বিবিধ
ভালো মোবাইল কেনার ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস
(২ দিন আগে) ৭ মে ২০২৫, বুধবার, ৪:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:০৫ অপরাহ্ন

ভালো মানের মোবাইল কেনার সময় বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত। মোবাইলের পারফরম্যান্স, ডিজাইন, বিল্ড কোয়ালিটি, ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং ডিসপ্লে কোয়ালিটি সহ আরও কিছু বিষয় যাচাই করার মাধ্যমে একটি ভালো মানের মোবাইল ফোন নির্বাচন করা যায়।
মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে, বাজেট যাচাই করা এবং উক্ত বাজেট অনুযায়ী কী কী ফিচার প্রয়োজন ইত্যাদি যাচাই করার মাধ্যমে একটি ভালো মানের মোবাইল ফোন কেনা সম্ভব। বাজেট মোবাইল ফোন, মিড রেঞ্জ বাজেট মোবাইল ফোন এবং ফ্ল্যাগশিপ ক্যাটাগরির মোবাইল ফোন বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
এসব ক্যাটাগরির ফোনের মাঝে ফিচারের পাশাপাশি দামের মাঝেও রয়েছে বিশাল পার্থক্য। তাই, যারা মোবাইল ফোন ক্রয় করার চিন্তাভাবনা করছেন, তাদের উচিত তাদের বাজেট রেঞ্জ অনুযায়ী ভালো মানের একটি ফোন খুঁজে বের করা। আর এজন্য নিম্নোক্ত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস অনুসরণ করতে হবে। চলুন, টিপসগুলো জেনে নেয়া যাক।
মোবাইল ফোন ক্রয় করার আগে কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত এ সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য শেয়ার করা হয়েছে এই পোস্টে। ভালো মানের মোবাইল কিনতে চাইলে পোস্টে উল্লিখিত টিপসগুলো অনুসরণ করুন।
বাজেট
মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে শুরুতেই আমাদের বাজেট কত টাকা তা যাচাই করতে হবে। অনেকের বাজেট লো থাকে, আবার অনেকের মিড রেঞ্জ কিংবা তার থেকে বেশি বাজেট থাকে। তাই, বাজেট যাচাই করার মাধ্যমে আমরা যাচাই করতে পারবো কী কী ফিচার পাওয়া যাবে। মোবাইল স্মার্টফোনের দাম ও সঠিক ফিচার সম্পর্কে জানা যাবে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট MobileDokan থেকে।
বাজেট কম হলে ফিচার কম পাওয়া যাবে, আবার বাজেট বেশি হলে ফিচারও বেশি পাওয়া যাবে। তবে, বাজেট যাচাই করার মাধ্যমে উক্ত বাজেটের মাঝে ভালো ফিচার দিচ্ছে এমন ব্রান্ডের ফোন কেনা সম্ভব। তাই, আপনার বাজেট কত টাকা তা যাচাই করে দেখুন।
প্রসেসর
মানুষের শরীর পরিচালনার জন্য মস্তিষ্ক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনি একটি মোবাইল ফোনের জন্য প্রসেসর গুরুত্বপূর্ণ। প্রসেসর ভালো মানের হলে মোবাইল ফোন থেকে সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স পাওয়া যায়। আবার প্রসেসর ভালো মানের না হলে যেকোনো কাজ করতে গেলেও ফোন ল্যাগ করবে, রেস্পন্ড করবেনা এবং বিভিন্ন অ্যাপলিকেশন চালানো সম্ভব হবেনা।
তাই, বাজেট যাচাই করার পর আপনার উচিত প্রসেসর এর বিষয়টি বিবেচনা করা। যারা গেমিং করবেন, তাদের ক্ষেত্রে ভালো মানের প্রসেসর প্রয়োজন। আবার, যারা ডেইলি টাস্ক এর জন্য মোবাইল কিনতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য কিছুটা কম পাওয়ারফুল প্রসেসর প্রয়োজন। মোবাইল ফোনটি কোন কাজে ব্যবহার করবেন সেটি যাচাই করার মাধ্যমে প্রসেসর কেমন দরকার তা নির্ধারণ করতে পারবেন।
র্যাম
একটি মোবাইল ফোন দ্রুত কাজ করার জন্য এবং ফোনটি থেকে সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স পাওয়ার জন্য প্রসেসরের পাশাপাশি র্যামও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে স্মার্টফোন ব্রান্ডগুলো মোবাইলের মাঝে বেশি পরিমাণে র্যাম দেয়ার চেষ্টা করছে। তাই, আপনার কত জিবি র্যাম প্রয়োজন তা যাচাই করুন।
গেমিং করার জন্য কিংবা বেশি পরিমাণে অ্যাপলিকেশন চালানোর জন্য র্যাম বেশি প্রয়োজন পড়ে। এসব ক্ষেত্রে মোবাইলটি ব্যবহার করতে চাইলে বেশি র্যাম সহ যেসব ফোন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো কিনতে হবে। কিন্তু, অন্য কাজে ব্যবহার করতে চাইলে কম র্যাম আছে এমন ফোন কিনতে পারেন। সেক্ষেত্রে দাম কিছুটা কম হবে।
স্টোরেজ
বর্তমানে মোবাইল ফোনগুলোতে মেমোরি কার্ড স্লট থাকেনা। আবার কিছু ফোনে কার্ড স্লট দেখা যায়। তবে, একটি স্মার্টফোনে ইন্টারনাল স্টোরেজ বা রম কতটুকু সেটি ফোন কেনার আগে যাচাই করে দেয়া দরকার। পাশাপাশি, আপনার কী পরিমাণ স্টোরেজ প্রয়োজন হবে সেটিও বিবেচনা করতে হবে।
বর্তমানে ফোনগুলোতে ৬৪ জিবি, ১২৮ জিবি, ২৫৬ জিবি, ৫১২ জিবি এবং ১ টেরাবাইট সহ বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের স্টোরেজ দেয়া হয়। ফোনে বেশি ডাটা রাখতে চাইলে বেশি স্টোরেজ রয়েছে এমন ফোন কিনতে হবে। তাই, ফোন কেনার আগে যাচাই করে দেখুন আপনার কতটুকু স্টোরেজ প্রয়োজন। যেসব ফোনে মেমোরি কার্ড স্লট নেই, সেগুলোর ক্ষেত্রে বেশি স্টোরেজ রয়েছে এমন ফোন কেনার চেষ্টা করুন।
ক্যামেরা
স্মার্টফোনে ক্যামেরা ইন্টিগ্রেশন করার পর থেকে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তগুলো ক্যামেরার মাধ্যমে ফ্রেমবন্দি করতে সক্ষম হচ্ছি। মোবাইল ফোন কেনার আগে ক্যামেরা কোয়ালিটি যাচাই করা উচিত। ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করার জন্য ভালো মানের ক্যামেরা প্রয়োজন হয়।
ব্রান্ডগুলো চেষ্টা করে থাকে বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা দেয়ার জন্য। তাই, আপনার বাজেট কত টাকা এবং ক্যামেরা কেমন দরকার তা যাচাই করার মাধ্যমে একটি ফোন নির্বাচন করা উচিত। ক্যামেরার মেগাপিক্সেল, লেন্স এবং সফটওয়্যার ইত্যাদি যাচাই করার মাধ্যমে একটি ভালো মোবাইল ফোন কিনতে পারবেন।
বিল্ড কোয়ালিটি
একটি ভালো মানের ফোনের বিল্ড কোয়ালিটি থাকে অসাধারণ। ফোনের সাথে গরিলা গ্লাস এবং ডিসপ্লে প্রটেকশন দেয়া থাকে। এছাড়া, ফোনে IP রেটিং ভালো থাকে। তাই, ফোন কেনার সময় ফোনটির বিল্ড কোয়ালিটি কেমন তা যাচাই করে দেখুন।
বিল্ড কোয়ালিটি যাচাই করার জন্য ইউটিউবে বিভিন্ন রিভিউ ভিডিও দেখতে পারেন। সেখানে বিল্ড কোয়ালিটি এবং ফোনের অন্যান্য স্পেসিফিকেশন নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ব্যাটারি ব্যাকআপ
ফোনের চালিকাশক্তি হচ্ছে ব্যাটারি। ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি হলে ফোনটি বেশি সময় যাবত ব্যবহার করতে পারবেন। ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালো হলে গেমিং করেও ১০-১২ ঘণ্টা ব্যাকআপ পাওয়া যায়। কিছু ফোনের ক্ষেত্রে ৭-৯ ঘণ্টা অব্দি ব্যাকআপ পাওয়া যায়।
সাধারণ কাজের ক্ষেত্রে একদিন কিংবা তার থেকেও বেশি ব্যাকআপ পাওয়া যায় একবার ফুল চার্জ করলে। তাই, আপনি যে ফোনটি কিনতে চাচ্ছেন সেটির ব্যাটারি কত mAh এর সেটি যাচাই করে দেখুন। ইউটিউবে রিভিউ দেখার মাধ্যমে ফোনটির ব্যাকআপ কত সময় পর্যন্ত পাওয়া যায় সেটিও জানতে পারবেন।
ডিসপ্লে কোয়ালিটি
কন্টেন্ট ওয়াচিং কিংবা গেম খেলার জন্য ডিসপ্লে কোয়ালিটি ম্যাটার করে। গেমিং করার জন্য হাই রিফ্রেশ রেটের ভালো মানের ডিসপ্লে প্রয়োজন হয়। আবার, কনেন্ত ওয়াচিং এর জন্য ভালো কালার দিতে সক্ষম এমন ডিসপ্লে প্রয়োজন হয়।
তাই, আপনি কোন কাজে ব্যবহার করবেন তা যাচাই করার মাধ্যমে ফোনের ডিসপ্লে কোয়ালিটি কেমন দরকার তা নির্ধারণ করতে পারবেন। ডিসপ্লে ভালো মানের হলে ফোন ব্যবহার করে মজা পাওয়া যায়।
অপারেটিং সিস্টেম
ফোন লঞ্চ করার সময় ফোনের ব্রান্ড থেকে অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করে দেয়া থাকে। ফোনটি কোন অপারেটিং সিস্টেমের এবং কত ভার্সনে রয়েছে তা লঞ্চ করার সময়েই তারা বলে দেয়। অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনলে ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড কত ভার্সন তা যাচাই করুন। আবার, আইফোন কিনলে লেটেস্ট ভার্সনের আইফোন কেনার চেষ্টা করুন।
অপারেটিং সিস্টেমের উপর নির্ভর করে আপনি ফোনটি স্মুথলি ব্যবহার করতে পারবেন কিনা। ফোনের বিভিন্ন ফিচারও নির্ভর করে অপারেটিং সিস্টেমের উপর। তাই, লেটেস্ট ভার্সনের অপারেটিং সিস্টেম সহ ফোন কেনার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি, উক্ত ফোনটি কত বছর পর্যন্ত সিস্টেম আপডেট পাবে সেটিও জেনে নিন।
ইউজার রিভিউ
ফোন কেনার আগে অবশ্যই ইউজার রিভিউ দেখা জরুরি। বর্তমানে ইউজার রিভিউ দেখার জন্য ইউটিউব রয়েছে, বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। ইউটিউবে ফোন রিভিউয়ারদের ভিডিও দেখার মাধ্যমে ফোনের স্পেসিফিকেশন এবং পারফরম্যান্স সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এছাড়া, তারা ফোনগুলো ব্যবহার করে কী কী সমস্যা খুঁজে পেয়েছে সেটিও জানতে পারবেন। ফেসবুক গ্রুপগুলোতে জয়েন করার মাধ্যমে ফোনটি ইউজারভেদে কেমন পারফরম্যান্স দিতে পারছে সেটি জানতে পারবেন। রিভিউ দেখার মাধ্যমেই ফোনটি কেনা উচিত কিনা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
শেষ কথা
ভালো মোবাইল কেনার ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস শেয়ার করেছি এই পোস্টে। মোবাইল ফোন কেনার পূর্বে কী কী বিষয় জানা জরুরি বা কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত তা জানতে পারবেন এখানে। এসব বিষয় যাচাই না করেই ফোন ক্রয় করলে বাজেটের মাঝে ভালো মানের ফোন পাবেন না। কারণ, বর্তমানে ব্রান্ডভেদে একই প্রাইস রেঞ্জে অনেক ভালো মানের মোবাইল ফোন পাওয়া যাচ্ছে। (বিজ্ঞপ্তি)