বাংলারজমিন
সিলেটে আইনজীবী হত্যা : ছেলেসহ ৩ জনের ফাঁসি
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৭ মে ২০২৫, বুধবারসিলেটে প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় ছেলেসহ ৩ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। গতকাল বিভাগীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামাণিক এই রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া মামলার রায়ে ১ জনকে ৩ বছরের কারাদণ্ড আর ১ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মসুদ আহমদ চৌধুরী (মুন্না), মো. জাহের আলী ও মো. আনসার আহমেদ। সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পিপি এডভোকেট আনছারুজ্জামান জানান- ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় কোনো আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল না, তারা পলাতক। এডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। দুই কন্যা অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী, এক কন্যা ঢাকায় এবং অপর কন্যা সিলেটে শ্বশুরবাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী পেশাগত কারণে সপরিবারে ঢাকায় থাকেন। ছোট পুত্র মুন্নাকে নিয়ে শামছুল ইসলাম চৌধুরী সিলেট নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকায় আজাদী-১১০নং বাসায় বসবাস করতেন। ২০১১ সালের ১৭ই জুলাই শবেবরাতের রাতে নগরীর মীরবক্সটুলাস্থ বাসা থেকে নিখোঁজ হন শামসুল ইসলাম। এরপর মুন্না কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। পরে ২২শে জুলাই মুন্না নিজেই আত্মগোপনে চলে যান। এ ঘটনায় ওই বছরের ৪ঠা আগস্ট মুন্নার বড় ভাই মাহমুদ আহমদ চৌধুরী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার এক সপ্তাহ পর র্যাব-৯ সদস্যরা আনসার, বোরহান ও রানুকে আটক করে এবং তার মধ্যে আনসার ও বোরহান আদালতে জবানবন্দি দেয়। ঘটনার পর ২৭শে আগস্ট পুলিশ সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদী থেকে শামছুল ইসলামের মরদেহের কিছু অংশ, পাঞ্জাবি ও টুপি উদ্ধার করে। পরে সেগুলোর ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়। এডভোকেট মো. আনছারুজ্জামান জানান, ২০১১ সালের ১৭ই জুলাই শবেবরাতের রাতে নামাজরত অবস্থা প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে তার ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না পেছন থেকে প্রথমে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় গাড়িতে তুলে সুনামগঞ্জের ছাতকের মল্লিকপুর এলাকার সুরমা নদীতে ফেলে দেয়। এর কয়েকদিন পর সুনামগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে সুরমা নদীতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মুন্নাকে গাড়িচালকসহ তিনজন সহযোগিতা করে। তিনি জানান, চলতি বছরের ১০ই মার্চ মামলাটি সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে আসে। যুক্তি-তর্ক ও শুনানি হয় ২৪শে এপ্রিল। এরপর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।