বাংলারজমিন
নারায়ণগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের ঘাতক আটক
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবারনারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বাড়ির সামনে পুকুর পাড় থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় একই পরিবারের দুই নারী ও এক শিশুর খণ্ডিত তিনটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া বড়বাড়ির পুকুর পাড় বাড়ির আঙ্গিনায় মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলো- স্বপ্না (৩৫), তার ছোট বোন লামিয়া আক্তার (২২) ও লামিয়ার চার বছরের শিশু আব্দুল্লাহ। এদিকে, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নিহত লামিয়া আক্তারের স্বামী মো. ইয়াসিনকে আটক করে। ইয়াসিন (২৫) সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে। পুলিশ লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা। তারা ওই এলাকার খলিলুর রহমান মিয়ার ভাড়া বাড়িতে থাকতো। চারদিন ধরে তারা নিখোঁজ ছিল। পরে শুক্রবার দুপুরে নিজ বাড়ির পুকুর পাড়ে লাশের হাত দেখতে পায় ও দুর্গন্ধ বের হয়। পরে মাটি খুঁড়ে তাদের খণ্ডিত বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত লামিয়ার খালা শিরিন বেগম বলেন, আমার বোনের মেয়েরা এতিম। তাদের বাবা-মা অনেক আগেই মারা গেছেন। আমার বোনের ছোট মেয়ে লামিয়া প্রেম করে বিয়ে করে। সেই সংসারে তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। আর লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। তাই তারা কিছুদিন ধরে একসঙ্গে বসবাস করছিল। গত চারদিন ধরে তারা তিনজন নিখোঁজ ছিল। দুপুরে এসে তাদের লাশ দেখতে পাই। তিনি আরও বলেন, লামিয়ার স্বামী একজন বখাটে ও মাদকাসক্ত। তাদের সংসারে প্রায় সময় ঝগড়া লেগেই থাকতো। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারে ইয়াসিন একজন মাদকসেবী ছিল। পারিবারিক কলহের জেরে ইয়াসিন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, গত তিন-চারদিন আগে তিনজনকে হত্যা করে লাশ খণ্ডিত করে বস্তায় ভরে বাড়ির আঙ্গিনায় মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, নিহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় নিহত লামিয়া আক্তারের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।