ঢাকা, ১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

ভৈরবে ৫৭ বছরের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ, নিহত ১

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
mzamin

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একই গ্রামের দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তারে ৫৭ বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জের ছড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী গ্রামে। এতে মিজান মিয়া (৪১) নামের একজন নিহত হয়েছে। গতকাল উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে সকালে এক সালিশি দরবারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি ভবানীপুর সোলাইমানপুর মইদর মুন্সিবাড়ির মৃত রবিউল্লাহ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আনুমানিক ২০ জন। তাদের মধ্যে অপু মিয়া ও দুধ মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। জানা যায়, ৫৭ বছর যাবত চলছে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে কর্তাবাড়ি ও সরকার বাড়ির দুই বংশের দ্বন্দ্ব। ১৫ই এপ্রিল দুপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ভবানীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন বংশ অংশ নেন। এ সময় উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়। ওইদিন রাতে  মৌটুপির ঘটনার জেরে ভবানীপুরে সংঘর্ষ হয়। বুদুর গুষ্টি অংশ  নেন মৌটুপি গ্রামে কর্তাবাড়ি পক্ষে ও  সোলাইমানপুরের মইদর মুন্সীবাড়ি অংশ নেন সরকার বাড়ির পক্ষে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভবানীপুরের সংঘর্ষের সালিশি দরবার হয়। দরবার চলাকালীন ১১টায় ভবানীপুরের নামাপাড়া বুদুর গুষ্টি বাদশা ডাকাতের গ্রুপ ও  সোলাইমানপুর মইদর মুন্সীবাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় প্রতিপক্ষের টেঁটার আঘাতে সোলাইমানপুরের মইদর মুন্সীবাড়ির মিজান মিয়া নামের একজন আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নিহতের ভাই ফয়সাল মিয়া ও পারভেজ মিয়া বলেন, আমার ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি মৌটুপি গ্রামে। সেখানে অনেক বছর যাবত ঝগড়া মারামারি এমনকি অনেকে খুনও হয়েছে। কয়েকদিন আগে সেখানে ২ বংশের সংঘর্ষ হয়। এ ঝগড়ার জের আমাদের ভবানীপুর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার সকালে ভাবানীপুর গ্রামের  নেতৃবৃন্দের সহায়তার মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সালিশি দরবারে আমাদের গ্রামের দুইপক্ষের বাকবিতণ্ডায় একপর্যায়ে সংঘর্ষে আমার ভাইকে বুদুর গুষ্টির লোকজন  মেরে  ফেলেছে। জানা যায়, ৫৭ বছর যাবত চলছে  ভৈরবে দুই বংশের দ্বন্দ্ব। বংশ দুটি হলো উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামের কর্তাবাড়ি ও সরকার বাড়ি। সরকার বাড়ির পক্ষে  নেতৃত্ব  দেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সরকার  শেফায়াত উল্লাহ। আরেক পক্ষ কর্তা বাড়ির  নেতৃত্ব দেন সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি’র নেতা তোফাজ্জল  হোসেন। দুই বংশের দ্বন্দ্বে দু’পক্ষের খুন হয়েছে ১৪ জন। নিহতের ঘটনায় করা মামলায় উভয় পক্ষের লোকজন জামিনে বাড়ি আসলেই সংঘর্ষ বাধে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসান বলেন, ভবানীপুরের ঝগড়ায় মিজান নামের একজনকে নিহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ পর্যন্ত চারজন চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে অপু মিয়া ও দুধ মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status