দুই ছেলের কেউই খাবার না দেয়ায় প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার চেয়ে খেতে হয় ৯০ বছর বয়সী স্বামীহারা ইঙ্গুল বড়ুয়ার। ওষুধ ও খাবার খরচের জন্য তার একমাত্র ভরসা ভাতার টাকা। তবে এই ভাতা নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তিনি। আগে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারলেও নগদে অ্যাকাউন্ট খোলার পর আর টাকা তুলতে পারেননি। সমাজসেবা অফিসে ধরণা দিয়েও কুলকিনারা করতে না পেরে কান্নাকাটি করে বাড়ি ফিরেছেন খালি হাতে। তারমতো ৫০/৬০ জন ভাতাভোগীকে এভাবেই ফিরতে হচ্ছে প্রতিদিন। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলায়। চরপাঁচুড়িয়া গ্রামের ছিয়ারন বেগম নামে এক বয়স্ক ভাতাভোগী বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ।
ছেলেরা খেতে দেয়না। ভাবছিলাম ভাতার টাকা দিয়ে কিছু কিনবো। কিন্তু টাকা তুলতে পারলাম না। এখন সাহায্য চেয়েই খেতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছিয়ারন বেগমের দেয়া মোবাইল নাম্বার ছিল ০১৭৪৭২৩৩৭৬৭। কিন্তু তার টাকা চলে গেছে ০১৮৫৩০৯২৯৩৫ নাম্বারে। টাকা চলে যাওয়া ওই নাম্বারে কয়েকদিন ফোন দিলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। সমাজসেবা অফিস থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ ভাতাভোগীর টাকা অজ্ঞাত নাম্বারে চলে গেছে। এছাড়া অনেক ভাগাভোগী আছে তাদের নাম্বার সঠিক থাকলেও তারা এখনো টাকা পাননি। তারা জানান, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে নগদের মাধ্যমে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই উপজেলায় তার বাস্তবায়ন হয় গত মে মাস থেকে।
জানা যায়, এই উপজেলায় ২০ হাজার ২৮ জন ভাতাভোগীর মধ্যে ১১ হাজার ৩৮ জন পান বয়স্ক ভাতা, ৫ হাজার ৬৩৩ জন পান বিধবা ভাতা ও ৩ হাজার ৩৫৭ জন পান অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা। বিধবা ও প্রতিবন্ধীরা মাসে ৭৫০ টাকা এবং বছরে ৯ হাজার টাকা ভাতা পান। বয়স্করা পান মাসে ৫০০ টাকা করে বছরে ৬ হাজার টাকা।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জয়নুল আবেদীন মানবজমিনকে জানান, মোবাইল নাম্বার দেয়ার কাজ করেছে নগদ সংশ্লিষ্টরা। তবে যাদের মোবাইল নাম্বার ভুল আছে তাদেরগুলো সংশোধন করে দিচ্ছি। এছাড়া টাকা না পাওয়া ভাতাভোগীদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। আশা করছি এর সমাধান হবে।