ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

উত্তপ্ত বিসিবি’র আম্পায়ারস বিভাগ

রাহুল-দেবব্রতর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

স্পোর্টস রিপোর্টার
২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
mzamin

বাংলাদেশ ক্রিকেটে আম্পায়ারিং নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি আম্পায়ারস কমিটির অভ্যন্তরীণ সভায় সরাসরি তর্কযুদ্ধে জড়ান দুই ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশিদ রাহুল ও দেবব্রত পাল। দু’জনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে বিসিবি’র আম্পায়ারস কমিটি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে গতকাল আম্পায়ারস কমিটি আরেকটি অভ্যন্তরীণ সভা করলেও সেখানে ডাকা হয়নি দেবব্রত পালকে। গতকাল দেবব্রতের বিরুদ্ধে ‘অমার্জিত’ ব্যবহার এবং অসদাচরণের অভিযোগ তুলে আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠুকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন ৭ জন ম্যাচ রেফারি। চিঠিতে ম্যাচ রেফারিরা উল্লেখ করেন, দেবব্রত পালের সাম্প্রতিক আচরণ তাদের জন্য ‘অসুরক্ষার’ জন্ম দিয়েছে। বৈঠকের সময় তার কথাবার্তা ছিল ‘অত্যন্ত আগ্রাসী’, যা প্রায় শারীরিক সংঘর্ষের পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। তাই ভবিষ্যতে তার সঙ্গে কোনো অফিসিয়াল আলোচনায় অংশ নিতে তারা অনাগ্রহী বলেও জানান। এরপর একইদিনে একই ঘটনার জন্য নিয়ামুর রশিদ রাহুলকে দায়ী করে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বরাবর চিঠি দিয়েছেন দেবব্রত। চিঠিতে রাহুলের দ্বারা ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সেই মিটিংয়ের অডিও প্রকাশের দাবি জানান দেবব্রত। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান সেদিন বলেছিলেন এই সভার অডিও রাখা হোক। অডিও রেকর্ডেই যাবতীয় প্রমাণ আছে। আমি সেটি প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। তা প্রকাশ করা হলেই জানা যাবে আসলে কে সেদিন গালিগালাজ করেছিল।’ আম্পায়ারস কমিটির মিটিংয়ে নায্য কথা বলাতেই রাহুলের ক্ষোভের মুখে পড়েন বলে জানান দেবব্রত।  তিনি বলেন, ‘যদি কোনো প্লেয়ার অপরাধী হয় অবশ্যই সে শাস্তি পাবে। একেবারে ক্লিয়ার। যখন আমি প্রটোকল মেনে চলার কথা বলি তখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশীদ রাহুল 

বলে ‘আপনি আঙুল উঁচিয়ে কথা বলছেন কেন?’ অত্যন্ত অশ্লীল ভাষায় আমাকে আক্রমণ করেন এবং আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। উনি আমার বাবা-মাসহ কথা বলেছে যা অডিও রেকর্ডে আছে।’ অভিযোগ দিতে
দেরি হলো কেনো প্রশ্নে এই ম্যাচ রেফারি বলেন, ‘আমি এটা শোনার পর উত্তেজিত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাই। তখন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান আমাকে ধরে নিয়ে যায় আমি চলে যাই। আমি আর কিছুই জানি না। পরবর্তীতে আমি চিন্তা করেছি এই ব্যাপারে আমার একটি লিখিত দেয়া প্রয়োজন। আমি একটু সময় নিয়েছি। আমি দেখতে চেয়েছি আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান এই ব্যাপারে কী করেন। উনি গত তিনদিনে কিছুই করেননি। আজ সকালে আমি বোর্ড প্রেসিডেন্ট বরাবর চিঠি দিয়েছি সব কিছু উল্লেখ্য করে।’ দেবব্রত তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে পুরো ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন। 
তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় সত্য বলেছি, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করেছি। সেই কারণে আজ আমি তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে এখন রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে মিডিয়ায় ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। আমি ৫ই আগস্টের আন্দোলনের আগ থেকেই বিসিবি’র নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। গত ১৭ বছর যারা সুবিধা নিয়েছে, এখন তারা দিশেহারা হয়ে নতুন ক্ষমতার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাইছে। আমার বিরুদ্ধে গঠনমূলক নয়, বরং ব্যক্তিগত আক্রমণ চলছে।’ এ বিষয়ে আম্পায়ারস কমিটির প্রধান বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠুকে ফোন দিলে কেটে দেন। মূলত তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমানো ঘিরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে অস্থির সময় চলছে। অভিযোগ রয়েছে, এই সিদ্ধান্তে বিসিবি’র নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি এবং টেকনিক্যাল কমিটি বা ডিসিপ্লিনারি কমিটির মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। এই কাণ্ডে এর আগে ডিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনি পদত্যাগ করেছেন ও আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত বিসিবি’র চাকরি ছাড়তে চান।

খেলা থেকে আরও পড়ুন

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status