× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রবাসীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে কেন?

অনলাইন

এসএম শাফায়েত, দুবাই থেকে
(২ বছর আগে) জানুয়ারি ২৭, ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ায় মূলত মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা। এরমধ্যে বিচ্ছেদ, হতাশা, জীবনের আনন্দ হারিয়ে ফেলা, বিষণ্নতা এবং উদ্বিগ্নতা উল্লেখযোগ্য। আর এগুলোই প্রবাসীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও তাদের আর্থিক সংকট ও পারিবারিক কলহের কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। ঘরে ফিরতে না পারার কষ্ট থেকেও মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। সব মিলিয়ে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থায় আত্মহত্যার প্রধান কারণ।
গত এক বছরে শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতে আত্মহত্যা করেছেন ৮ প্রবাসী। এর মধ্যে আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ৪ জন ও দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে ৪ জনের এনওসি (অনাপত্তি পত্র) ইস্যু হয়।

বাংলাদেশ মিশনগুলো জানায়, এরা অধিকাংশই পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছেন।
তবে প্রবাসীরা বলছেন, হঠাৎ করে দেশের বাইরে আত্মহত্যার এই প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া ভবিষ্যতের জন্য শঙ্কা বাড়াচ্ছে। অথচ দুই বছর আগেও বাংলাদেশ মিশনগুলো বছর শেষে তাদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করলে সেখানে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই কম ছিল।

আবুধাবি দূতাবাসের কাউন্সিলর (স্থানীয়) লুৎফুন নাহার নাজিম বলেন, দূতাবাস থেকে একবছরে আমরা চারজন প্রবাসীর এনওসি ইস্যু করেছি। যাদের আত্মহত্যাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের লেবার কাউন্সিলর ফাতেমা জাহান জানান, গত একবছরে তাদের দেয়া চারজনের এনওসির মধ্যে প্রত্যেকে আমিরাতের বৈধ ভিসাধারী এবং প্রত্যেকেই বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। এদের একজন ময়মনসিংহ, একজন মুন্সীগঞ্জ এবং বাকি দুইজনের বাড়ি গাজীপুর ও কুমিল্লায়। এরা পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে।

বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতির কারণে পৃথিবীব্যাপী যে কাজের সংকট, তাতে প্রবাসীদের আর্থিক ও মনস্তাত্ত্বিক অস্থিরতা বেড়েছে অনেকখানি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারিবারিক অসহযোগিতার কারণেও এই প্রবণতা বাড়ছে।
এ প্রসঙ্গে দুবাই কমিউনিটির নেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, করোনাকালীন সময় ইচ্ছে করলেও স্বল্প আয়ের প্রবাসীরা দেশে যেতে পারছেন না। প্রবাসে থেকে অর্জিত সম্পদ কিংবা পরিবার-পরিজনকে দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে বিমান টিকিটের চড়া মূল্য তাদের হতাশ করছে। এসব বিষয়ে মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। যেকারণে হয়তো আত্মহত্যার পথে যাচ্ছেন তারা।

আবুধাবি প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী নাসির জসি বলেন, খুব বেশি মনস্তাত্ত্বিকভাবে ভেঙে পড়া প্রবাসীদের সমস্যা মোকাবিলা ও সহযোগিতার উদ্দেশ্যে দূতাবাসে কন্সালটেন্সি ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা দরকার। তাতে আত্মহত্যার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে। সংকটকালীন সময়ে পারিবারিক সহযোগিতা প্রবাসীদের মনোবল বাড়াতে পারে। প্রান্তিক প্রবাসীদের সঙ্গে অপেক্ষাকৃত ভাল অবস্থানে থাকা প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তৈরি করা গেলেও সচেতনতা বাড়বে।

দেশে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ ও তাদের সহযোগিতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে আমিরাত প্রবাসী ডাক্তার ইলমি রহমান বলেন, করোনার শুরু দিকের পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা একটু কোণঠাসা হয়ে থাকলেও এখন ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। তবে আর্থিক ও মানসিক চাপ প্রবাসীদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়। দেশে পরিবার পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ ও তাদের সহযোগিতা বাড়লে এই প্রবণতা শূন্যে নামিয়ে আনা যাবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
Professor Dr, Mohamm
২৮ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার, ১০:১১

স্বল্প আয়ের প্রবাসীরা দেশে যেতে না পারার কারনে প্রবাসী শ্রমিক বিদেশের মাটিতে আত্মঘাতী হচ্ছেন; এক এক ধরনের সরল সমীকরণ এবং বড়ই দুঃখজনক। জীবন জীবিকার তাগিদে বহু ঘাটের পানি খাওয়ার অভিজ্ঞতায়; প্রবাসে স্ত্রী পরিজন ছাড়া বাস করা দুঃসাধ্য ব্যাপার । আর প্রবাস কখনই সুখের হতে পারে না । এমতবস্থায়, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের দেশে চলাচল নির্বিঘ্ন করা জরুরি । অধিকন্তু, আমাদের জানা দরকার, বিদেশে যেতে এই সমস্ত ভাগ্য বিড়ম্বিতরা কত টাকা সুদে ধার নিয়েছেন যা তাদের আত্মঘাতী হওয়ার অনুঘটক হচ্ছে কি না তারও আশু সমাধান প্রয়োজন । তবে, জরুরি ভিত্তিতে, নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের দেশে আসার ব্যাপারে বিমান ভ্রমন কর রহিত করে তাদের একটু সাহায্য করতে পারে ।

অন্যান্য খবর