বাংলারজমিন
সড়ক নির্মাণের বছর না পেরোতেই চলাচলের অনুপযোগী
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
যশোরের অভয়নগরে সড়ক নির্মাণের ২৬ কোটি টাকা জলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, সড়কটি বছর না পেরোতেই ভেঙেচুরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আসছে বর্ষা মৌসুমে সড়কটির চরম বেহাল অবস্থা দেখতে হবে এমনটিই আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
সরজমিন দেখা যায়, রাস্তার অনেক জায়গায় ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ফেটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাঙ্গাগেট-বাদামতলা-আমতলা ভায়া মরিচা নাউলী বাজার সড়কটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম অবহেলা ও অনিয়মের প্রতিবাদও করে স্থানীয়রা। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজটি বাস্তবায়নে নির্মিত রাস্তাটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার বছরের শেষেই রাস্তা নষ্ট হওয়ায় কারণে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও পল্লী সংযোগ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের (আরবিআইপি) আওতায় সড়কটি ফেরিঘাটের মোড় থেকে আমতলা বাজার পর্যন্ত ২০ কিলো ৯০৪ মিটার উন্নয়ন কাজের ২০২১ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ কাজে ব্যয় ধরা হয় ২৬ কোটি ৮ লাখ ২ হাজার ৯৩১ টাকা। কাজটি পায় ঢাকার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় পরে কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের ২৬শে জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়। পরবর্তীতে পর বছরের ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কাজে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও সমাপ্তি দেখিয়ে ১৫ই এপ্রিল ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়েছে। সড়কটির প্রস্থ ১২ ফুট। কিন্তু দু’পাশে ৩ ফুট করে ৬ ফুট বাড়িয়ে সড়কটি ১৮ ফুট করা হয়েছে। এলাকাবাসী কাজের শুরুতেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে কাজ কয়েকবার বন্ধ করে দেয়। এ প্রসঙ্গে এলাকাবাসী জানান, শংকরপাশা-আমতলা সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নড়াইল জেলার ও গোপালগঞ্জ হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। তাছাড়া নড়াইল, ফুলতলা এবং অভয়নগর উপজেলার চার ইউনিয়নের লোকজন নওয়াপাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও মালামাল বহন করেন। বুনো রামনগর গ্রামের ওমর সানি বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে গেল। আমাদের যে কষ্ট তা থেকেই গেল। সরকারের টাকাই গচ্চা গেল। শংকরপাশা গ্রামের শাহিব হোসেন মোল্যা বলেন, রাস্তার কাজ খুব নিম্নমানের করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়াররা কী দেখলো তা বুঝলাম না। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেল।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান বিপ্লবের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল হুদা বলেন, কাজ শেষ হওয়ার পরপরই রাস্তা খারাপ হওয়ার কথা না। এরপর তিনি আরও বলেন, রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হলে লিখে দেন। এ ব্যাপারে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহাবুবুর রহমান বলেন, ওই রাস্তা সম্পর্কে আমার জানা নেই। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা দেবো।