শেষের পাতা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
মামলা করে বিপাকে শিপু
স্টাফ রিপোর্টার
২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
রবিউস সানী শিপু। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মেধাবী শিক্ষার্থী। ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। সাভারের আশুলিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। কয়েক দফা চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন। এরপর শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন তিনি। মামলা করার একমাসের মাথায় তিনি ফের হামলার শিকার হন। নাড়ি ভুড়ি বের হয়ে যায় তার। এ যাত্রায়ও বেঁচে যান শিপু। এ ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন- ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান হিরু, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবু তাহের, আশুলিয়া থানা আওয়ামী হকার্স লীগের সদস্য জহিরুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান, আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আলীম, আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মো. শান্ত ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. রহিম।
স্বৈরাচার সরকারের পতনের জন্য মরণপণ লড়াই করে ভাগ্যক্রমে দু’বার বেঁচে যাওয়া শিপু এখন মহাবিপাকে। তার বাঁচাই যেন এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত আসামিরা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকটি জিডিও করেছেন তিনি। অভিযোগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বিভাগে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এখনো আসামিরা হুমকি দিচ্ছে তাকে। ভয় আর আতঙ্কে সময় কাটছে শিপুর পরিবারের। এখানেই শেষ নয়। গত ২২শে এপ্রিল ৯জন আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবেদনটি টেইক ব্যাক চান। এজলাসের ভিতরেই আসামি পক্ষে শুনানি করতে আসা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি এমএ কালাম খান শিপুর আইনজীবী মো. শাহীন মণ্ডলকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন। পরে তারা আত্মসমর্পণ করা আসামিদের নিয়ে যান। আবেদন টেইক ব্যাক ও আত্মসমর্পণ করা আসামিদের নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে কি না?- এ বিষয়ে জানতে কথা হয় সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ড. শাহজাহান সাজুর সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, নিম্ন্ন আদালতে আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদনের পর শুনানি শেষে বিচারক হয় আসামিদের জামিন দেবেন, না হয় কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেবেন। এক্ষেত্রে জামিন আবেদন টেইক ব্যাক নেয়ার সুযোগ নেই।
বাদীর আইনজীবী শাহীন মণ্ডলের তথ্যমতে, আসামি পক্ষে শুনানি করেছেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি এমএ কালাম খান। শুধু তাই নয় এজলাসেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিচারক জামিন না দেয়ায় আত্মসমর্পণ করা ৯ আসামিকে আইনবহির্ভূতভাবে আদালতের কাস্টডি থেকে নিয়ে যায়। আদালতে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনায় আরও শঙ্কা ও ভয়ে দিন কাটছে শিপুর পরিবারের।
এ বিষয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আশুলিয়া থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. খায়ের মানবজমিনকে বলেন, গত ২২শে এপ্রিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিপু নামের এক যুবককে মারধরের মামলায় ৭/৮ জন আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদনের পক্ষে মাইনুদ্দিন নামে একজন আইনজীবী ও একজন এপিপি শুনানি করেন। কিন্তু বিচারক জামিন দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে আবেদনটি তারা টেইক ব্যাক নেন এবং আসামিদেরকেও নিয়ে যায়। এসব অভিযোগের ব্যাপারে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এমএ কালাম খান মানবজমিনকে বলেন, এসব আসামিরা বিএনপি’র লোক। আসামিরা দীর্ঘদিন বিএনপি করতো। তারা হাসিনা সরকারের করা মামলারও আসামি। আমি সে সময় বিএনপি’র বিরুদ্ধে হওয়া হাসিনা সরকারের সময় তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলাগুলোর আইনজীবী। তাদেরকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমি তাদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়েছি। আসামিপক্ষের আইনজীবীও সে সময় উপস্থিত ছিল। তিনি আরও বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশীটে আনা অপরাধগুলো জামিনযোগ্য। টেইক ব্যাক করে পিটিশন ও আসামি ফিরিয়ে নেয়া বেআইনি কিছু নয়। এমন নজির হাইকোর্ট সহ নিম্ন আদালতে রয়েছে। তবে শিপুর আইনজীবী শাহীন মণ্ডলকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. মাইনুদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, গত ২২শে এপ্রিল আশুলিয়া থানার মামলায় ৯ আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদনের পক্ষে আমি এবং ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এমএ কালাম খান শুনানিতে অংশ নেই। আদালত আমাদের জামিন আবেদন নাকচ করলে পিটিশনটি টেইক ব্যাক করে ফিরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আত্মসমর্পণ করে আদালতে জামিন আবেদন নাকচ হলে, পিটিশন টেইক ব্যাক করার বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আদালতে সচরাচর হয়ে থাকে। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয় না।
আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এসব আসামিদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি’র নেতাকর্মী বলে পরিচয় তুলে ধরেন। অথচ তদন্তে উঠে এসেছে তাদের আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার তথ্য। ১. মো. মেহেদী হাসান হিরু (৪৭) ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২. মো. আবু তাহের, আওয়ামী লীগ নেতা। ৩. জহিরুল ইসলাম, আশুলিয়া থানা আওয়ামী হকার্স লীগের সদস্য। ৪. হাবিবুর রহমান, আশুলিয়া থানা আওয়ামী হকার্স লীগের সদস্য। ৫. আব্দুল আলীম, আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক। ৬. মো. শান্ত, আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক। ৭. মো. রহিম, আওয়ামী লীগ নেতা। এসব আসামিরা বৈষম্যবিরোধী মামলার আসামি হয়ে মামলার বাদী ও তার পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি, মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ ও অব্যাহতভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগে থানায় জিডি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
আদালত সূত্র জানায়, আসামিদের জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মো. মাইনুদ্দিন ও ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এমএ কালাম খান। তিনি আওয়ামীপন্থি এসব আসামিদেরকে বিএনপি’র কর্মী বলে উল্লেখ করে আসামিদের জামিন চান। বিচারক তার আবেদনে সাড়া না দিলে আসামিপক্ষ জামিন আবেদনটি টেইক ব্যাক চান। বাদীর আইনজীবী জানান, তিনি নথি টেইক ব্যাক নেয়ার বিরোধিতা করে আদালতকে বলেন, আইনানুযায়ী আসামি আত্মসমর্পণ করলে বিচারক হয় তাকে জামিন দেবেন, না হয় আসামিদের কারাগারে পাঠাবেন। ভুক্তভোগী শিপুর আইনজীবীর অভিযোগ, একপর্যায়ে এজলাসেই এপিপি কালাম খান তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময় হট্টগোল চলে এজলাস কক্ষে। পরে এপিপি আবেদন টেইক ব্যাক চেয়ে আত্মসমর্পণ করা আসামিদেরকে আদালতের কাস্টডি থেকে নিয়ে যান। আদালতে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় শঙ্কা আর ভয়ে দিন কাটছে শিপু ও শিপুর পরিবারের। মামলা করে শিপু ও তার পরিবার যেন এখন বিপাকে। আসামিরা প্রতিনিয়ত তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এবার এই হুমকির অভিযোগ এলো স্বয়ং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। আশুলিয়া থানাধীন মসজিদের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দেয়। তখন বেলা ১১টা। হঠাৎ পুলিশ ছাত্রদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। স্নাইপারের গুলি শিপুর পেটে বিদ্ধ হয়। অঝোরে ঝরতে থাকে রক্ত। এই অবস্থাতেও শিপু সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এবার পুলিশ তার পায়ে গুলি করে। তাৎক্ষণিক শিপু লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শিপুকে নিয়ে যাওয়া হয় আশুলিয়ার দু’টি ক্লিনিকে। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে চিকিৎসা না দিয়ে গেট আটকে দেয়। শিপুকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কয়েক দফা চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে সাভারের বাসায় ফেরেন শিপু। এ ঘটনায় গত ১১ই সেপ্টেম্বর ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় মামলা করা হয়। কিন্তু এ মামলাই এখন তার জন্য কাল হয়ে উঠেছে।
শিপুর আইনজীবী এডভোকেট মো. শাহীন মণ্ডল মানবজমিনকে বলেন, গত ২২শে এপ্রিল এই মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। চার্জশীটে আসামিরা যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং ছাত্র আন্দোলন দমন করতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল সেটা উঠে এসেছে। আগামী ২৭শে এপ্রিল মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এরই মধ্যে চার্জশীটে যে সকল আসামিদের বিরুদ্ধে ঘটনার সম্পৃক্ততা পেয়েছেন ও যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে, সে সকল আসামিরা গত ২২শে এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে কোর্টে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদনে তারা নিজেদেরকে আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি’র নেতাকর্মী দাবি করেন। ওই দলের পদ-পদবিসহ প্যাডে স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি আদালতকে দেখান। আমরা তাকে ওই কপিটি আদালতে দাখিল করতে বলি কিন্তু তিনি অদৃশ্য কারণে তা দাখিল করেন না। অথচ আসামিদের আওয়ামী সংশ্লিষ্ট মিছিলের ভিডিও, অডিও, ছবি সহ নানা প্রমাণ দাখিল করেছি। এমনকি চার্জশীটেও এই অভিযোগগুলোর কথা উঠে এসেছে।
শাহীন মণ্ডল আরও বলেন, যখন আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করা হয়, তখন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে হট্টগোল শুরু করে। এই জামিন শুনানিতে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অ্যাডিশনাল পিপি এম এ কালাম খান অংশ নেন। তিনি একপর্যায়ে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইকবাল হোসেন স্যারকে ডেকে এজলাসে আনেন। পিপি স্যার পেছনে বসে নির্দেশনা দেন আসামিপক্ষের আইনজীবীদের। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন- আরেক অ্যাডিশনাল পিপি নাজিম উদ্দিন। ভুক্তভোগীর আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আসামিপক্ষের হয়ে শুনানি করেছেন। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু আমার আবেদনে কোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে জামিন আবেদন অপরাগতা প্রকাশ করলে এসব আইনজীবীরা আদালতকে বলেন আমরা আত্মসমর্পণ করবো না। আমরা আমাদের আবেদন টেইক ব্যাক করবো। এই বলে বেআইনিভাবে কোর্ট থেকে পিটিশন ফেরত নিয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের নিয়ে বের হয়ে চলে যান। এমনকি অ্যাডিশনাল পিপি কালাম খান আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আপনি কোর্টে ভুল পিটিশন সাবমিট করেছেন। আমরা বিএনপি’র লোক। আমরা আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ২২শে এপ্রিল যেসব আসামিরা জামিন না পেয়ে আদালত থেকে চলে যান, সেসব আসামিরা বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা মামলারও এজহারনামীয় আসামি। ২০১৫ সালে রাজধানীর বাংলামোটরে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে একদল লোক হামলা চালায়। এ ঘটনায় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মী মো. ফজলুল করিম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেহেদী হাসান হিরু আশুলিয়া থানার কুখ্যাত সন্ত্রাসী। সাভার আশুলিয়া সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে অনেকগুলো মামলা রয়েছে। ২০১২ সালের ৩রা অক্টোবর আসমা নামে এক গার্মেন্টস কর্মীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে লাকড়ির দোকানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে আসামি জহিরের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া একই বছরের ১৪ই জুলাই সুমী আক্তার নামে আরেক নারীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেছে। এ ছাড়া, জহির, তাহের, হাবিবুর, আলীম ও তার ভাই সামাদের বিরুদ্ধে বলপূর্বক অপহরণ করে অন্যায়ভাবে চাঁদা দাবি ও সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালে আব্দুল হাকিম নামে এক ভুক্তভোগী মামলা করেন। মামলার সাক্ষী হওয়ায় লালু মিয়া নামে এক ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে রাতের বেলা মাইক্রোবাসযোগে পথরোধ করে কুপিয়ে জখম করে। পায়ে ও হাতে গুলি করে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে আসামি জহির, তাহের, হাবিবুর, আলীম, তার ভাই সামাদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন মামলার নথি থেকে জানা যায়, এরা সবাই ডজন খানেক মামলার আসামি। আসামি মেহেদী হাসান হিরু, লিমা আক্তার ও তার দুই দেবর জহির ও তাহের, হাবিবুর, আলীম, তার ভাই সামাদ, শান্ত, মেহেদী, মো. জিন্নাহ, মো. রহিম, নাসির, মো. মাসুদ হাসান, নাজমুল, দীপু অস্ত্রধারী সদস্য ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এরা নারী ব্যবসা সহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীর রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি সহ নানা অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে এসব আসামিদের বিরুদ্ধে। এসব সন্ত্রাসীদের কারণে ‘স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের’ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ জনগণ বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয়ে আসছে। সাভার আশুলিয়া থানায় এদের বিরুদ্ধে ১৯টিরও বেশি মামলা রয়েছে। ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট ব্যবসার আড়ালে এলাকায় মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পাঠকের মতামত
আওয়ামীলীগ ফিরে না আসতেই এমন হামলা হচ্ছে। তাহলে ভাবুন যে আওয়ামীলীগ ফিরে আসলে কি হতে পারে। এই জালিমের বিচার না করে যারা তাদের আবার রাজনীতি করার সুযোগ করে দিতে চায় তাদের ধরতে হবে সবার আগে।
অপরাধীদের কোন দলীয় পরিচয় থাকা উচিৎ নয়। এই কুলাঙ্গারদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচার করা হোক।