ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

ট্রাম্পের শুল্ক আর আমাদের করণীয়

রঞ্জন সেন

(১ সপ্তাহ আগে) ৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৪:০১ অপরাহ্ন

mzamin

ট্রাম্প শুল্কে টালমাটাল বিশ্ব। শুল্ক আরোপ নিয়ে নানা দেশে টানাপোড়েন। এটা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সাথে আলোচনা করতে চাইছে পঞ্চাশটির বেশি দেশ। বাংলাদেশের উপর বসানো হয়েছে ৩৭ ভাগ বাড়তি শুল্ক। এই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে প্রসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সমাধান সূত্র খুঁজতে অর্থ আর বাণিজ্য উপদেষ্টা এনবিআর, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সাথে আলোচনা করছেন। পেছনে তাকালে দেখা যায়, ১৯৪৪ সালের ব্রেটন উডস সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ সৃষ্টি করা হয়। ডলারকে বিশ্ব বাণিজ্যের কেন্দ্রে এনে পুরো বিশ্ব বাণিজ্যকেই আমেরিকার করতলগত করা হয়।  বদলে যায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম-নীতি। তারপর ১৯৭১ সালে ডলারের পরিমাণকে স্বর্ণের মজুদ থেকে আলাদা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন বিশ্ব বাণিজ্যের ইতিহাসের গতিপথ আরেকবার বদলে দিয়েছিলেন। ডলার হয়ে উঠেছিল সকল দেশের সঞ্চয় এবং বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম যা এখনো চলছে। এ রকম আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টির সন্ধিক্ষণে আছেন বর্তমান প্রসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্পের বহু বছরের ভাবনা-চিন্তার ফসল এই সদ্য ঘোষিত ‘মুক্তি দিবস শুল্ক’। নির্বাচনের আগেও তিনি বহুবার এই  শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন। শত ঝড়-ঝঞ্ঝা মোকাবেলা করে রেকর্ড গড়া বিজয় নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসের দখল নিয়েছেন। তিনি তার বিপুল বিজয়কে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে চান। ‘মুক্তি দিবস শুল্ক’ তার সে প্রচেষ্টার অংশ। এই শুল্কের মাত্রা এবং ব্যাপকতা অনেক বেশি। এর আরোপের মাধ্যমে তিনি আমেরিকাকে আবারো শিল্প উৎপাদনে দুনিয়ার সেরা করে তুলতে, নিজ দেশে শিল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে এবং ডলারের মূল্য কমিয়ে মার্কিন পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার প্রসারিত করতে পারবেন বলে মনে করেন। এসবের মাধ্যমেই তিনি মোড় ঘুরিয়ে দিতে চান বিশ্ব বাণিজ্যের ইতিহাসের।

ঘোষিত ‘মুক্তি দিবস শুল্ক’ নীতি থেকে তিনি সহসা ফিরে আসবেন বলে মনে হয় না।  তাই কী করে পরিবর্তিত বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় খাপ খাওয়ানো যায় সে বুদ্ধি বাতলানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি এখন কাজ হচ্ছে-

১) ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা।

২) কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনাম যে সকল পণ্য আমেরিকা পাঠায় সে সব পণ্যের উৎপাদন এখানে বাড়িয়ে রফতানি বৃদ্ধি করা।

৩) আমেরিকার যে সকল পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে সে সকল পণ্যের উপর যতদূর সম্ভব শুল্ক কমিয়ে আমদানি বাড়ানো ।

৪) আমেরিকার সঙ্গে পেশাদারিত্বের সঙ্গে খুঁটিনাটিসহ সকল বিষয়ে দেনদরবার করে শুল্ক হার কমিয়ে আনা। 

সরকারের চেষ্টা সত্ত্বেও শুল্কের হার সহসা কমানো কঠিন। এজন্য বছর খানেক সময় লেগে যেতে পারে। তবুও চেষ্টাটা চালু রাখতে হবে। ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়িয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়। ফলে উৎপাদন খরচ কমবে। বাংলাদেশের শিল্প কারখানাগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এই কাজটা শুরু করার সিদ্ধান্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজেদের হাতে। যোগ্য ব্যবস্থাপকদের সাহায্য নিন, দক্ষতা বাড়ান আর খরচ কমান।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status