খেলা
পার্টি মুডে জিম্বাবুয়ে
ইশতিয়াক পারভেজ
২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
মাত্র চারদিনেই সিলেট টেস্ট জিতে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। তাই বুধবারের রাতটা তাদের কেটেছে পার্টি মুডে। দল বেঁধে রুমে বসে সেরেছে পানাহার। একে অপরকে দিয়েছেন উৎসাহ। মুঠো ফোনে বন্ধু-বান্ধব পরিবারের কাছ থেকে পাচ্ছেন তারা অভিনন্দন। এমন খবর জানা যায় টিমের সূত্রে। তাদের আনন্দের কারণ নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তারা করে জয় তুলে নিয়েছেন তারা। একই হোটেলে বিপরীত চিত্র বাংলাদেশ শিবিরে। ক্রিকেটারদের মুখে হাসিটা একেবারেই মেকি। কেউ কেউ হাসছেন যেন জোর করে। টাইগাররা প্রফেশনাল ক্রিকেটার এমন হার আগেও দেখেছেন। তাই মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা তো আছেই।
তবে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে এমন হার মেনে নিতে পারছেন না দলের ক্রিকেটাররা। পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় তাদের। চতুর্থ দিনে ৩ উইকেটের জয় পায় সফরকারীরা। টেস্টের পঞ্চম দিনটি দুই দলের ক্রিকেটারদের সময় কেটেছে হোটেলেই। আজ দুপুর ১২টায় সিলেট থেকে দুই দলই যাবে চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইটে। সেখানেই দলের সঙ্গে যোগ দিবেন দ্বিতীয় টেস্টে দলে ডাক পাওয়া এনামুল হক বিজয় ও স্পিনার তানভীর ইসলাম। এমন হারকে কষ্টদায়ক ও বিব্রতকর বলছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম। গতকাল মিরপুরে নাজমুল আবেদিন বলেন, ‘পেইনফুল! পেইনফুল এ কারণে যে আমাদের দলের যে সক্ষমতার কথা আমরা জানি তার সঙ্গে এই পারফর্মেন্স মেলে না। খুবই দুঃখজনক। আমরা চেষ্টা করেছি এমন সব কন্ডিশনে খেলতে যেটা আমাদের খুব একটা ফেভার করবে, দেশের বাইরেও আমাদের হেল্প করবে এমন কন্ডিশনে খেলতে চাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যে খেলাটা খেলেছি...কন্ডিশন হয়তো আমাদের জন্য একেবারে সুখকর ছিল না কিন্তু আমাদের দলের যে অভিজ্ঞতা, সামর্থ্য তাতে আরও ভালো পারফর্মেন্স আশা করেছিলাম। রেজাল্টটা মোটেও সন্তোষজনক নয়, আমাদের জন্য বিব্রতকরও বটে।’ সিলেট টেস্টে বাংলাদেশ দল হেরেছে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায়। ম্যাচের চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে দিয়ে ১৭৪ রানের লক্ষ্যে রানতাড়ায় নেমে সফরকারীদের ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারেন। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৫ রান তোলেন দুজনে। বেন কারেন ৪৪ রানে ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। নিক ওয়েলচ ও শন উইলিয়ামস ফিরে যান আলো ছড়ানোর আগেই। দলীয় ১২৮ রানে ব্রায়ান বেনেট ফিরে যান ৫৪ রান করে। পরে আরও তিন ব্যাটারকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ক্রেইগ আরভিন ১০ রান এবং মায়াভো ১ রান ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ১২ রান করে ফিরে যান। রিচার্ড এনগারাভাকে নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছান ওয়েসলি মাধেভেরে। মাধেভেরে ১৯ রানে এবং এনগারাভা ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে ১৯৯৮ এ তারা সর্বোচ্চ ১৬২ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল। সেই রেকর্ড ভাঙে তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে মিরাজ ৫ এবং তাইজুল ২ উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট নিলেন মিরাজ, ম্যাচে নিলেন ১০ উইকেট। টেস্টে ৫২তম ম্যাচে এসে ২০০ উইকেটের দেখা পেলেন টাইগার অফস্পিনার। চতুর্থ দিন ১৯৪ রান স্কোর বোর্ডে নিয়ে দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আগের দিনে ৬০ রানে অপরাজিত থাকা অধিনায়ক শান্ত বাজে শট খেলে আউট হন। নিজের নামের পাশে যোগ করতে পারেননি একটি রানও। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টটাও সেই আউটটিকেই বিবেচনা করা হচ্ছে। এরপর জাকের আলী অনিক ফিফটি হাঁকান। পেসার হাসান মাহমুদকে নিয়ে ৩৫ রানের জুটিও গড়েন। তবে তারা আউট হতেই ২৫৫ রানে থামে বাংলাদেশের স্কোর। অবশ্য ম্যাচ শেষে এমন হারের জন্য নিজের আউট হওয়াকে দায়ী করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি অধিনায়ক শান্ত। তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচটা আমি হারিয়ে দিয়েছি সত্যি কথা। সকালে ওই আউটটাতে আমার মনে হয় পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গেছে। ওখানে যদি একটা ৫০-৬০ রানের জুটি হতো তাহলে ২২০ বা এর বেশি রান হলে কিন্তু আমরা ভালো অবস্থানে থাকতাম। (হারের) পুরো দায়ভার আমি নিতে চাই। খুব বাজে সময়ে আউট হয়েছি।’ চট্টগ্রাম টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে হলে অবশ্য নিজেদের ব্যাটিংয়ের উন্নতি করতে হবে। তার আগে খুঁজে বের করতে হবে ভুলটা কোথায় হচ্ছে। তবে অধিনায়ক জানেন না ব্যাটিংয়ে তাদের সমস্যা কী হচ্ছে। তবে দায়িত্ববোধের অভাব দেখছেন তিনি। এ নিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘সমস্যা কী আসলে বলা মুশকিল। ব্যাটিং আসলে সফট ডিসমিসাল সবগুলাই। আমার মনে হয় না যে আমরা খুব বেশি ভালো বলে উইকেট দিয়েছি। স্কিলের চেয়ে মেন্টাল বেশি। আমার মনে হয় যে এখানে আরও দায়িত্ব নেওয়া উচিত ব্যাটারদের, যারা আমরা সেট হয়ে আউট হয়েছি।’
পাঠকের মতামত
Don't give up..go-ahead Bangladesh. ❤️