শেষের পাতা
আশা’র প্রতিষ্ঠাতা সফিকুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
স্টাফ রিপোর্টার
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
দেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশা’র প্রতিষ্ঠাতা মো. সফিকুল হক চৌধুরীর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২১ সালের এই দিনে তিনি ৭২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। সফিকুল হক চৌধুরী আজীবন দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের অন্যতম প্রধান এনজিও আশা ছাড়াও তিনি আশা ইউনিভার্সিটি, আশা ম্যাটস ও হোপ ফর দ্য পুওরেস্ট (এইচপি)সহ বিভিন্ন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেগুলো উন্নয়ন ও জনকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সফিকুল হক চৌধুরীর দর্শন ছিল, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণ করা সম্ভব হলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে। প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার অভাবে দরিদ্র মানুষ তাদের অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে না। যদি তারা কাঙ্ক্ষিত সহায়তাটুকু পায়, তাহলে নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই বদলাতে সক্ষম হবে। সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তির নাগাল পেলে সমাজের কল্যাণেও ভূমিকা রাখতে পারবে। এ দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই তিনি আশা’র কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।
১৯৭৮ সালে তিনি আশা প্রতিষ্ঠা করেন- যা এখন বাংলাদেশ তথা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গৌরবের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে আশা’র সেবাগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা ৮০ লাখেরও বেশি। পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে, যেগুলোর জনসংখ্যা ৮০ লাখের চেয়েও কম। এই একটি উদাহরণ দিয়েই আশা’র কাজের ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সফিকুল হক চৌধুরী ২০০৪ সালে আশা’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান হোপ ফর দি পুওরেস্ট (এইচপি) প্রতিষ্ঠা করেন। এইচপি প্রতিষ্ঠার পেছনে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল তার। দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে নিয়ে বহু বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য হতদরিদ্র মানুষের বিশেষ সেবা ও সহায়তা প্রয়োজন। এই জনগোষ্ঠীকে সেবা ও সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যেই এইচপি কাজ শুরু করে। এ ছাড়াও, দুর্যোগপ্রবণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের সেবা দিতে এইচপি নানা কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে গত ২০ বছরে। যার মধ্যে রয়েছে, স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসেবা।
গ্রামকেই সফিকুল হক চৌধুরী কাজের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তার কর্মের প্রধান লক্ষ্য ছিল পল্লী অঞ্চলে বসবাসকারী বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনমানের পরিবর্তন। তিনি নারী সমাজের অর্থনৈতিক মুক্তিকে টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করতেন। তাই তিনি যেকোনো কর্মসূচি গ্রহণের সময় নারীর কল্যাণ ও ক্ষমতায়নকে সবকিছুর উপরে স্থান দিতেন।