খেলা
সাদমানের সেঞ্চুরির পরও ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা
স্পোর্টস রিপোর্টার
৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
সাগরিকায় শেষ বিকালে লড়াই করছেন বাংলাদেশের দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। স্কোর বোর্ডে ২৯১ রান, সেই সুবাদে লিড ৬৪ রানের। এই দু’জন আর কতো রান যোগ করতে পারবেন সেটি নির্ভর করছে তাদের ব্যাটিংয়ের ওপর। যত বেশি লিড ততো চাপে থাকবে সফরকারীরা। টাইগাররা হয়তো নিজেদের জন্যই আপ্রাণ চেষ্টা করবেন পুঁজিটা বাড়িয়ে নিতে। যেন দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের চ্যালেঞ্জটা কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত বোলারদের কল্যাণে প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ২২৭ রানে বেঁধে ফেলে টাইগাররা। দ্বিতীয়দিন ব্যাট করতে নেমে দারুণ এক সেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান ইসলাম অনিক। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পথে দীর্ঘদিন পর টেস্টে ফেরা এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে ওপেনিং জুটিতে পায় ১১৮ রানের জুটি। প্রায় আড়াই বছর ও ৩৩ ইনিংস পর শুরুর জুটিতে শতরান পায় বাংলাদেশ। সবশেষ ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরির ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ১২৪ রান যোগ করেছিলেন জাকির হোসেন। এ নিয়ে শেষ ১২ মাসে টেস্ট ক্রিকেটে মাত্র চারটি সেঞ্চুরি এসেছে। সবশেষটি হাঁকিয়েছেন গেল বছর লিটন দাস পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে। তবে দারুণ শুরুর পর শেষ বিকালটা একেবারেই খেই হারায় বাংলাদেশ। ২ উইকেটে ১৯৪ থেকে মাত্র ৯৭ রান যোগ করতে হারায় পাঁচ উইকেট।
গতকাল সাগরিকা স্টেডিয়ামে সকাল থেকে চা বিরতি পর্যন্ত সাবলীলভাবেই এগোতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ বিকালে এসে এলোমেলো হয়ে যায় তারা। নাজমুল হোসেন শান্ত, জাকের আলী অনিক, মুশফিকুর রহীমের প্রত্যেকেই উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন জিম্বাবুয়েকে। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের বিকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের চা বিরতি পর্যন্ত ছড়ি ঘোরাতে থাকে বাংলাদেশ। চার বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া সাদমান আউট হওয়ার পর মুমিনুল হক দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরলেও শান্ত-মুশফিক সাবলীলভাবে দলকে টানতে থাকেন। তবে নিজেদের ভুলেই তারা হারিয়েছে উইকেট।
প্রথম ইনিংসে ৫৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫ রানে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন পার করে বাংলাদেশ। চা বিরতির পর শান্ত, মুশফিক খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। ৬১তম ওভারে ব্রায়ান বেনেটের ওভার থেকে শান্ত একাই নিয়েছেন ১১ রান। একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন শান্ত। এক ওভার বিরতি দিয়ে বেনেট বোলিং করতে এসে মুশফিকের কাছে খেয়েছেন ২ চার। এরপর ৬৮তম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে একটি করে চার মেরেছেন মুশফিক ও শান্ত। সাবলীলভাবে চলতে থাকা শান্ত-মুশফিকের ৬৫ রানের জুটি ভেঙেছেন জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত লেগস্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা। ৭১তম ওভারের চতুর্থ বলে মাসেকেসাকে আলতো ফ্লিক করে শান্ত মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা নিকোলাস ওয়েলচের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। ৫৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ২৩ রান। শান্ত-মুশফিকের জুটি টিকেছে ৯৯ বল।
শান্ত আউট হওয়ার পর পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন জাকের আলী অনিক। নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে জাকের যে চার মেরেছেন, সেটা এজ হয়ে এসেছে। তবে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ৭৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে জাকেরকে কট এন্ড বোল্ড করেন মাসেকেসা। ১৩ বলে ৫ রান করেন জাকের। এই দু’জনের পর মুশফিক, নাঈম হাসানের উইকেটটাও দ্রুত হারায় বাংলাদেশ। ৭৭তম ওভারের শেষ বলে মাসেকেসাকে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে যান মুশফিক। ননস্ট্রাইক প্রান্তে ডিরেক্ট থ্রোতে রানআউট করেন ওয়েসলি মাধেভেরে। ডাইভ দিয়েও নিজের উইকেটটা বাঁচাতে পারেননি মুশফিক। ৫৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রান করেন বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। মাসেকেসার বোলিংয়ের সামনেই মূলত শেষ বিকালে চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকে বাংলাদেশ। ৮৩তম ওভারের শেষ বলে নাঈমকে ফেরান জিম্বাবুয়ের এই লেগস্পিনার। ২০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ৮৩ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৯ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। দিনের বাকি ৪ ওভার নিরাপদে পাড়ি দেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। মিরাজ ৩৭ বলে ১৬ রান করেছেন। তাইজুলের স্কোর ৫ রান। খেলেছেন ১১ বল।