যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন। বাইরে থেকে না বোঝা গেলেও বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হতে চলা মানুষটির বাস্তব জীবনে লুক্কায়িত আছে এক বিষাদময় কাহিনী।
ছয়বার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্য থেকে সিনেটর নির্বাচিত হওয়া বাইডেন সর্বপ্রথম সিনেটর নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৭২ সালে। নির্বাচিত হবার কিছুদিন পরই এক গাড়ি দুর্ঘটনায় স্ত্রী নীলিয়া হান্টার এবং এক বছরের শিশুকন্যা নাওমি ক্রিস্টিনাকে হারান বাইডেন। আহত দুই ছেলে বো এবং হান্টারকেও রাখতে হয় হাসপাতালে। বাইডেন তার ছেলের হাসপাতালের বেডের পাশে দাঁড়িয়ে শপথ নিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের ওয়েবসাইটে লেখা আছেঃ
১৯৭২ সালের নভেম্বরে ডেলাওয়ার সিনেটর জোসেফ বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পরপরই একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী এবং শিশু কন্যা প্রাণ হারায় এবং তার দুই ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বাচ্চাদের শয্যাপাশে থাকার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য, সিনেটের সেক্রেটারি ফ্রান্সিস ভ্যালিও নতুন সিনেটর বাইডেনের শপথ নেওয়ার জন্য উইলমিংটনে গিয়েছিলেন, পরবর্তীতে ভ্যালিও এক মৌখিক সাক্ষাৎকারে সেই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানটি স্মরণ করেছিলেন।
সে সময় সিনেটে নির্বাচিত সবচেয়ে কম বয়সীদের মধ্যে একজন বাইডেনের বয়স ছিল ২৯ বছর। তবে শপথের সময় সংবিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ৩০ বছর বয়সে উপনীত হন তিনি।
সন্তান-বাৎসল্যের দিক থেকে কোন ঘাটতি ছিল না বাইডেনের। মাতৃহারা দুই সন্তানকে সময় দেয়ার জন্য রাজধানী ওয়াশিংটনে আবাস গড়েন নি তিনি। বরং ডেলাওয়ারের উইলমিংটনের বাড়ি থেকে প্রতিদিন ট্রেনে চেপে সুদূর (১১১ মাইলের দূরত্বে) ওয়াশিংটন যেতেন।
স্ত্রী এবং শিশুকন্যাকে হারানোর সাড়ে চার বছর পর জিলকে বিয়ে করেন বাইডেন, যিনি হতে যাচ্চেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী ফার্স্ট লেডি।
তাদের সংসারে একমাত্র সন্তান- কন্যা অ্যাশলে।
বাইডেনের জীবনে ট্র্যাজেডি যেনো পরিচিত এক নাম। ৭২ এর ট্র্যাজেডির ৪৩ বছর পর ২০১৫ সালে তার ছেলে বো বাইডেন ব্রেইন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে মারা যান। তখন বাইডেন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। নিউইয়র্ক টাইমস এর এক রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছিল, বো-র ইচ্ছা ছিল তার পিতা বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন। কিন্তু পিতা প্রেসিডেন্ট হবার মাত্র ৫ বছর আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন বো বাইডেন।