অনলাইন
খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবি
স্টাফ রিপোর্টার
(১২ ঘন্টা আগে) ২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৪:৫১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৩৭ অপরাহ্ন

দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের গ্রেপ্তার ও ফ্যাসিবাদের দোসর দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতের বিচারকদের অপসারণের দাবি করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে সুপ্রিম কোর্টসহ সারা দেশের আদালতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৯শে এপ্রিল সারা দেশের আদালতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। রোববার সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, খায়রুল হকের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যেন ভবিষ্যতে খায়রুল হকের মতো কোনো বিচারপতি তৈরি না হয়। তার বিচারের দাবিতে প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, এখনো দেশের উচ্চ ও অধস্তন আদালতে যেসব দলবাজ ও ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারকরা বহাল আছেন। তাদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ দেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ দেশের সাধারণ নাগরিকের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের বিজয়ের পরে আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, ফ্যাসিবাদী শাসক যেভাবে দেশ থেকে পলায়ন করেছে, সেই ফ্যাসিবাদের দোসর উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতের বিচারকগণও স্ব-স্ব পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিবেন। অথবা, ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিচারাঙ্গনকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করবেন। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করার কথা ছিল। বিচার বিভাগ তাদের ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করলে গণতন্ত্র ধ্বংস হতে পারতো না। দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। অজ্ঞাত কারণে অদ্যাবধি তাকে গ্রেপ্তার বা বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। অথচ তার বিচার বাংলাদেশের জনগণের গণদাবি। এক্ষেত্রে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগই এখন পর্যন্ত নেননি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণাকারী বিচারপতিও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অথচ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা ছিল তাদের প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার। আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনী বৈতরণী পার করানোই ছিল এসকল বিচারপতির মূল উদ্দেশ্য। পৃথিবীর সকল সভ্য দেশে কোনো নাগরিকেরই বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয় না। অথচ এই সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক বিচারপতি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যেকোনো ধরনের বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। একজন বিচারপতি কতোটা নির্লজ্জ হলে আদালতের এজলাসে নিজে একটি দলের দলীয় প্রধানের প্রতিকৃতি স্থাপন করে তা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। অতীতে সুপ্রিম কোর্টের এজলাস ভাঙচুর, প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছে এমন নির্লজ্জ দলীয় ক্যাডাররাও বিচারপতি হিসেবে বহাল রয়েছেন।
ভাবতে অবাক লাগে, এদেশের জনপ্রিয় রাষ্ট্রপ্রধান এবং স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘ডাকাত দলের প্রধান’ হিসেবে আখ্যাদানকারী বিচারপতিও বিচারকর্মে এখনো নিযুক্ত রয়েছেন। বিগত ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার তার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য নগ্নভাবে আদালতকে ব্যবহার করেছিল। উচ্চ আদালত এবং অধস্তন আদালতের বিচারকদের নির্লিপ্ততা এবং প্রত্যক্ষ সহযোগিতার কারণে র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো গুম, খুন, নির্যাতন করার উৎসাহ পায়। ফ্যাসিবাদী বিচারকগণ এই দায় এড়াতে পারেন না। সারা দেশের হাজার হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিককে মিথ্যা মামলায় আটকাদেশ প্রদান, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের আদেশ প্রদান, এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুম-খুনের সহযোগী হিসেবেও নির্লজ্জ আদেশ প্রদান করেছেন অধস্তন আদালতের কিছু উচ্চাভিলাষী বিচারক। তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এসকল দলবাজ বিচারকরা বেছে বেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় কোনোরকম সাক্ষ্য-প্রমাণ ব্যতিরেকে অথবা পাতানো সাক্ষীর সাক্ষ্য দেখিয়ে, আদালতের নির্ধারিত সময়ের পরে রাতের বেলায় মোমবাতি জ্বালিয়ে তথাকথিত বিচারের নামে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করেছেন। এধরনের কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। অথচ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এসকল দল ও দুর্নীতিবাজ বিচারককে অপসারণ ছিল অতি জরুরি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রচার সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার আহ্বায়ক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, সদস্য সচিব এডভোকেট গাজী তৌহিদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, এডভোকেট মো. মাকসুদ উল্লাহ, এডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত
বিচারপতি খাইরুল হককে এখনই গ্রেফতার করা হোক এবং উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
খায়রুল গ্রেফতার হবে না, কারণ সে বিএনপির সাথে আতাত করে চলছে। যারা তার থেকে মাল পাচ্ছেনা,তারাই তাকে গ্রেফতার করতে বলে।
বিচারপতি খাইরুল হক এর APS নাকি কোন এক উপদেষ্টার APS! Very sad.
অতি দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে এবং নির্বাচিত সরকারকে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে শাস্তির আওতায় আনতে হবে ।এই সরকারের অনেক ভালো কাজ আছে কিন্তু প্রথম থেকেই এদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের দালালরা অদরিশ্য হাতছানিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে যার ফলে সৈরাচারের দোষর বিচারপতি গুলি বহাল তবিয়তে আছে অবিলম্বে এদের গ্রেফতার করা হোক নতুবা নির্বাচন দিয়ে মান সম্মান নিয়ে চলে যান।সংস্কার এর নামে টাল বাহানা চলবে না।মানুষ আর জুলাই আন্দোলনে শহীদ এর মেয়ের আত্মহত্যা দেখতে চায় না।একটা রাস্ট্র কত ভংগুর হলে হতাশা গ্রস্ত হয়ে একটা মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে !
বিচারপতি খায়রুল হক গনতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণের অন্যতম কুশীলব। তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
আপনারা ২য় স্বাধীনতার ০৮ মাস ২২ দিন পরে কেন এই দাবি নিয়ে উদয় হলেন? কেন ০৬ আগষ্ট এই দাবি করেননি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখেনি। হাসিনা আপার ১৫ বছরের অপশাসন থেকে কিছুই শিখেননি। কেন বিচারপতি খাইরুল হককে নজরবন্দী রাখেননি? আটক করে আইনের আওতায় দেননি? এই দায়িত্ব কি আপনাদের ছিল নাকি আমজনতার ছিল? সব দোষ বর্তমান সরকারের? এতোদিন আপনারা কি করেছেন?
বড়োই বিস্ময়ের বিষয়,গনতন্ত্র হত্যাকারী ও বিতর্কিত নির্বাচনের কারিগর বিচারপতি খায়রুল হক, উচ্চ ও নিম্ন আদালতে তার দোসররা এবং তিনজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তাদের দোসর কমিশনাররা এখনো বহালতবিয়ত আছে। আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্তরা কোন অদৃশ্য কারণে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তা সত্যি বিষ্ময়কর। অবলম্বনে এদের গ্রেফতার করা হোক।
বিচারপতি খায়রুল হক কে গ্ৰেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।