শেষের পাতা
চোখ বেঁধে বিমানে আনা হয় আগরতলা, পাঠানো হয় বাংলাদেশে
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে
২৪ মে ২০২৫, শনিবার
কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে জোর করে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তাদের পাঠানো হয়। বিজিবি’র কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা হলেন, কুড়িগ্রাম ভোগডাঙ্গার ক্লিনিকপাড়ার মৃত আলী হোসেনের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম (৩৭), তার স্ত্রী মোসা. মরিয়ম বেগম (৩৭) ও তাদের সন্তান মোসা. জবা (৯)। একই জেলার নাগেশ্বরী থানার নাগেশ্বরী গ্রামের মো. মাহাবুর রহমান, তার স্ত্রী হালিমা খাতুন (২৫), তার মেয়ে মারুফা (৬) ও ছেলে আলিফ। নাগেশ্বরী থানার নওদাপাড়া এলাকার মো. শাহ্জালাল (৩৫), তার স্ত্রী মাহমুদা (৩০) ও তাদের চার সন্তান মামুন (১৪), মুনসুর (৮), মোমিনুল (৩) ও শাহনাজ (৬)। জানা গেছে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার গোলাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে পাঠানো হয়েছে। তারা তিনটি পরিবারের সদস্য। তাদের ভারতের হরিয়ানা থেকে ধরে এনে আগরতলা সীমান্ত দিয়ে পাঠিয়েছে বিএসএফ।
আটক এক পুরুষ জানান, জাহিদুলের পরিবার ৬ বছর, মাহাবুবের পরিবার ১১ বছর ও শাহ্জালালের পরিবার ১২ বছর আগে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। পরে তারা দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের শনিপথ নাম এলাকায় বসবাস শুরু করে। গত ১০ দিন আগে ভারতের সিআরপিএফ সদস্যরা তাদের হরিয়ানার শনিপথ নামক এলাকা থেকে আটক করে। পরে ১০ দিন একটি ক্যাম্পে চোখ বেঁধে আটকে রাখে। চোখ বাঁধা অবস্থায় গতকাল বিমানযোগে আগরতলায় নিয়ে আসে। ২২শে মে রাত সাড়ে ১২টায় গোলাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ ক্যাম্প কর্তৃক ২০৮০/১ঝ সীমানা পিলারের কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। সীমান্তের বাংলাদেশ প্রান্তে ২০৮০ সীমানা পিলারের ৭০০ গজের মধ্যে বিজিবি সদস্যরা এই ১৩ জনকে আটক করে।
লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন তাদের বিএসএফ বাংলাদেশে পাঠায়। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার কার্যক্রম চলমান আছে। আটককৃতরা সকলেই বাংলাদেশি নাগরিক। তারা বিজিবি’র হেফাজতে রয়েছে এবং যাচাই-বাছাই শেষে তাদের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলেও বিজিবি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ্-জোহরা বলেন, বিজিবি আমাদের কাছে আটককৃতদের নিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাদের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে তাদের উপজেলায় যোগাযোগ করছি।