খেলা
যে সুখ স্মৃতি নিয়ে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়ার বাসনা
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ আসরে সেমিফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। এবার কী লক্ষ্য! অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অকপটে জানিয়ে দিলেন ‘চ্যাম্পিয়ন’- হতে যাচ্ছি। সুখ স্মৃতি বলতে শেষ আসরের সফল্য। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ দিবাগত রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে বাংলাদেশ। সেখানে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ আর অনুশীলন শেষে ২০শে ফেব্রুয়ারি প্রথম ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। সেখান থেকে পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে আরও দুই ম্যাচ। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্বের অন্যতম সেরা তিন দলকে হারাতে পারলে সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না শিরোপা সমীকরণ কতটা কঠিন। তবে টাইগার অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন শুধু বলার জন্য বলা নয়, তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্যতা রাখেন তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যাচ্ছি। এখানে যে আটটা দল আছে, সবাই ডিজার্ভ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এই আটটা কোয়ালিটি টিম। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দলের এই সক্ষমতা আছে। বাড়তি চাপের কথা, আমার মনে হয় না কেউ বাড়তি চাপ অনুভব করে। কারণ সবাই এটাই চাচ্ছে, সবাই এটাই চায় মনেপ্রাণে, সবাই এটাই বিশ্বাস করে আমাদের ওই সক্ষমতা আছে। আমাদের রিজিকে আল্লাহ্ কী লিখে রেখেছেন আমরা জানি না।’ ২০১৭ সালের সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এটাই দলটির সেরা অর্জন। তবে এবার এসব কিছু ছাপিয়ে নতুন ইতিহাস লিখতে চান নাজমুল হোসেন শান্ত। আর এই আসরে অনুপ্রেরণা পুরনোর সেই সাফল্য। তিনি বলেন, ‘সবশেষ আসরে আমরা সেমিফাইনাল খেলেছিলাম। এবার সেটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হবে।’ এমনিতে আইসিসি বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একবার সেমিফাইনাল খেললেও সেখানে ভূমিকা ছিল বৃষ্টির। এর বাইরে ওয়ানডে বিশ্বকাপে কখনই তিনটার বেশি ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। আইসিসি’র বাইরে এশিয়া কাপেও কখনো শিরোপা জেতা হয়নি লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এবার বড় লক্ষ্য নিয়ে রক্ষণশীল ভঙ্গিতে জবাব দিতে অধিনায়ক। শান্ত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমরা ওইভাবে মেহনত করছি, আমাদের সততার সঙ্গে কাজ করছি। এবং প্রতিটা খেলোয়াড় বিশ্বাস করি আমাদের যে লক্ষ্য, ওই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।’ আগামী ২০শে ফেব্রুয়ারি দুবাইতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অভিযান। ‘এ’ গ্রুপে এরপর রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আছে বাকি দুই ম্যাচ। সেমিফাইনালে যেতে হলে থাকতে হবে সেরা দুইয়ে। তবে তার আগে দলের জন্য প্রস্তুতি ঘাটতি অন্যতম আলোচনার বিষয়। ওয়ানডের এই আসরে আগে কোনো ৫০ ওভারের ম্যাচই খেলেনি বাংলাদেশ দল। যা নিয়ে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সও কিছুটা শঙ্কাতে। তবে শান্ত বিশ্বান করেন প্রস্তুতি নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ‘কোচ এমন কিছু মিন করেছেন- মনে হয় না। ফরম্যাট অনুযায়ী একটু তো ভিন্নতা আছেই। তবে যেভাবে ব্যাটাররা খেলেছে, উইকেট ভালো ছিল, যে কন্ডিশনে খেলবো এর চেয়ে হয়তো ভালো উইকেট থাকবে। প্রস্তুতি ভালো নিয়েছে ব্যাটাররা, লম্বা সময় খেলা জরুরি। ৫০-৬০ রানকে ১০০-১২০ করতে হবে। ম্যাচ সিনারিও প্র্যাকটিস হচ্ছে। প্রস্তুতির দিক দিয়ে ভালো অবস্থানে আছি। হাতে আরও ৬-৭ দিন আছে, এই সময়ে আমরা আরও গুছিয়ে নিতে পারবো।’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলে ওপেনার লিটন দাস না থাকলেও আছেন দুই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যাদের নিয়ে দারুণ বিশ্বাস অধিনায়ক শান্তর। তিনি বলেন, ‘দুজনই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও খেলেছে। তাদের অভিজ্ঞতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অধিনায়ক হিসেবে নির্দিষ্ট কারও ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না। দল হিসেবে যেন খেলতে পারি। যেই খেলবে দায়িত্ব নিয়ে খেলে যেন দলকে জেতাতে পারে। রিয়াদ ভাই মুশফিক ভাইর অভিজ্ঞতা যেন সবাইকে দেয়, তাদের ভাবনা যেন মাঠের ভেতর শেয়ার করে।’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বড় চ্যালেঞ্জ হবে উইকেট। যা মানছেন শান্ত নিজেও। তবে তার জন্য প্রন্তুত বলে জানান তিনি। টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘এ ধরনের টুর্নামেন্টে চ্যালেঞ্জ, বাড়তি চাপ থাকবেই। আমি পাকিস্তানে আশা করছি ৩০০+ উইকেট হবে। এ ধরনের স্কোর করতে হবে আগে ব্যাট করলে। ডিফেন্ড করার ক্ষেত্রেও এমন রান ডিফেন্ড করা লাগবে। দুবাইতে একেক সময় একেক রকম হয়। তাও আমার মনে হয় ২৬০-২৮০ এর ভেতরেই থাকবে। এভাবে সংখ্যা অনুমান করা কঠিন, তবে অতীত দেখলে এমনই থাকে। নির্দিষ্ট দিনে কত রান করা দরকার বা কত রানে আটকানো দরকার এসব এনালাইসিস করবো।’