অনলাইন
সহযোগীদের খবর
বিএনপিতে হচ্ছেন তিন মহাসচিব
অনলাইন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৯ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ প্রতিদিন
‘বিএনপিতে হচ্ছেন তিন মহাসচিব’-এটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিতে মহাসচিব হবেন তিনজন। একজন হবেন সাংগঠনিক বিষয়ক মহাসচিব, আরেকজন আন্তর্জাতিক বিষয়ক মহাসচিব এবং অন্যজন দায়িত্ব পালন করবেন প্রশাসনিক বিষয়ক মহাসচিব হিসেবে। দলের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে কিংবা চেয়ারপারসনের গঠনতান্ত্রিক ক্ষমতা বলে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে মহাসচিবদের। এ ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কাঠামোতে আরও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। যুক্ত হতে পারে কো-চেয়ারম্যান পদ। তবে এটি শুধু দলের জাতীয় সম্মেলন/জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমেই হতে পারে। এসব বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দলীয় হাইকমান্ড তারেক রহমান সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, জনগণের ভোটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হলে-নির্বাচন পরবর্তী সরকার গঠন প্রক্রিয়ার বিষয় নিয়েও আলাপ-আলোচনা ও কার্যক্রম চলছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত নির্বাচনোত্তর ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর নেতাদের কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে-সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছে। কাকে কোথায় মনোনয়নে ছাড় দেওয়া হবে, কিংবা কাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হতে পারে- এসব বিষয় নিয়েও কার্যক্রম চলছে।
এ ছাড়া দলের ভিতরে কারা মনোনয়ন পাবেন এবং কারা মন্ত্রিত্ব পাবেন অথবা কারা কোন অবস্থানে থাকবেন- সেসব নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট নেতাদের নিজ নিজ পারফরম্যান্সের ওপর। দলের সব নেতার আমলনামা ইতোমধ্যে হাইকমান্ডের কাছে জমা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু উচ্চপর্যায়ের নেতার নাম চাঁদাবাজির অভিযোগের খাতায় যুক্ত হয়েছে। তাদের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তাছাড়া যারা বিগত হাসিনা সরকারের সঙ্গে আঁতাত এবং নিজ দলের সঙ্গে বেইমানি করেছিলেন সেসব তথ্যও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ ধরনের নেতারা কোনো অবস্থাতেই এবার মনোনয়ন পাবেন না। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ‘খালিদ-পলক বা আরাফাতের’ মতো চাটুকার প্রকৃতির লোকদের মন্ত্রী বানানো দূরের কথা, এমপি পদে মনোনয়নও দেবে না বিএনপি। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। ফলে আগামী সংসদ নির্বাচনের বিএনপির মনোনয়নে নতুন মুখের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
ত্যাগী নেতাদের বড় পদে নিয়োগ দিয়ে মূল্যায়ন: দলের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মহানগর, জেলা ও উপজেলাসহ বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি পুনর্গঠনের পাশাপাশি ত্যাগী নেতাদের দলের বড় বড় পদে নিয়োগ দিয়ে মূল্যায়ন করা শুরু করেছেন তারেক রহমান। দলীয় গঠনতন্ত্র ও চেয়ারপারসনের ক্ষমতাবলে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাসহ নির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। অতি সম্প্রতি যশোর জেলা বিএনপির সদ্য বিদায়ি আহ্বায়ক এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মরহুম তরিকুল ইসলামের স্ত্রী অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ২০ মে যশোর গঠিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক হন অধ্যাপক নার্গিস বেগম। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে দলের দুর্দিনে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। তারা জানিয়েছেন, কঠিন সময়ে দলকে ধরে রাখার পুরস্কার হিসেবে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক নার্গিস বেগম। একই সঙ্গে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজি আমিনুর রশীদ ইয়াসিনকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এ ধরনের আরও বেশ কজন ত্যাগী নেতাকে বড় পদে নিয়োগ দিয়ে মূল্যায়ন করা হতে পারে।
তরুণ নেতাদের প্রাধান্য : সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কমিটি গঠনের সর্বস্তরে তরুণ নেতাদের প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি। জাতীয় স্থায়ী কমিটি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি থেকে শুরু করে বিভাগ, জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যন্ত সর্বত্রই সাংগঠনিক ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা। বেশি চমক দেখা যাচ্ছে এবার জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে। ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাদেরই এসব কমিটিতে বেশি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের ওপর নতুন নতুন দায়িত্ব বণ্টন করে দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে। আগামী জাতীয় কাউন্সিলে এর প্রতিফলন আরও বেশি দেখা যাবে বলে দলের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। তাছাড়া তারেক রহমান তনয়া ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও সরাসরি যুক্ত হতে পারেন বিএনপি রাজনীতিতে। দায়িত্ব পেতে পারেন সাংগঠনিক কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে। ইতোমধ্যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ব্রেকফাস্ট প্রেয়ার’ এ অংশ নিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি হিসেবে।
জানা যায়, বিগত দেড় যুগ ধরে বিদেশে (লন্ডনে) থেকে নেতৃত্ব প্রদানের কারণে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বেশির ভাগ নেতাই এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত। কোন নেতার কী অবস্থা সেসব এখন তাঁর নখদর্পণে। ফলে কাকে কী দায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন সেসব বিষয়ে সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন তিনি। তাছাড়া তরুণ নেতাদের ওপর যথেষ্ট আস্থাও রাখছেন তিনি। বাস্তবতা ও বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে অপেক্ষাকৃত তরুণদের নেতৃত্বে আনছেন তিনি। এক্ষেত্রে মেধা, পরিশ্রম ও ত্যাগকে বিবেচনায় রেখে গঠন করা হচ্ছে দলের বিভিন্ন স্তরের কমিটি। তরুণ নেতৃত্বে আস্থা রেখে দলীয় কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক করেছেন দলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হককে। একইভাবে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক করেছেন রফিকুল আলম মজনুকে। কর্মিসভা, কর্মশালা, কিংবা সভাসমাবেশের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী ও চাঙা রাখতে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে। এসব বিষয়ে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নতুনদের স্থান করে দেওয়াটাই পুরোনোদের কর্তব্য। নতুন-পুরোনোর সমন্বয়েই কমিটি দিচ্ছে বিএনপি। পুরোনোদের অভিজ্ঞতা আর নতুনদের শ্রম দুটো মিলেই দল ও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এজন্যে পুরোনোদের অভিজ্ঞতার আলোকে নতুনদের কাজকর্ম এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তরুণদের নেতৃত্বে আসার পথ উন্মুক্ত থাকতে হবে। তাদের সুযোগসুবিধা বাড়াতে হবে। তরুণদের মধ্যে যারা দক্ষ, যোগ্য এবং আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এসেছে তারা ইতোমধ্যে নিজেদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। এ কারণে তরুণ নেতাদের জন্য সুযোগটা আরও বাড়ানো উচিত। বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বিএনপি আজ একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী দলে পরিণত হয়েছে। তিনি দলকে সুসংহত করার পাশাপাশি দলের ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন করছেন। নতুন ও পুরোনোর সমন্বয়ে আগামীতে বিএনপির একটি দৃঢ় ও শক্তিশালী নেতৃত্ব তৈরি করতে তিনি বদ্ধ পরিকর।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘একেকটি ট্রেন ধুতে ব্যয় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন ধোয়ার জন্য ৩৮ কোটি টাকায় দুটি স্বয়ংক্রিয় ধৌতকরণ ব্যবস্থা বা ওয়াশিং প্ল্যান্ট কিনেছিল। একটি স্থাপন করা হয় ঢাকার কমলাপুরে, অন্যটি রাজশাহীতে। ২০ মাসের মাথায় প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ হয়ে যায়।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, দুটি প্ল্যান্ট দিয়ে ২ হাজার ৯২৯ বার ট্রেন ধোয়া সম্ভব হয়েছিল। হিসাব করে দেখা যায়, প্ল্যান্ট দুটি স্থাপনে যে ব্যয় হয়েছে, তাতে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রচলিত ব্যবস্থায় হাতে ট্রেন ধুতে খরচ হয় ১ হাজার টাকার মতো।
ওয়াশিং প্ল্যান্ট নামে যে ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তাতে মূলত কিছু স্বয়ংক্রিয় ব্রাশ, সাবানপানি ও সাধারণ পানি ছিটানোর ব্যবস্থা এবং কয়েকটি বৈদ্যুতিক পাখা ছিল। সাধারণ এই ব্যবস্থা তৈরিতে এত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক দিন ধরে প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ। সেগুলো পুনরায় চালু করতে আরও বিনিয়োগ দরকার, যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।
প্ল্যান্ট দুটি চালানো হতো বিদ্যুতের সাহায্যে। ট্রেন ধোয়ার কাজে পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হতো। এর পরিচালনায় থাকা লোকবলসহ সব খরচ ধরলে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। রেলওয়ে সব সময় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে ট্রেন ধোয়ার কাজ করে থাকে। শ্রমিক, পানির ব্যবহারসহ সামগ্রিকভাবে একটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে এক হাজার টাকাও খরচ হয় না। অন্যদিকে ওয়াশিং প্ল্যান্ট দুটি কেনা হয়েছিল কোচ কেনার একটি প্রকল্পের আওতায়। রেলের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার মত, শুধু প্রকল্প বড় করার জন্যই এই যন্ত্র কেনা হয়েছিল। রেলের কিছু কর্মকর্তা এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর আগ্রহে যন্ত্র দুটি কেনা হয়।
চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী দুই মেয়াদে রেলপথ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ওয়াশিং প্ল্যান্ট সরবরাহে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ প্রতিনিধির পক্ষে ফজলে করিম কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফজলে করিম চৌধুরী এখন কারাগারে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে রেলের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এক লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ করা হয়েছে। এর বেশির ভাগই বিদেশি ঋণ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময় রেলের বার্ষিক লোকসান ছিল ৬৯১ কোটি টাকা। এরপরই নতুন রেললাইন নির্মাণসহ নানা প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ শুরু করে সরকার। বাড়ানো হয় ভাড়া। এরপরও বাড়তে থাকে লোকসান। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। লোকসান ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক টাকা আয় করতে রেল দুই টাকার মতো ব্যয় করছে।
ওয়াশিং প্ল্যান্ট দেখতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ
ওয়াশিং প্ল্যান্ট দুটির যন্ত্রপাতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হয়েছিল। এই যন্ত্রের কার্যকারিতা দেখতে ২০১৯ সালে তিনজন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। এর মধ্যে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি রোলিং স্টক) সৈয়দ ফারুক আহমেদ যন্ত্র কেনার কিছুদিন পরই অবসরে যান। প্রকল্প পরিচালক ফকির মো. মহিউদ্দিন এখনো রেলে কর্মরত। তিনি এখন ২০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন ও ১৫০টি মিটারগেজ কোচ কেনার প্রকল্পের পরিচালক। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ফকির মো. মহিউদ্দিন রেলওয়েতে বৈষম্যবিরোধী ফোরাম প্রতিষ্ঠা করে এর মুখ্য সমন্বয়ক হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করা আরেকজন হচ্ছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উপসচিব মাহাবুবুল হক।
রেলওয়েতে রক্ষিত দুটি ওয়াশিং প্ল্যান্ট পরিচালনা–সংক্রান্ত তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের নভেম্বরে ওয়াশিং প্ল্যান্টগুলো ঘটা করে উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ঢাকার প্ল্যান্টটি ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত মোটামুটি চালু ছিল। এরপরই সমস্যা শুরু হয়। গত বছর মে মাসে মাত্র দুটি ট্রেন ধোয়া হয়। এরপর এর কোনো ব্যবহার হচ্ছে না।
রাজশাহীর প্ল্যান্টটি গত বছর এপ্রিল পর্যন্ত চালু ছিল। এ সময় মাসে গড়ে ৮টি ট্রেন ধোয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ঢাকার প্ল্যান্টটিতে ২ হাজার ৬৮৯টি এবং রাজশাহীর প্ল্যান্টে ২৪০টি ট্রেন ধোয়া হয়। দুই প্ল্যান্টে ধোয়া কোচের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৯৬২টি। অর্থাৎ প্রতিটি কোচ বা কামরা ধোয়ার পেছনে গড়ে ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ১২৪ টাকা।
কমলাপুরে গত বুধবার গিয়ে দেখা যায়, ওয়াশিং প্ল্যান্টটিতে ধুলা পড়ে গেছে। ওয়াশিং প্ল্যান্টে প্রবেশের মুখে অন্য ট্রেন রেখে দেওয়া হয়েছে। এখানে আর কোনো কর্মকাণ্ড হয় না। পাশের সারি সারি লাইনে পুরোনো পদ্ধতিতে শ্রমিকদের ট্রেন ধোয়ার কাজ করতে দেখা গেছে।
ট্রেন ধোয়ার কাজে যুক্ত একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, যত দিন ওয়াশিং প্ল্যান্ট চালু ছিল, সেখানে ট্রেন ধোয়ার পর পুনরায় শ্রমিকদের পরিষ্কার করতে হতো। কারণ, ওয়াশিং প্ল্যান্টে ট্রেনের ভেতরে পরিষ্কার করা হতো না। শুধু বাইরের অংশ ধোয়া হতো। যন্ত্র দিয়ে ট্রেন ধোয়ার পরে পানের পিক, চুইংগামসহ কোচের গায়ে লেগে থাকা অন্যান্য দাগ ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে হতো। ট্রেনের ভেতর ও শৌচাগারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হয় পুরোনো পদ্ধতিতেই।
যুগান্তর
‘সংস্কার উদ্যোগের পাশে থাকবে জাতিসংঘ’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বৃহত্তর গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে জনগণ। এর আমরা স্বীকৃতি দিচ্ছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা। জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, পারস্পরিক বিশ্বাস ও স্থিরতা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ জাতিসংঘকে বিশ্বস্ত অংশীদার হিসাবে পাশে পাবে। বাংলাদেশে চার দিনের সফরের তৃতীয় দিনে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এসব কথা বলেন। এ সময়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের প্রতি তার সর্বাত্মক সহায়তা থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এই সফর সরকার এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের কঠিন সময়ে গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের প্রচেষ্টার পাশে দাঁড়িয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে যা যা করা সম্ভব সব তিনি করবেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ইফতার ও ডিনারে অংশ নেন তিনি। এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সরকারের শীর্ষস্থানীয় আমলারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তিনি রাজনৈতিক দলের নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন গুতেরেস।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর ‘সড়কপথে গণপরিবহনে ঈদ যাত্রা ঘিরে আতঙ্ক’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদ যাত্রায় সড়কপথে গণপরিবহন চালাতে ডাকাতির ভয়ে আতঙ্কে আছেন বাস মালিকরা। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বিশেষ করে রাতে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির আশঙ্কা বেশি। দূরপাল্লার বাস মালিকরা বলছেন, ছদ্মবেশে ডাকাতরা যাত্রী হয়ে বাসে উঠে সুযোগ মতো স্থানে চালক ও যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে।
এসব ঘটনায় দূরপাল্লার বাসযাত্রীদের নিরাপত্তা যেমন হুমকিতে, তেমনি মালিকরাও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। গবেষণা ও সচেতনতামূলক প্রতিষ্ঠান সেভ দ্য রোডের তথ্য মতে, গত আট মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে চার হাজার ৫০৫টি ছিনতাই এবং ২৫৫টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু সড়কপথে এক হাজার ৮৬৮টি ছিনতাই আর ১১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৬৮ জন।
এ ছাড়া ফুটপাত বা চলার পথে দুই ৪৩২টি ছিনতাই ও ৩৫টি ডাকাতির ঘটনায় এক হাজার ১৭ জন আহত এবং একজন নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির মহাসচিব শান্তা ফারজানা বলেন, ‘আসন্ন ঈদ যাত্রা ঘিরে এবার শহরের মানুষদের গ্রামের বাড়ি যাওয়ার বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই ঝুঁকি দূর করতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে প্রতি তিন কিলোমিটার পর পর পুলিশ বুথ বা ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা জরুরি। সড়কে টহল পুলিশ বাড়ানোর পাশাপাশি চিহ্নিত বিশেষ বিশেষ স্থানগুলোয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নজরদারি আরো বাড়াতে হবে।
সমকাল
‘দলগুলোর নানা মত, গুতেরেস চান ঐক্য’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছে রাজনৈতিক দলগুলো। সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, টেকসই গণতন্ত্র এবং সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এনসিপির চাওয়া গণপরিষদের সংবিধান সংস্কার। সংস্কার কমিশনগুলো বৈঠকে সংস্কারের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার প্রয়োজনীয়। জাতিসংঘ এতে পাশে থাকবে।
সংস্কার কীভাবে, কতটুকু হবে, তা জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত হয়ে করতে হবে।’ পর্তুগালের উদাহরণ দিয়ে তিনি আশাবাদ জানিয়েছেন, জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো মিলে এই পথ পাড়ি দিতে পারবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়ের আয়োজনে বৈশ্বিক সংস্থাটির মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে সাতটি দল অংশ নেয়। রাজনৈতিক নেতারাও বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে নিজ নিজ দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
বৈঠকে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ; জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার; নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান আসাদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘তাপপ্রবাহের ভয়ংকর এপ্রিল, মোকাবিলায় প্রস্তুতি কতটা?’। খবরে বলা হয়, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভয়ংকর হিসেবে সামনে আসছে এপ্রিল মাস। গেল বছর মাসটিতে তাপমাত্রা ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছিল। এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত টানা ৩৫ দিনের তাপপ্রবাহ ছিল স্মরণকালের ইতিহাসে বিরল। বছর ঘুরে আবারও আসছে সেই ভয়ংকর এপ্রিল। ইতিমধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বইয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলমান তাপপ্রবাহ সারা দেশে বিস্তার লাভ করতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, প্রতি বছরই আগের বছরের রেকর্ড ভাঙছে এপ্রিলের তাপমাত্রা। তবে চলতি বছর মাসব্যাপী টানা তাপপ্রবাহের আশঙ্কা কম থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বরাবরের মতো বেশি থাকবে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক ইত্তেফাককে বলেন, অতীতের রেকর্ড অনুযায়ী প্রতি বছর টানা তাপপ্রবাহ দেখা যায় না। যে কারণে এবার বজ্রঝড়ের সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে আগের বছরের মতো চরম পরিস্থিতি দেখা না গেলেও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে।
তবে আসছে এপ্রিলের ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৃক্ষ রোপণের দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে আগাম কোনো প্রস্তুতি না থাকলেও সিটি করপোরেশন থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ইত্তেফাককে জানিয়েছেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ইত্তেফাককে বলেন, শুধু বর্ষাকালের জন্যই বৃক্ষ রোপণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এপ্রিলের পরিস্থিতির প্রভাব কমাতে এখন অবধি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
নয়া দিগন্ত
‘সংলাপে সহায়তা দিতে প্রস্তুত জাতিসঙ্ঘ’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ সংস্কার ও রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত করছে মন্তব্য করে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উন্নত ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টার সমর্থনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভূমিকা রাখতে হবে।
আমি নিশ্চিয়তা দিচ্ছি যে, জাতীয় সংলাপে আস্থা, শান্তি ও ক্ষত পূরণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসঙ্ঘ প্রস্তুত থাকবে। সবার জন্য একটি টেকসই ও বৈষম্যহীন ভবিষ্যৎ গঠনে জাতিসঙ্ঘ বাংলাদেশের জনগণের অবিচল অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাবে।
গতকাল দিনব্যাপী ব্যস্ত কর্মসূচি শেষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। সকালে গুলশানে নতুন ‘জাতিসঙ্ঘ অভিন্ন প্রাঙ্গণ’ পরিদর্শনের মাধ্যমে তৃতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু করেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এরপর তিনি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সংস্কার কমিশনের প্রধানদের সাথে মতবিনিময় করেন।
একই স্থানে তিনি যুব সম্প্রদায় ও নাগরিক সমাজের সাথে বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় তার সম্মানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া ইফতার ও নৈশভোজে যোগ দেন।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘হিমাগারের আকস্মিক ভাড়া বৃদ্ধিতেই দাম পড়েছে কৃষিপণ্যের’। খবরে বলা হয়, কৃষক পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি টমেটো উৎপাদনে তাদের ব্যয় হয় ১২-১৩ টাকা। আর পণ্যটি রাজধানীর বাইরে বিক্রি হচ্ছে স্থান ও মানভেদে প্রতি কেজি ৮ থেকে ১৮ টাকায়। পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যয় কেজিতে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। কোনো কোনো স্থানে তা ৩৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
এসব কৃষিপণ্যের দাম উৎপাদন ব্যয়ের নিচে নেমে আসার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা দায়ী করছেন আকস্মিকভাবে হিমাগারের ভাড়া বেড়ে যাওয়াকে। তাদের ভাষ্যমতে, গত মৌসুমে আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এবার দেশে আলুর আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি জমিতে। উৎপাদনও ১ কোটি ২০ লাখ টন ছাড়ানোর আশা করা হচ্ছে। যদিও কৃষক পর্যায়ে আলুর উৎপাদন খরচও উঠছে না এখন। কৃষি খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত হিমাগার ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়ায় আলু সংরক্ষণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
তাই ছয় মাস বাড়তি ভাড়া দিয়ে আলু সংরক্ষণের ঝুঁকি না নিয়ে মাঠেই কম দামে আলু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এতে ভরা মৌসুমে আলুর দাম খুচরা বাজারে কেজিতে ২০ টাকার নিচে নেমে এলেও মৌসুম শেষে বাজার চড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার অভাবে একই অবস্থা পেঁয়াজ ও টমেটোর বাজারেও।
আজকের পত্রিকা
‘ঈদের পর দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনীতির নানা চলমান আলোচনার মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টিও আছে। চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়া খালেদা জিয়ার অপেক্ষায় আছেন দলের নেতা-কর্মীরাও। তবে তাঁর দেশে ফেরার ব্যাপারে এখনো সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারছেন না কেউ। খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টি চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান বিএনপির চেয়ারপারসন। সেখানে তাঁকে নামী হাসপাতাল লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। গত ২৪ জানুয়ারি সেখান থেকে বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা যেদিন উপযুক্ত মনে করবেন, সেদিন বিএনপির চেয়ারপারসন দেশে ফিরবেন।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে এই চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন। ঘরের ভেতরে তিনি নিজে নিজে হাঁটাচলা করছেন। নিজ হাতে খাবারও খাচ্ছেন।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘সংস্কার নির্বাচন গণতন্ত্রে প্রাধান্য’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাতীয় ঐকমত্য ও রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করেছেন। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা সংস্কার, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গতকাল শনিবার এ বৈঠকে সাতটি রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। একাধিক উপদেষ্টার পাশাপাশি ছিলেন সংস্কার কমিশনপ্রধানরাও।
বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সংস্কার অবশ্যই করতে হবে, তবে তা দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সংসদে বাকি বিষয়গুলোর সমাধান সম্ভব।’
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘UN stands ready to aid reforms, transition’ অর্থাৎ ‘সংস্কার ও ক্ষমতা হস্তান্তরে সহায়তা করতে প্রস্তুত জাতিসংঘ’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা ও নিরাময়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে জাতিসংঘ।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সবার জন্য একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সহায়তায় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কাজ করার জন্য জাতিসংঘের ওপর আস্থা রাখতে পারেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ অর্জনে বাংলাদেশের কর্মকাণ্ডের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে।
পাঠকের মতামত
শেখ হাসিনাও ঐক্যমতের সরকার চেয়েছিল। সবার নেতা হওয়ার খায়েশ ছিল তার। পরিবারতন্ত্রের অটো নেতা তারেক রহমানও সে রকম আশা করছে।