শেষের পাতা
স্ত্রী-কন্যাসহ নানকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
স্টাফ রিপোর্টার
১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং তার স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান বানু নার্গিস ও মেয়ে এস আমরিন রাঁখিসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুদকের পৃথক ৪টি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে অনুসন্ধানী কর্মকর্তারা নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন- স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, তার ছেলে ও ব্যাংকটির পরিচালক কাজী খুররম আহমদ, মশিউর সিকিউরিটিজ সিটি সেন্টারের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, পরিচালক মোগল জান রহমান ও জিয়াউল হাসান চিশতী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩০ নং ওয়ার্ডের কমিশনার আবুল কাসেম কাসু, তার স্ত্রী আসমা কাসেম ও মেয়ে উম্মে কুলসুম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সৈয়দা আরজুমান বানু ও এস আমরীন রাঁখি রাতুল টেলিকম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ২৫৯ কোটি ৬২ লাখ ৫ হাজার ১৫৮ টাকার সমমূল্যের ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮১ মার্কিন ডলার পাচার করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক, এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার প্রভাব খাটিয়ে মুদ্রা পাচারে তার স্ত্রী ও মেয়েকে সহযোগিতা করে দণ্ডবিধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ পূর্বক জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানে বর্তমানে ৩ সদস্যবিশিষ্ট টিম গঠন হয়েছে। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। এর আগে টেলিকম কোম্পানির মাধ্যমে ২৬০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে নানকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় নানকের স্ত্রী ও মেয়েকেও আসামি করা হয়।
এদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যানের আবেদনে বলা হয়েছে, কাজী আকরাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে নিকট আত্মীয়দের চাকরি দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঋণ প্রদানসহ অন্যান্য উপায়ে উক্ত ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। সেজন্য, অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া একান্ত প্রয়োজন।
পাঠকের মতামত
নানক কি এখনো দেশে আছেন? নিশ্চয়ই 'ও দেশের বাহিরে চলে গেছে' নিশ্চিত হওয়ার পরই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে