শেষের পাতা
পরীক্ষায় খাতা না দেখায় মারধর, ৮ দিন পর শিক্ষার্থীর মৃত্যু
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
সিরাজগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে খাতা দেখতে না দেয়ায় ইমন হোসেন (১৬) নামের এক পরীক্ষার্থীকে মেরে মাথার খুলি ফাটিয়ে দিয়েছে সহপাঠীরা। এ ঘটনায় শুক্রবার ভোরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়। এর আগে ১৮ই এপ্রিল তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে তার সহপাঠীরা।
নিহত ইমন হোসেন শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের ইমদাদুল মোল্লার ছেলে। খুকনী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এ ঘটনার ৮ দিন পার হলেও দুই থানায় গিয়েও শনিবার পর্যন্ত মামলা করতে পারেননি নিহতের পরিবার। এতে চরম ক্ষুব্ধ পরিবার ও স্থানীয়রা। নিহতের বাবা ইমদাদুল মোল্লা বলেন, গত ১৭ই এপ্রিল এনায়েতপুর ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালে কয়েকজন সহপাঠী ইমনের খাতা দেখে পরীক্ষা দিতে চাইলে ইমন তাতে রাজি হয়নি। এর জেরে পরদিন বিকালে তাকে দৌলতপুর নতুন পাড়ায় ডেকে নিয়ে মারধর করে তারা। এতে ইমনের বাম পাশের মাথার খুলি ভেঙে যায়।
তিনি বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত বুধবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। শুক্রবার ভোরে আবারো তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা যায়। থানার সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে পুলিশ মামলা না নেয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একসঙ্গে ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য তোতা মিয়া বলেন, মারধরের ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েকবার স্বজনরা এনায়েতপুর ও বেলকুচি থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এনায়েতপুর থানা বলছে, বেলকুচিতে মামলা হবে। আর বেলকুচি থানা থেকে বলছে মামলা হবে এনায়েতপুরে।
এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত রওশন ইয়াজদানি বলেন, শিক্ষার্থী ইমন নিহতের ঘটনায় এনায়েতপুর থানায় জিডি করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর শুক্রবার রাতে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছিল। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, ইমন বেলকুচি থানার অন্তর্ভুক্ত দৌলতপুর নতুনপাড়া এলাকায় মারধরের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তার বাড়ি এনায়েতপুর থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ঘটনার পর স্বজনদের বেলকুচি থানায় মামলা করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া ইসলাম বলেন, তাদের বাড়ি এনায়েতপুর থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সেখানে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।