পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য বিখ্যাত সিঙ্গাপুর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে বিশ্বে ১০৫ তম অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬১,৩১১ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও ৬০,৮৭৩ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন, মারা গেছেন মাত্র ৩১ জন।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুর সরকার ঘোষণা করেছে- বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের এবং এই দেশগুলোতে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে অবস্থান করেছেন এমন কাউকে আর সিঙ্গাপুরে প্রবেশ বা দেশটির ভেতর দিয়ে যাতায়াতের অনুমতি দেয়া হবে না। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় উক্ত দেশগুলো ভারতের নিকট প্রতিবেশী হওয়ায় এবং দেশগুলোতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া সিঙ্গাপুরেও সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।
সিঙ্গাপুর আরো আগে থেকেই ভারত থেকে আসা যাত্রীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত থেকে আগত যাত্রীদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এখন বিপদে পড়েছে দেশটির শ্রমখাত।
বেশ কয়েকটি সংস্থা সিঙ্গাপুরের ইংরেজী চ্যানেল সিএনএকে বলেছে, যেসব কোম্পানি ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে আসা অভিবাসী শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল ছিল তারা এখন বিকল্প দেশের শ্রমিক খুঁজছে। তবে তারা এটাও বলেছে যে, তারা কেবলই বিকল্প অন্বেষণ করতে শুরু করেছে এবং আপাতত ধরে নিচ্ছে যে প্রকল্পগুলোর কাজ বাধাগ্রস্ত হবে এবং সেগুলো শেষ করতে বিলম্ব হবে।
কোভিড-১৯ আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্ক ফোর্সের সহ-সভাপতি এবং দেশটির শিক্ষামন্ত্রী লরেন্স ওয়াং স্বীকার করেছেন যে এর মাধ্যমে নির্মাণ খাতের মতো শিল্পগুলোতে বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং সিঙ্গাপুরের অনেক ছোট ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ঠিকাদাররা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
২৬ এপ্রিল 'বিল্ডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন অথরিটি' বলেছে যে অন্যান্য সহায়তা ছাড়াও চীন থেকে শ্রমিক আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও নমনীয়তা দেয়া হবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে যে এর মাধ্যমে তাদের ঘাটতি পূরণ হবে না।
নির্মাণ খাতের একজন পরিচালক অ্যালান বলছিলেন, চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে চীনা শ্রমিকরা তাদের নিয়োগের খরচ "বাড়িয়ে দেবে"।
কিন্তু আগে বাংলাদেশি বা ভারতীয় শ্রমিকদের অনেক কম মজুরিতেই পাওয়া যেতো।
আরেকজন মালিক বলছিলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আগে থেকেই দেশটিতে শ্রমিকের ঘাটতি ছিল। এখন সেটা আরো বেড়েছে। চীন থেকে আসা কর্মীরা কিছু শূন্যস্থান পূরণ করতে পারলেও চীনে অর্থনৈতিক সুযোগের উন্নতি হওয়ায় কম সংখ্যক চীনা শ্রমিকই সিঙ্গাপুরে আসতে চাইবে। আমি মনে করি, আমাদের কোনও বিকল্প নেই, আমরা এখনও খুঁজছি।