দূরত্ব কমাতে ফের বৈঠকে বসছে ঐকমত্য কমিশন

রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ও প্রস্তুত করতে চায় কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম দফার বৈঠক শেষে সব দলের উপস্থিতিতে বিষয়ভিত্তিক দ্বিতীয় দফার আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি, সেসব বিষয় নিয়ে মুখোমুখি আলোচনা করলে অবস্থানগত পরিবর্তন ঘটে বলেও মনে করছে কমিশন। সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্ব, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ (উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ), প্রধান বিচারপতি নিয়োগসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে হবে কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠক। রোববার ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৭ই জুন বেলা ১০টা ৩০ মিনিটে (মঙ্গলবার) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আগামী ১৭, ১৮ ও ১৯ই জুন পরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে ঐকমত্য কমিশন।

দ্বিতীয় দফার প্রথম বৈঠকে সংবিধানের চার বিষয়- সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, নিম্নকক্ষে নারী আসন, সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ, তত্ত্বাবধারক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

এর আগে ২রা জুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিতীয় দফার এ বৈঠকের উদ্বোধন করেন। পরদিন দ্বিতীয় দফার প্রথম বৈঠকে সংবিধানের চারটি বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেয় রাজনৈতিক দলগুলো। এসব বিষয়ে মতভিন্নতা থাকলেও অনেকটা কাছাকাছি মতামত দেয় দলগুলো। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল, আস্থাভোট ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন বলে একমত হয় বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক দল। এ ছাড়াও সংসদের স্থায়ী কমিটিতে বিরোধী দল থেকে কতোজন সভাপতি হবেন সে বিষয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয় সেদিনের বৈঠকে। নিম্নকক্ষে নারী আসন ২৫ শতাংশ করার পক্ষে বেশির ভাগ দলই মত দিয়েছে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপক্ষে কারও মত আসেনি। উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২০শে মার্চ থেকে ১৯শে মে পর্যন্ত ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে বৈঠক করে।