শরীর ও মন
গত শতাব্দীর মেটফরমিন ও সালমোনিলুরিয়াস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এখনো কার্যকর
স্টাফ রিপোর্টার
(১ দিন আগে) ২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৯:৩১ অপরাহ্ন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গত শতাব্দীর আবিষ্কৃত মেটফরমিন ও সালমোনিলুরিয়াস এখনো পুরোপুরি কার্যকর। রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে এই দুটো ওষুধ ট্যাবলেট আকারে বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো ওষুধ কোম্পানি উৎপাদন করে। এই দুটো ট্যাবলেট সাশ্রয়ী দামেও বাংলাদেশে পাওয়া যায়। রোববার বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের ২৪তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বেশ আলোচিত বিষয় ছিল। এই দুটো ট্যাবলেট যে এখনো সমান কার্যকর তা ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ইনস্টিটিউট নেকার এ্যানফেন্টস ম্যালাডিসের প্রফেসর মাইকেল মার বৈজ্ঞানিক আলোচনায় বাংলাদেশের মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তুলে ধরেন। প্রফেসর মাইকেল মার বলেন, মেটফরমিন আদতে উত্তর আফ্রিকায় হারবাল ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে আধুনিক ওষুধ কোম্পানি ওই হারবাল ওষুধকে ক্লিনিকেলি উন্নয়ন করে ওষুধ বানায়। ওষুধটি হেপাটিক গ্লুকোনিওজেনিসিসের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজকে কমিয়ে রাখে। অন্যদিকে সালমোনিলুরিয়াস বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আবিষ্কুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ওষুধ। এই ওষুধটি অগ্নাশয়ে ইনসুলিন নি:শরণে সহায়তা করে।
বাংলাদেশের মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে রাখতে এই ওষুধ দুইটি ব্যবহার করলেই হয়। এ জন্য দামী ইনসুলিন ইনজেকশনের প্রয়োজন পড়ে না। এদেশেরর বেশির ভাগ মানুষ ইনসুলিন কেনার সামর্থ্য রাখে না। চিকিৎসকরা ইচ্ছা করলে দামী ইনসুলিনের পরিবর্তে এই দুটি ওষুধ ব্যবহার করে মানুষের অনেক উপকার করতে পারেন। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্য অধিপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ বলেন, মেটফরমিনে দীর্ঘদিন কার্ডিওভাস্কোলার বেনিফিট পাওয়া যায়। ওষুধটি কিডনি রোগ ও কার্ডিওভাস্কোলার জটিলতা কমিয়ে রাখে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আরো কিছু সুবিধা পাওয়া যায় ওষুধ দুটো প্রয়োগ করলে। একই সাথে কম দাম বলে ভুক্তভোগীদের কিনেত খুব বেশি কষ্ট হবে না।
সম্মেলনটি গত শুক্রবার শুরু হয় এবং সমাপ্ত হয়েছে রোববার। সম্মেলনে বাংলাদেশে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার নানা দিক নিয়েও আলোচনা করা হয়। মেডিসিন সম্মেলনে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ১৫ জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া আলোচনা করা ঞয় বাংলাদেশের অবহেলিত রোগ নিয়ে। প্রেগনেন্সি, ভিটামিনের অভাব, বিরল রোগ, এডভান্স হার্ট ফেইলউির ব্যবস্থাসহ মেডিসিনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈজ্ঞানিক আলোচনা হয়।
আয়োজকরা বলেছেন, মেডিসিন সম্মেলনে আলোচিত বিষয়গুলো চিকিৎসকরা প্র্যাকটিস করতে পারলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের চিকিৎসায় গুণগত পরিবর্তন আসবে।