ঢাকা, ৭ জুন ২০২৫, শনিবার, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

ঈদে সরগরম তৃণমূল রাজনীতি, নেতারা ছুটছেন এলাকায়

কিরণ শেখ
৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
mzamin

ঈদে গ্রাম হবে রাজনীতিমুখী। নেতারা ছুটছেন যার যার এলাকায়। লক্ষ্য নির্বাচনের আগে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো। একইসঙ্গে ভোটের প্রস্তুতিও রয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের। ঈদ ঘিরে চাঙ্গা হবে তৃণমূলের রাজনীতি। এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন হলে ভোটের আগে এটিই হবে শেষ ঈদ। এ কারণে ঈদের সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রায় সবাই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন ঈদে। 

যদিও অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত ভোটের রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। দলগুলো দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে। সরকার রোডম্যাপ না দিলেও দলগুলো ভেতরে ভেতরে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। কোনো কোনো দল তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে। এসব প্রার্থীরা আগে থেকেই নির্বাচনী এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন। 

রাজনৈতিক দলের সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি এ বিষয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা না দিলেও দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এবং সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন। সেখানে তারা ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এসব কর্মসূচিতে জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে কী কী করবে, তা তুলে ধরবেন নেতারা। একইসঙ্গে নিজ নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নে দেবেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। ওদিকে নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হলেও জামায়াতে ইসলামী প্রায় ৩০০ আসনে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে তারা নির্বাচনী প্রচারণার কাজও করছেন। ঈদেও তারা নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও বৈঠক করবেন। এ ছাড়া এনসিপি গত ১০ থেকে ১৫ দিন সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। ঈদেও এই কর্মকাণ্ড চলমান থাকবে। ঈদে এনসিপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় তাদের দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ জনগণের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।   

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশানে ফিরোজায় বাসভবনে ঈদের নামাজ পড়বেন। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে স্থানীয় মসজিদে ঈদের নামাজ পড়বেন। এ ছাড়া বিএনপি‘র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ঈদের নামাজ ঢাকাতেই পড়বেন। ওদিকে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদের নামাজ পড়বেন। তারা ঈদের নামাজ শেষে স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। অন্যদিকে ঈদের দিন সকালে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এদিন রাতেই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বাসভবনে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ঈদে শান্তির বার্তা দেয়া হবে। পবিত্র ঈদে আমরা আশাকরি, মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। এখনো নানা ধরনের অশান্তি বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যে আশা করে দেশে পরিবর্তন করেছে, সেই আশা পূরণ হবে। আমরা আশাকরি, অর্থনৈতিক, সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা হবে। 

ওদিকে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান মৌলভীবাজার জেলায় নিজ গ্রামে, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় নিজ গ্রামে, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় নিজ গ্রামে, মাওলানা শামসুল ইসলাম চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় নিজ গ্রামে, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় ঈদের নামাজ পড়বেন। এ ছাড়া দলের জাতীয় নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীসহ নেতারা নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদ্‌যাপন করবেন। সেখানে তারা গণসংযোগসহ বিভিন্ন সাধারণ জনগণের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ মানবজমিনকে বলেন, জামায়াতের প্রায় নেতারাই নিজ নিজ এলাকায় এবার পবিত্র ঈদ উদ্‌যাপন করবেন। সেখানে জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং গণসংযোগ করবেন তারা। 

অন্যদিকে ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে সারা দেশে সাংগঠনিক কার্যকম করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। ঈদেও এই কার্যকম চলবে। এর বাইরে ঈদেও এনসিপি’র নেতারা নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এ বিষয়ে এনসিপি‘র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন মানবজমিনকে বলেন, যেহেতু সারা দেশে কমিটি গোছানোর কাজ করছি। এখন নির্বাচনমুখী ক্যাপিং করছি না। আসনভিত্তিক কাজ আরও পরে। কারণ জুলাই সনদসহ বেশকিছু বিষয়  এখনো হয়নি। তাই এখন আমরা সংগঠন গোছানোর লক্ষ্যে কাজ করছি। 

ওদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিসসহ ইসলামী দলগুলোর নেতারাও নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন। এসব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও মাঠে কাজ করছেন। গণ-অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, গণসংগতি আন্দোলনসহ বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করা দলগুলোর যেসব নেতা নির্বাচন করতে চাইছেন তারাও নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের শাসনে তথাকথিত বিরোধী দলে থাকা জাতীয় পার্টির নেতারা অনেকটা বেকায়দায় আছেন। তাদের অনেকে এলাকায় এখনো প্রকাশ্যে যেতে পারছেন না। 
 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status