিছুই চিকিৎসকেরা করেননি, যা তাদের করার কথা ছিল। বুয়েনস আয়ার্সের সান ইসিদ্রোতে শুরু হওয়া চার মাসব্যাপী এই বিচারকার্যে ম্যারাডোনার পরিবার, চিকিৎসকসহ ১০০ জনের বেশি সাক্ষ্য দেবেন বলে জানা যায়। এ মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে একজন নিউরোসার্জন, একজন মনোরোগবিশেষজ্ঞ, একজন মনোবিজ্ঞানী, একজন মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, একজন নার্স কো-অর্ডিনেটর, একজন চিকিৎসক ও রাতের নার্স। দিনে ম্যারাডোনাকে যে নার্স দেখভাল করতেন, তার বিচার হবে আলাদাভাবে।
সরকারি উকিলেরা দাবি করেন, চিকিৎসক দলটি ম্যারাডোনাকে বাড়িতেই চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন যা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও সম্পূর্ণ ‘অবিবেচনাপ্রসূত’ সিদ্ধান্ত। তাদের অভিযোগ, মৃত্যুর আগে তাকে ‘দীর্ঘ যন্ত্রণাদায়ক সময়ের’ জন্য ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়।