অনলাইন
জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা নিয়ে গুজব না ছড়ানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
স্টাফ রিপোর্টার
(১ সপ্তাহ আগে) ৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৫:৪৪ অপরাহ্ন
ভোলায় জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা নেয়ার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া বা অসুস্থ হওয়ার যে খবর ছড়িয়েছে, তার সঙ্গে এইচপিভি টিকার কোনো সংশ্লিষ্টরা নেই। এ বিষয়ে গুজব না ছড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার রাজধানীর মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এইচপিভি টিকা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু জাফর এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি শুরু করেছে সরকার। এ কর্মসূচি ঘিরে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় টিকা দেয়ার সময় আতঙ্কে কিছু শিক্ষার্থী জ্ঞান হারান। এ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে নানা গুজব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) এবার সাত বিভাগে ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৯ জনকে এইচপিভি ভ্যাকসিন দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে স্কুলে ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯১৮ জন শিক্ষার্থীকে এ টিকা দেয়া হবে। ৩৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৮ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদের মধ্যে টিকা নিয়েছে ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৩২৬ জন।
তিনি বলেন, ১৮ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭১ জনের সাধারণ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, এর পয়েন্ট দশমিক ১৪ শতাংশ। টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে যা একেবারেই নগন্য। শতকরা ৪ থেকে ৫ জন আক্রান্ত হলে তখন সেটিকে সরাসরি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ধরে নেয়া হয়।
ভোলার ঘটনা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সেখানে দুজন শিক্ষার্থীকে প্রথমে টিকা দেয়া হয়। টিকা নেয়ার পর কিছুটা অসুস্থ অনুভব করলে তাদের একটি কক্ষে নিয়ে শুইয়ে দেয়া হয়। এ অবস্থা দেখে সেখানকার অন্য শিক্ষার্থীরাও জ্ঞান হারায়। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়নি। তাই প্রাথমিকভাবে এটিকে মানসিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সাধারণত এইচপিভি টিকা দিলে জ্বর, শরীর ব্যথার মতো কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক ক্ষেত্রে এসব উপসর্গ দেখা না দিলে শরীরে টিকা কার্যকর হয়েছে কি না, সেটাও বোঝা যায় না বলে জানান স্বাস্থ্যের ডিজি।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা বলেন, অত্যন্ত নিরাপদ এইচপিভি টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। সারভাইকাল ক্যান্সার প্রতিরোধে এই টিকা অত্যন্ত কার্যকর এবং নিরাপদ। গ্লোবাল অ্যাডভাইজারি কমিটি অন ভ্যাকসিন সেফটি (জিএসিভিএস) তথ্য বিশ্লেষণ করে মতামত দিয়েছে যে, এইচপিভি টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের কোনো সম্পর্ক নেই।
জিএসিভিএস জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ৯টি আর্টিকেল পেপার, রোগ নিরীক্ষণ কর্মসূচির রিপোর্ট এবং রোগতাত্ত্বিক তথ্য বিশ্লেষণ করে টিকার কার্যকারিতা এবং গুণগত মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে। ডেনমার্ক, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে গবেষণা করে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এইচপিভি টিকার সঙ্গে গুরুতর কোনো বিরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক নেই। গর্ভাবস্থায় এইচপিভি টিকাদানের সঙ্গে জন্ম নেওয়া শিশুর উপরে কোনো বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি বলেও গবেষণায় উঠে আসে।
পতিত স্বৈরাচারের মিডিয়া উইং ধ্বংস করে দেন। গুজব সহ অনেক বিশৃংখলা সহজে বন্ধ হয়ে যাবে।