সপ্তম ব্যালন ডি’অর জিতে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন লিওলেন মেসি। ৩৪ বছর বয়সী মেসির অর্জনের ঝুলি বেশ ভারী । এতকিছুর পরেও বিন্দুমাত্র অহঙ্কার নেই তার। কথাবার্তায় কী অমায়িক! সম্প্রতি ফ্রান্স ফুটবলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই ফুটবল সুপারস্টার বলেছেন, ‘আমি কখনো সেরা হতে চাইনি। আমি কারো অনুকরণীয় আদর্শ হওয়া কিংবা কাউকে পরামর্শ দেয়াটা পছন্দ করি না। কখনো বলিনি আমি সেরা ফুটবলার।’
মেসির তুলনা চলে পেলে-ম্যারাডোনার সঙ্গে। অনেকেই মনে করেন, ব্যক্তিগত অর্জনে মেসিই সেরা ফুটবলার। তবে আর্জেন্টাইন তারকা কখনোই এমনটা ভাবেন না।
মেসি বলেন, ‘বিশ্বসেরাদের একজন হওয়ার বিষয়টা আমার কাছে অতিরঞ্জন মনে হয়। এমনটা ভাবার কিংবা স্বপ্ন দেখারও সাহস করিনি কখনো! তার মানে এই নয় আমি এসবে আগ্রহী নই। আমি বলতে চাই, এ বিষয়গুলোতে আমি খুব একটা গুরুত্ব দিই না। সেরা হওয়া না হাওয়ায় কিছু যায় আসে না আমার।’
মেসির প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ন্যু ক্যাম্পে নিয়ে এসেছিল বার্সেলোনা। প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি) যোগ দেওয়ার আগে মেসিও দু’হাত ভরে দিয়ে গেছেন কাতালান ক্লাবটিকে। চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগসহ অসংখ্য ট্রফি জিতিয়েছেন। মেসি এগুলো অর্জন করেছেন ধাপে ধাপে। প্রতিদিন উন্নতি করার চেষ্টা করে গেছেন। মেসি বলেন, ‘আমি আমার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে লড়ে গেছি। প্রথমত আমি একজন পেশাদার ফুটবলার হতে চেয়েছিলাম। তারপর নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে এবং প্রতি বছর নতুন লক্ষ্য অর্জন করতে চেয়েছি। ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল। ঈশ্বর চেয়েছিলেন বলেই আমাকে দিয়ে এতকিছু হয়েছে।’
মেসি যে এত বিনয়ী, এই শিক্ষা তিনি পেয়েছেন পরিবার থেকেই। পিএসজি তারকা বলেন, ‘আমি একটা শ্রমজীবী পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমার বাবা সারা দিন কাজ করতেন, আমরা মোটামুটি একটা মধ্যবিত্ত এলাকায় বাস করতাম। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, অভাব খুব একটা ছিল না। মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা আমার মা-বাবাই আমার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, পরিশ্রম করা এবং বিনয়ী থাকাটাও। আমি এসব মূল্যবোধ নিয়েই বড় হয়েছি। ১৩ বছর বয়সে যখন বার্সেলোনায় যোগ দিলাম, লা মাসিয়া একাডেমিতেও আমি এই মূল্যবোধগুলো পেয়েছি।’
সতীর্থদের প্রতি সব সময়ই বিনয়ী মেসি। পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর তাকে ১০ নম্বর জার্সি নিতে বলেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মেসি ‘হ্যাঁ’ বলেননি। কেন বলেননি? মেসি বলেন, ‘বার্সেলোনায় আমরা অনেকদিন কাটিয়েছি আমরা ভালো বন্ধুও। ১০ নম্বর জার্সিটা ওর কাছেই থাকা ভালো।’