অনলাইন
আওয়ামী লীগ সরকার আর্থিক খাত ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে: অর্থ উপদেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার
(১ দিন আগে) ২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৫:১৭ অপরাহ্ন
বিগত সরকারের সময়ে আর্থিক খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতি, লুটপাট এবং অপশাসনের মাধ্যমে খাতটিকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি এবং বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে একযোগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন তিনি। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট প্রস্তাবনা। এর আগে ২০০৭-০৮ ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম একইভাবে বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।
অর্থ উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, বিগত ১৫ বছরে আর্থিক খাতে যে পরিমাণ অপশাসন হয়েছে, তা নজিরবিহীন। ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। অনেক ঋণ খেলাপি হয়েও পুনঃতফসিলিকরণের মাধ্যমে মূল চিত্র গোপন রাখা হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং পদ্ধতি চালু করেছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে খেলাপি ঋণের হার যেখানে ছিল ১০.১১ শতাংশ, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০.২০ শতাংশে। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট ২০২৪-এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সরকার আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করতে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মূলধন ঘাটতি, তারল্য সংকট এবং সম্ভাব্য দেউলিয়াত্বের মতো ঝুঁকি মোকাবেলায় সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যাদের দায়িত্ব হচ্ছে: ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত পর্যালোচনা করে একটি সংস্কার কর্মসূচির ভিত্তি তৈরি করা, নীতি ও বিধি কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চুরি বা পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জন এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির ভিত্তি গড়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেট পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় কাঠামোগত ও নীতিগত ক্ষেত্রে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে বলে জানান তিনি।