অর্থ-বাণিজ্য
যুক্তরাজ্যে সম্পদ জব্দের ঘটনায় আমরা খুবই উৎসাহিত: গভর্নর
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৬ ঘন্টা আগে) ২৪ মে ২০২৫, শনিবার, ৬:০৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১২ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার ও তা ফেরত আনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ তৈরি হয়েছে। সেই চাপের কারণেই যুক্তরাজ্যের লন্ডনে সম্পদ জব্দ হতে দেখা গেছে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে সম্পদ জব্দের ঘটনায় আমরা খুবই উৎসাহিত (এনকারেজড) বোধ করছি। এটাকে সামনের দিকে আরও বেগবান করতে হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির (পাচার করা) সম্পদ যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে। আশা করছি, সেগুলোকেও চিহ্নিত করে জব্দ (ফ্রিজ) করা সম্ভব হবে।’
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ঋণ সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন গভর্নর। পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক ও বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং।
লন্ডনে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন ৯০ মিলিয়ন বা প্রায় ৯ কোটি পাউন্ডের (১৬৪ টাকা ধরে যা প্রায় ১ হাজার ৪৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) বিলাসবহুল সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
পিকেএসএফ ভবনে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সম্প্রতি আমি লন্ডন সফর করেছিলাম। সেখানে অর্থ পাচার নিয়ে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও বলেন যে আমাদের চুরি করা অর্থ ফেরত নিয়ে আসব। এটা আমাদের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। তিনি সব জায়গায় সেই প্রচেষ্টাও চালাচ্ছেন। এটারই অংশ হিসেবে আমরা এখন দেখছি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অর্থ পাচার নিয়ে একটা চাপের মধ্যে রয়েছে।’
গভর্নর বলেন, ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, আল–জাজিরাসহ বৈশ্বিক গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের অর্থ পাচার নিয়ে বড় বড় নিবন্ধ লিখছে। ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা সমর্থন দিচ্ছেন। এর বাইরে ব্রিটিশ এনজিও যারা আছে, তারাও এটাকে সমর্থন করছে। ফলে আমি মনে করি, একটা চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেই চাপের ফলে আজ আমরা দেখলাম যে এনসিএ কিছু সম্পদ জব্দ করেছে।’
জব্দ হওয়া সম্পদ কত দিনের মধ্যে দেশে ফেরত আসতে পারে, সে বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকেরা। এ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘জব্দের ঘটনা দেশে ফেরত আনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। এটি আসবে বিচারের পর। কিন্তু জব্দের ফলে বিচার শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত তাঁরা এই সম্পদগুলো আর বিক্রি করতে পারবেন না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। এখন বিচারক সিদ্ধান্ত নেবেন যে সেই সম্পদ তার (যুক্তরাজ্যের), না বাংলাদেশের। আমরা এখন আইনিপ্রক্রিয়াটা শুরু করব।’
যুক্তরাজ্য ছাড়া আরও কিছু দেশে এ ধরনের সম্পদ রয়েছে বলে বিভিন্ন সময় সংবাদে উঠে এসেছে। এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। গত সপ্তাহে আমি দুবাই গিয়েছিলাম। সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। লন্ডনে আবার যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া অর্থ পাচার নিয়ে আন্তর্জাতিক একটা সম্মেলন করারও পরিকল্পনা রয়েছে।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এটা স্মরণ করে দিতে হবে যে এই সম্পদ রাখা নৈতিকতাবিরোধী, এটা রাখা ঠিক নয়। এটা যার সম্পদ, যে জনগণের টাকা, তাদের ফেরত দিয়ে দেওয়া উচিত। সেই ব্যাপারে তারা যেন তাদের তৎপরতা দেখায়, এটাই আমাদের আশা।’
পাঠকের মতামত
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের অবৈধ সকল সম্পদ সনাক্ত করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া খুবই জরুরী ।
সচরাচর পশ্চিমা দেশগুলো সম্পদ জব্দ করলে বা মানিলন্ডারিং এর টাকা জব্দ করলে দীর্ঘ মেয়াদে তা আটকে রাখে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগতভাবে জানি বাংলাদেশের EBL bank ( Eastern Bank limited)এর প্রাক্তন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কামাল তালুকদারের নব্বই দশকের শেষের দিকে চুরি করে পাচার করা লাখ খানেক ডলার জেপি মর্গান চেইজ ব্যংক প্রথম ফ্রিজ করে এরপর সম্পূর্ণ ডলার বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংকের তহবিলে জমা করা - কুখ্যাত এই বাংলাদেশি ব্যাংকার মারা যাওয়ার পূরবে পরযনত এই টাকা উদধার করতে পারে নাই।