ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বিবিধ

‘রিটার্নিং টু লার্নিং’ প্রকল্প : প্রায় শতভাগ ঝরে পড়া শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ফিরেছে

(২ দিন আগে) ১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬:৫১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১:১১ অপরাহ্ন

mzamin

করোনা মহামারির কারণে ঝরে পড়া প্রায় ২৫ হাজার শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার মূলধারায় ফিরিয়ে এনেছে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির 'রিটার্নিং টু লার্নিং' (আরটিএল) প্রকল্পটি। প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৫টি এক-কক্ষবিশিষ্ট বিদ্যালয়ে 'এক্সিলারেটেড কোর্সের' মাধ্যমে করোনা মহামারির সময় শিশুদের শিখন ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে। এই কোর্স সম্পন্নকারী প্রায় শতভাগ ঝরে পড়া শিক্ষার্থী সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে। 

কুড়িগ্রাম, রংপুর এবং লালমনিরহাট জেলায় প্রান্তিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় পুনরায় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে হেম্পেল ফাউন্ডেশন-এর সহযোগিতায় এই প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়। প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষ্যে গত সোমবার, ১২ই মে ২০২৫ তারিখে ব্র্যাক সেন্টারে একটি শেয়ারিং সেশন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে প্রকল্পের মূল তথ্য, অভিজ্ঞতা এবং সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মিরাজুল ইসলাম উকিল। ব্র‍্যাকের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক জিয়াউদ্দিন আহাম্মদ; প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিয়াউল হক শিকদার এবং ব্র্যাক ইউরোপের ফাউন্ডেশনস কর্মকর্তা রোজি উইলিয়ামস।

প্রকল্পটির সমাপনী গবেষণায় দেখা গেছে, 'এক্সিলারেটেড কোর্স' সম্পন্নকারী ৯৯ দশমিক ১ শতাংশ ঝরে পড়া শিক্ষার্থী আবারও স্কুল ও মাদ্রাসার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ফিরে এসেছে। কুড়িগ্রামে প্রাথমিক স্তরে যেখানে ২০২০ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২৩ সালে সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৬ শতাংশে; যা জাতীয় গড় ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশের কাছাকাছি। প্রকল্পের মূল্যায়নে আরও দেখা গেছে, 'এক্সিলারেটেড কোর্স' শেষে শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের ফলাফলে অনেক উন্নতি ঘটেছে। ইংরেজিতে ৩৩ এর নিচে নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীর হার ৩৭ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। 

প্রধান অতিথি মাসুদ আকতার খান তার বক্তব্যে বলেন, এতদিন আমরা মূলত মেয়ে শিশুদের শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়েছি। এখন সময় এসেছে ছেলে শিশুদের শিক্ষার দিকেও সমানভাবে নজর দেওয়ার। তবে সামনে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা।

বিশেষ অতিথি মিরাজুল ইসলাম উকিল তার বক্তব্যে বলেন, সরকার এখন তিনটি নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে। সেগুলো হচ্ছে, সবার জন্য স্কুল ফিডিং চালু করা, প্রাথমিক স্তরে আবারও বৃত্তি চালু করা, এবং দুই শিফটের সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে রূপান্তর করা। এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা হলে স্কুল থেকে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার অনেকাংশে কমে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা বলেন, উল্লেখিত এলাকাগুলোতে শিক্ষার এই অগ্রগতি টিকিয়ে রাখতে হলে কেবল প্রকল্পনির্ভর উদ্যোগ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার, অভিভাবক, শিক্ষক এবং কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সবার সমন্বিত ও যৌথ প্রচেষ্টায় একটি সময়োপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। (বিজ্ঞপ্তি)

বিবিধ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিবিধ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status