রকমারি
বেইজিং হাফ-ম্যারাথনে মানুষের পাশাপাশি দৌড়ালো রোবটরা
মানবজমিন ডিজিটাল
(২ সপ্তাহ আগে) ১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৮:২৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:১০ অপরাহ্ন

প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রদর্শনের পথে আরো একধাপ এগোলো চীন। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হাফ-ম্যারাথনে অংশ নিলো মানুষের আদলে তৈরি রোবটরা। মানুষের সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দিয়ে ম্যারাথনে দৌড়ল ২১টি রোবট। চীনের রাজধানী বেজিংয়ে ২১ কিলোমিটারের হাফ-ম্যারাথনের আয়োজন হয় শনিবার। সিংহুয়ার মতো বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাকেন্দ্র এবং প্রযুক্তি সংস্থার টিম ওই ম্যারাথনে অংশ নেয়। সেই সঙ্গে অংশগ্রহণ করে DroidBVP, Noetix Robotics-এর মতো সংস্থার মোট ২১টি রোবট। মানুষের আদলে তৈরি রোবটগুলির কোনওটির উচ্চতা ছিল ৩.৯ ফুট, কোনওটির আবার ৫.৯ ফুট। এমনকি নারীশরীরের আদলে তৈরি রোবটও দৌড়ে শামিল হয়। ম্যারাথনকে ঘিরে বেনজির দৃশ্যের সাক্ষী থাকলো গোটা পৃথিবী। এই ম্যারাথনের জন্য গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল চীনের প্রযুক্তি সংস্থাগুলো।
দৌড় চলাকালীন হে সিশু নামের এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “রোবটগুলো ভালই দৌড়চ্ছে। একেবারে স্থিতিশীল। রোবট প্রযুক্তি এবং এআই -এর দুনিয়ায় বিবর্তন দেখতে পাচ্ছি আমি।” দৌড়ের সময় রোবটগুলোকে সাহায্যের জন্য উপস্থিত ছিল তাদের প্রশিক্ষকরাও। শুধু তাই নয়, কিছু রোবটকে পায়ে জুতো পরেও দৌড়তে দেখা গেল ম্যারাথনে। কারও হাতে ছিল বক্সিং গ্লাভস। একজনের মাথায় ছিল হেডব্যান্ড, তাতে চীনা ভাষায় লেখা ছিল, ‘Bound to Win '। অর্থাৎ জিততেই হবে।
রোবটদের দৌড়ে শামিল করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়েছে। মানুষের আদলে তৈরি, দ্বিপদ এবং ০.৫ থেকে ২ মিটার পর্যন্ত উচ্চতাসম্পন্ন রোবটরাই দৌড়ে অংশ নিতে পেরেছে। চাকা বসানো রোবট, দুইয়ের বেশি পা যুক্ত রোবটরা অংশ নিতে পারবে না। শনিবারের দৌড়ে স্বয়ংক্রিয় এবং রিমোটচালিত, দুই ধরনের রোবটদেরই অংশ নিতে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি রোবট কিছু দূর দৌড়নোর পর থেকেই পড়ে যেতে শুরু করে। সঙ্গে থাকা প্রশিক্ষক ফের তুলে দাঁড় করান রোবটগুলোকে। অনেককে আবার মাঝপথে দাঁড়িয়ে ব্যাটারিও পাল্টাতে হয়।
বেজিংয়ের ওই ম্যারাথনে শনিবার জয়ী হয়েছে Tiangong Ultra নামের একটি রোবট। সেটি Beijing Innovation Center of Human Robotics-এর তৈরি। ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে দৌড় শেষ করে রোবটটি। সব মিলিয়ে শনিবারের এই ম্যারাথন প্রযুক্তি ও সভ্যতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে রইল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগেও দৌড়ে শমিল হয়েছে রোবটের দল। কিন্তু এই প্রথম সরাসরি মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দৌড়ে অংশ নিল রোবটগুলো। চীন অর্থনীতি ও প্রযুক্তি শিল্পকে চাঙ্গা করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানবিক রোবটকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বার্ধক্যজনিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবেলায় রোবটের ওপর নির্ভর করছে তারা।
সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট