রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, মানব পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিআইডি’র তদন্তে এসবের পেছনে রাজারবাগের কথিত পীর দিল্লুর রহমানের নাম উঠে আসে। হাইকোর্টের নির্দেশনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পক্ষ থেকে হাইকোর্টে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিট আবেদনকারী কাঞ্চনের বিরুদ্ধে চলমান সব মামলার বিচার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সিআইডিকে তদন্ত করার আদেশসহ হাইকোর্টের সেই পুরো আদেশটি স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে সিআইডির প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করতে গেলে আদালত শুনানি না করে সেটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে আদেশ দেন।
এর আগে, হাইকোর্টে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা আপিল বিভাগের আদেশের সার্টিফায়েড কপি দাখিল করেন। আপিল বিভাগের আদেশ দেখে হাইকোর্ট বলেন, যেহেতু আবেদনকারীর বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর বিচার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের ওপর আপিল বিভাগ থেকে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে এই রিট মামলায় অন্য কোনো আদেশ দেয়া সম্ভব নয়।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এমাদুল হক বসির। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও অরবিন্দ কুমার রায়। অন্যদিকে পীরের পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট এম কে রহমান, এডভোকেট ওয়াজি উল্লাহ ও এডভোকেট শেখ ওমর শরীফ। আদেশের পর আইনজীবী শেখ ওমর শরীফ বলেন, ‘নারী নির্যাতন, মানব পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯ মামলার আসামি একরামুল হক কাঞ্চনের দায়ের করা রিট আবেদন হাইকোর্টের কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি মঙ্গলবার আদেশের জন্য উক্ত বেঞ্চের কার্যতালিকার ২ নম্বরে ছিল। আপিল বিভাগে মামলাটির অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়ায় হাইকোর্ট মামলাটিতে আর কোনো আদেশ না দিয়ে কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
ঢাকার শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি, মানব পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় তিনি এক হাজার ৪৬৫ দিন জেলে খেটেছেন। কিন্তু একটি মামলার বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিবেচনায় তিনি অনেক মামলায় খালাস পেয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (এসবি), অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (সিআইডি), র্যাব মহাপরিচালক, ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ ৪০ জনকে বিবাদী করা হয়। গত ১৪ই জুন রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলার বাদীদের খুঁজে বের করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।