বাংলারজমিন
লালমোহনে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে তীব্র গরমে ভোলার লালমোহন উপজেলায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েই ভর্তি হচ্ছেন ২৫ জনের মতো রোগী। গত ৭ দিনে প্রায় ২০০ রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ জন।
গত রোববার সকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলার চরকচ্ছপিয়া এলাকার মো. রেদওয়ান নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে ওই এলাকার মো. শাহিনের ছেলে। হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ায় দেখা দিয়েছে বেড সংকট। বাধ্য হয়ে মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন অধিকাংশ রোগী। ৩ দিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ আব্দুল মালেক। তার মেয়ে মোসা. সুরমা বেগম বলেন, ৩ দিন আগে হঠাৎ করেই বাবা কিছুক্ষণ পর পর বাথরুমে যেতে শুরু করেন। এরপর কয়েকবার বমিও করেন তিনি। পরে বাবার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখনো বাবাকে নিয়ে হাসপাতালেই রয়েছি। তাকে একের পর এক স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। দু’দিন ধরে ৫ বছরের শিশু হুজাইফাকে নিয়ে ভর্তি রয়েছেন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গাইমারা এলাকার গৃহবধূ মোসা. সালমা বেগম। তিনি জানান, হঠাৎ করেই আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর তাকে এই
হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছি। এখানে বেড না থাকায় মেঝেতে রেখেই ছোট্ট মেয়েকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত স্যালাইনও দেয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল থেকে একটি দিলে বাকিগুলো আমাদের কিনতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার মোসা. তাসলিমা বেগম বলেন, এখানে চিকিৎসক-নার্সের অনেক সংকট। তবুও যেসব নার্স এবং মিডওয়াইফরা রয়েছেন তারা সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে উপজেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক-নার্সের ব্যাপক সংকট রয়েছে। এজন্য এসব রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে বর্তমানে যেসব চিকিৎসক-নার্স রয়েছেন তারা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। তবুও কর্তব্যরত চিকিৎসক-নার্সরা রোগীদের সুস্থতার জন্য সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।