ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় শিবচর উপজেলার মো. শওকত (২৩) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শওকত বহেরাতলা উত্তর ইউনিয়নের যাদুয়ারচর গ্রামের মো. চান মিয়া হাওলাদারের ছেলে। সে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ত্যাগ করে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে ইতালি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হয় শওকত। চার লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার চুক্তিতে তিনি লিবিয়া পৌঁছান। সেখানে ছয় মাস থাকার পর দুই লাশ পঁচিশ হাজার টাকার চুক্তিতে সমুদ্রপথে ইতালি যেতে শহিদ মাদবর নামের এক ব্যক্তির সাথে চুক্তি হয় শওকতের পরিবারের। গত ৯ জুলাই লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য শওকতসহ অন্যান্য যুবকদের ‘গেম ঘর’ এ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আটকে রেখে বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে আরো ৫ লাখ টাকা নেয় দালাল চক্র।
সেখানে সাত দিন থাকার পর গত ১৭ই জুলাই ট্রলারে করে ইতালি পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সর্বশেষ গত ১৭ তারিখেই শওকতের সাথে পরিবারের কথা হয়। এরপর তার সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরিবারের। গত ২৬ জুলাই সোমবার ‘এম্বাসি অব বাংলাদেশ ইন লিবিয়া’ নামের ফেসবুক পেইজে আইসিইউতে মৃত অবস্থায় শওকতের ছবি পোস্ট করে পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। পরে সেই ছবি দেখে তার পরিবার নিশ্চিত হন ছবিটি মো. শওকতের!
নিহত শওকত সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের অনার্সের ছাত্র ছিলেন। পরিবারের সচ্ছলতার জন্য ইতালি যাবার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় পাড়ি জমান তিনি।
নিহতের পিতা মো. চান মিয়া হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলের ইতালি যাওয়া হলো না। ওকে ইতালি নেয়ার কথা বলে লিবিয়ায় রেখেছিল। সেখান থেকে ইতালি পৌঁছে দেবে। গত সপ্তাহে শেষ বারের মতো আমার ছেলের সাথে কথা হইছে আমাদের। দোয়া চাইছে আমাদের কাছে। এরপর আর যোগাযোগ নাই!’
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন জানান, 'নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি এখনো জানায়নি। তার পরিবার অভিযোগ দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।'