শেষের পাতা
কুড়িয়ে পাওয়া বোমায় প্রাণ গেল বোনের, হাত উড়ে গেল ভাইয়ের
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে
২০ মে ২০২৫, মঙ্গলবার
যশোর শহরের শংকরপুর এলাকায় বাড়ির পাশে কলাবাগানে খেলতে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া বোমা বল বানিয়ে খেলার সময় বিস্ফোরণে শিশু খাদিজাতুল কুবরা (৫) মারা গেছে। আহত হয়েছে তার ভাই সজীব আহম্মেদ। সোমবার সকালে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। তাদের বাবা যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন পেশায় অটোরিকশাচালক। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে খাদিজা মারা যায়। সজীবের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সময় তাদের ছোট বোন আয়েশা সুলতানা (৩) মা সুমি খাতুনের কোলে ছিল। খবর পেয়ে দৌড়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয় আয়েশা। খাদিজাতুলের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। শিশু দুটির বাবা শাহদাত হোসেন বলেন, ‘কুড়িয়ে পাওয়া এক বোমার বিস্ফোরণে মেয়েকে হারালাম। ছেলেটির একটি হাত উড়ে গেছে। পেটের নাড়ি বেরিয়ে গেছে। তাকে বাঁচাতে পারব কি না, জানি না। বাবা হয়ে এই কষ্ট আমি কেমনে সহ্য করব!’ পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালের দিকে যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদের পাশের একটি বস্তিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দুই ভাই-বোন গুরুতর জখম হয়। চিকিৎসার জন্য দুজনকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খাদিজার অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকেরা তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে গোপালগঞ্জে পৌঁছালে শিশুটি মারা যায়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম বলেন, বিস্ফোরিত বোমার আঘাতে খাদিজার পেটের নাড়িভুঁড়ি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং সজীবের একটি হাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেটি কেটে ফেলতে হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে শিশু সজীব বাড়ির পাশের মাঠে খেলছিল। বাড়ি ফেরার পথে সে টেপমোড়ানো একটি কৌটা কুড়িয়ে পায়। সেটি তুলে বাসায় নিয়ে বোন খাদিজার সঙ্গে বল হিসেবে খেলছিল সজীব। এ সময় এটি বিস্ফোরিত হয়।
এদিকে বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, বোমার বিস্ফোরণে দুই শিশু গুরুতর আহত হয়। পরে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। বোমাটি কোথা থেকে এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।